পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে রোববার সকাল ১০টায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও ডেকেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে এদিনও তিনি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হবেন কিনা- এটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ গত ৪ মে স্বপরিবারে দেশ ত্যাগ করেছেন। এর আগে তাকে গত ৬ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। বিদেশে অবস্থান করায় তিনি ওইদিন দুদকে হাজিন হননি। পরে তিনি সময় চেয়ে আবেদন করলে তাকে ১৬ দিনের সময় দিয়ে রোববার ডাকা হয়েছে।
এদিকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হতে তিনি বিদেশ থেকে দেশে পৌঁছেছেন কিনা- তা শনিবার নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে জানার জন্য বেনজীরের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুককের মোবাইলে কল করা হলে তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে শাহ মঞ্জুরুল হকের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আর ইমতিয়াজ ফারুকের নম্বরে কল করা গেলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অপরদিকে বেনজীরের স্ত্রী জিসান মির্জা, দুই মেয়ে– ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামী সোমবার ডাকা হয়েছে। তারাও বেনজীরের সঙ্গে গত ৪ মে দেশ ত্যাগ করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নিতে তারা দেশে এসেছেন কিনা– এটিও নিশ্চিৎ হওয়া যায়নি। বেনজীরের পরিবারের এই তিন সদস্যকে এর আগে গত ৯ জুন জিজ্ঞাসাদাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। বিদেশে থাকায় তারাও নির্ধারিত তারিখে হাজির হতে পারেননি। পরে তারা সময় চেয়ে আবেদন জানালে তাদেরকে ১৪ দিন সময় দিয়ে সোমবার ডাকা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুদক বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে গত ২২ এপ্রিল। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকের তলবী নোটিশ পাঠায় হয় গত ২৮ মে। এর আগে গত ৪ মে তিনি সপরিবারে দেশ ত্যাগ করেন।
বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে তাদের বিরুদ্ধে সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বিস্তারিত তদন্ত করেছে। এরপরই গণমাধ্যমে তাদের অস্বাভাবিক সম্পদের খবর প্রকাশ পায়।
গত ২৩ ও ২৬ মে আদালতের আদেশে বেনজীর, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদ, ব্যাংক হিসাব, শেয়ারসহ অন্যান্য সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করা হয়। তাদের নামে থাকা ৮৩টি দলিলে ৬২১ বিঘা জমি, গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট জব্দ, ৩৮টি ব্যাংক হিসাব ও তাদের মালিকানার কোম্পানি ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের ওই আদেশ দিয়েছেন। ওই দুইদিনে বেনজীর ও তার পরিবারের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৩৩ কোটি টাকার বেশি সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করা হয়।