লাইফ স্টাইল ডেস্কঃ
শরীরচর্চার ক্ষেত্রে বেশি বেশি মানেই ভালো নয়। অনেক ব্যায়াম করেও দেখা যায়, দেহ থেকে চর্বি ঝরছে না। পেশিও সুগঠিত হচ্ছে না। দেখার মতো বাইসেপ বা সিক্স-প্যাক দেহ গড়তে বেশি ব্যায়াম করতে হবে তাও ঠিক নয়। মানসিক বিষয়টি দেহ গঠনের ক্ষেত্রে অতি জরুরি বিষয়। বেশি ব্যায়ামের ফলে অবসাদ ভর করলে লক্ষ্য অর্জিত হবে না। আরো নানা কারণে ব্যায়ামের পেছনে প্রচুর সময় ও ঘাম ঝরালেও উপকার মেলে না। এখানে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এমনই কিছু কারণ। এসব কাজ ভুল বলেই বিবেচিত হয়।
১. নানা ধরনের ব্যায়াম : পেশি গঠনে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ব্যায়ামের সমাহার ঘটিয়ে দেন। ব্যায়ামের যত উপকরণ আছে তার সবই ব্যবহার করতে অস্থির হয়ে থাকেন। বাস্তবতা হলো, দেহের একই স্থানের উপকার মেলে এমন একাধিক ব্যায়াম না করে একটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা। এতে উন্নতির গতি ত্বারাণ্বিত হবে। একই পদ্ধতি কয়েকটি সেটে ভাগ করে নিয়ে প্রতিটা সেট সঠিকভাবে সম্পন্ন করাই হবে মূল লক্ষ্য।
২. খুব দ্রুত করা : প্রতিদিন জিমনেশিয়ামে গিয়ে খুব দ্রুত প্রচুর ব্যায়াম করে বেরিয়ে আসাতে কোনো লাভ নেই। এতে বরং পারফরমেন্স কমে আসে। যে পরিমাণ ঘাম ঝরাবেন ততটুকু বিশ্রাম দিতে হবে দেহকে। নয়তো পেশির ক্ষত সারবে না। যারা সচেমাত্র শরীরচর্চা শুরু করেছেন তাদের জন্য বিষয়টি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সপ্তাহে তিন দিন ব্যায়ামাগারে যাওয়া উচিত। পেশিকে সুস্থতা দিতে নিয়মিত বিশ্রাম দিতে হবে। এর জন্যে হাঁটা, ইয়োগা চর্চা ইত্যাদি উপকারী হতে পারে।
৩. অতিরিক্ত কার্ডিও : স্থূলতা সমস্যা খুব বেশি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই দৌড়ানো বা হৃদযন্ত্রের সুস্থতার জন্য নানা ব্যায়ামের বিকল্প নেই। তাই বলে কেবলমাত্র দৌড়ানো বা দম বৃদ্ধির জন্য কার্ডিওতে সেঁটে থাকাতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আসলে হৃদ সুস্থতার জন্য যে ব্যায়াম করবেন তার সঙ্গে আপনার দৈহিক বৈশিষ্ট্য খাপ খায় কিনা তাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ট্রেড মিলে বহু সময় থাকলে সে অনুযায়ী উপকার মেলে না। আর থাকলেও মাঝখানে যথেষ্ট বিরতি দেওয়া প্রয়োজন। এ বিরতিতে দেহে পেশি বৃদ্ধির হরমোন ক্ষরিত হয়।
৪. সামর্থ্যের বাইরে যাওয়া : বড় কিছু করতে হবে, নয়তো বাড়িতে চলে যাওয়াই ভালো- শরীরচর্চা কেন্দ্রে যাওয়ার আগে এমন মানসিকতা বহু মানুষকে ঘরমুখী করে তোলে। মারাত্মক ব্যায়ামে যে অপরিসীম উপকার মেলে তা নয়। লক্ষ্য অর্জনে দরকার একটা সুষ্ঠু পরিকল্পনা যা প্রশিক্ষক আপনাকে দিতে পারেন। আর যে ব্যায়ামই করেন না কেন, তা যে সামর্থ্য ফুরিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। অভ্যস্ত হয়ে গেলে সপ্তাহে ৫ দিন শরীরচর্চা কেন্দ্রে যান। নির্দিষ্ট সময় সুষ্ঠুভাবে ব্যায়াম করুন। সুষ্ঠুভাবে বিশ্রাম দিন দেহকে।
৫. সময় নষ্ট করা : সময়ের অভাবে মানুষ ব্যায়াম থেকে সরে আসে। তার মানে সময় যে মেলে না তা নয়। একটু চিন্তা করে দেখুন, প্রয়োজন মিটিয়েও কতটা সময় আপনি এদিক-ওদিক সময়ের অপচয় করছেন। স্মার্টফোন বা ল্যাপটপে কত ঘণ্টা সময় ব্যয় করছেন। এসব কাজ থেকে সময় বাঁচিয়ে দিব্যি নিয়মিত ব্যায়াম করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন মানুষ মাত্র ৪৫ মিনিটে প্রয়োজনীয় ব্যায়ামের কাজটি সারতে পারেন। গা গরমসহ বিশ্রামের কাজটিও এ সময়ের মধ্যেই সম্ভব। কাজেই সময়ের অপচয় করবেন না। অন্তত যখন ব্যায়াম করতে চান। অভ্যস্ত হয়ে গেলে নিয়মিত কাজের অংশ হয়ে উঠবে। মনে হবে না যে সময় মিলছে না।
যেকোনো ব্যায়ামের ক্ষেত্রে তাকে কয়েকটি সেটে ভাগ করে নিন। প্রতি সেটের মাঝখানে ৬০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিন। যারা শক্তি ও পেশি বৃদ্ধি করতে চান, তাদের ওজন নেওয়ার ব্যায়ামে প্রতি সেটের মাঝে ২ মিনিট করে বিশ্রাম দিতে হবে দেহকে
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম /৩১ – ০৭-২০১৬ ইং/মো:হাছিব