লাইফ স্টাইল ডেস্কঃ
ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া মানেই আয়ু প্রায় শেষ, এই ধারণা শেষ হতে চলল বলে। আজকাল শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ার পরও অনেকে বছরের পর বছর বাঁচছেন সঠিক ও উন্নত চিকিৎসার সুবাদে।
নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৭০র দশকের শুরুতে ব্রিটেনে ক্যান্সার ধরা পড়ার পরও যারা অন্তত দশ বছর বাঁচতেন – সেই সংখ্যাটা এখন দ্বিগুণ হয়ে গেছে। অর্থাৎ ক্যান্সারে আক্রান্ত অনেক বেশি রোগী এখন বছরদশেক বা তারও বেশি বাঁচছেন।
ম্যাকমিলান ক্যান্সার সাপোর্টের রোসি ডাউনস এর কারণটা ব্যাখ্যা করে বলছিলেন, ‘প্রথমত, এখন ক্যান্সারের যে সব চিকিৎসা হচ্ছে তা অনেক উন্নত ও আধুনিক। যেমন, প্রস্টেট ক্যান্সারের আগে চিকিৎসা হত ওপেন সার্জারির মাধ্যমে – আর এখন সেটা কিহোল সার্জারির মাধ্যমেই করা সম্ভব, যা দেহের জন্য অনেক কম যন্ত্রণাদায়ক ও বেশি সহনীয়’।
‘রেডিও থেরাপিও ইদানীং অনেক বেশি টার্গেটেড হয়েছে, ফলে সত্তর বা আশির দশকের তুলনায় মানুষকে এখন অনেক কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সহ্য করতে হয়’।
‘তা ছাড়া ক্যান্সার গোড়ার দিকে নির্ণয় করার ক্ষেত্রেও অনেক অগ্রগতি হয়েছে – ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে, জীবনযাত্রার ধরন শরীরে কী প্রভাব ফেলে মানুষ সেটা জানে – তাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমেছে’।
ফলে বোঝাই যাচ্ছে, ক্যান্সার মানেই যে সঙ্গে সঙ্গে শেষের দিন ঘনিয়ে আসা নয়, তার পেছনে একাধিক ফ্যাক্টর রয়েছে। ক্যান্সারের রোগী আর তার প্রিয়জনদের কাছে সেটাও তো কম সান্ত্বনা নয়!
‘আর্মাগেডন’ গ্রহাণুতে নাসার অভিযান
হলিউডের বিখ্যাত ছবি আর্মাগেডনে যেমনটা আছে – তেমন বাস্তবেও বেনিউ নামে একটি গ্রহাণু বা অ্যাস্টরয়েড আগামী শতাব্দীতে পৃথিবীকে আঘাত হানলেও হানতে পারে – আর নাসা এখন সেই অ্যাস্টরয়েড থেকেই শিলাখন্ড সংগ্রহ করার উদ্দেশে একটি প্রোব শুরু করতে যাচ্ছে।
এই অ্যাস্টরয়েডটি প্রতি ছবছর অন্তর পৃথিবীর কক্ষপথ অতিক্রম করে, ফলে পৃথিবী থেকেই এটি দেখা যায়।
২১৩৫ সালে এটি পৃথিবীর ও চাঁদের মধ্যে দিয়ে পেরোবে, আর তখন তার কক্ষপথে এমন কিছু পরিবর্তন হতে পারে যাতে ওই শতাব্দীর শেষের দিকে সেটি পৃথিবীর দিকে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অ্যারিজোনা ইউনিভার্সিটির প্ল্যানেটারি সায়েন্সের অধ্যাপক দান্তে লরেটা – যিনি নাসা-র এই প্রকল্পে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত – তিনি বলছেন সেরকম ক্ষেত্রে বেনিউ নামে অ্যাস্টরয়েডটি পৃথিবীতে বিরাট ধ্বংস ও মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।
এমন একটি অ্যাস্টরয়েডে অভিযান চালানোর উদ্দেশ্যটা কী, তা নিয়ে কথা বলেছিলাম নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানী অমিতাভ ঘোষের সঙ্গে। অনুষ্ঠানে শুনবেন তাঁর সাক্ষাৎকার।
বেনিউ অ্যাস্টরয়েডের উদ্দেশে ওসিরিস-রেক্স নামে প্রোবটি লঞ্চ করা হবে সামনের মাসে, আর সেটি বেনিউ-তে পৌঁছবে ২০১৮ সালে। প্রোব মিশনটি সেখানে থাকবে প্রায় বছরখানেক – চালাবে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
সোলার ইমপালস টু-র সফল বিশ্ব পরিক্রমা
অনেকেই হয়তো জানেন, শুধুমাত্র সৌরশক্তি ব্যবহার করে চালিত পরীক্ষামূলক বিশেষ বিমান সোলার ইমপালস টু তাদের বিশ্ব পরিক্রমা সদ্য শেষ করেছে।
গত মাসের ২৬ তারিখে আবুধাবিতে স্থানীয় সময় চারটে বাজার একটু পরেই অবতরণ করে সোলার ইমপালস টু – ওই আমিরাত থেকেই বিশ্ব পরিক্রমায় রওনা হওয়ার ঠিক ১৬ মাস পর।
অবতরণের পর এই প্রকল্পের অন্যতম কর্ণধার ও বিমানটির পাইলট বার্ট্রান্ড পিকার্ড বলেন, এই অভিযান আসলে দূষণমুক্ত জ্বালানির জয়।
তাঁর কথায়, ‘এভিয়েশন বা বিমান-চলাচলের ইতিহাসে এটা যত বড় অর্জন, তার চেয়েও বড় অর্জন হল জ্বালানির ইতিহাসে। আমরা চল্লিশ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছি একফোঁটা জ্বালানি ছাড়া’।
‘এখন একে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমাদের সবার। আমাদের হাতে যথেষ্ট প্রযুক্তি আছে, নানা রকম সমাধান আছে – মানুষ অন্যভাবে ভাবতে রাজি নয় বলে আমাদের পৃথিবীকে ক্রমাগত দূষিত করে চলব সেটা কিছুতেই মানা যায় না’।
সোলার ইমপালস টু-র মতো বিমান এখনও বাণিজ্যিক যাত্রার জন্য তৈরি নয় – কারণ শুধুমাত্র বৈমানিকের বসার ব্যবস্থাওলা এই এক আসনের বিমানটি এখনও যাত্রীদের বহন করার মাপে তৈরি করা যায়নি।
কিন্তু বার্ট্রান্ড পিকার্ডের মতো মানুষরা হাল ছাড়তে রাজি নন, কারণ তাদের বিশ্বাস এই অভিযান প্রমাণ করে দিয়েছে ক্লিন বা দূষণমুক্ত শক্তিই এই গ্রহের ভবিষ্যৎ।
ভাল থাকতে হলে কেমন আর কতটা যৌনতা চাই?
একটা দেশে নাগরিকদের সুস্থ ও আনন্দময় জীবনের জন্য ঠিক কতটা যৌনতা দরকার? এই জটিল প্রশ্নটার উত্তর খুঁজতেই তিন বছর ধরে দেশের লোকদের যৌন জীবন নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সুইডেন।
সুইডেনে নানা পত্রপত্রিকায় অনেক দিন ধরেই লেখা হচ্ছে, সুইডদের জীবনে প্রয়োজনের তুলনায় যৌনতা অনেক কম আর তাই তারা পরিতৃপ্তও নন।
সুইডেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল উইকস্টর্মও এখন বলছেন, যৌনতা নিয়ে এই ব্যাপক সমীক্ষাটা এই জন্যই করা দরকার যাতে সরকার তাদের নীতি-নির্ধারণে সেই পরিসংখ্যানটা কাজে লাগাতে পারে।
তিনি জানাচ্ছেন, ‘যৌনতার প্রতি সুইডেনের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গীটা কি, যৌনতার ক্ষেত্রে তাদের কীরকম অভ্যাস – এগুলো জানাটা খুব আগ্রহোদ্দীপক ব্যাপার হবে। এই জন্যই হবে যে রাজনীতি ও প্রশাসনের বহু ক্ষেত্রে, জনস্বাস্থ্যনীতিতে তা প্রভাব ফেলে’।
‘এই বিষয়ে যদি আমার কাছে বা সরকারের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে তথ্য না-থাকে, তাহলে আইনের সংস্কার বা সঠিক নীতি প্রণয়নের কাজটা হবে কী করে?’
তৃপ্তি ও আনন্দে থাকতে হলে তার পেছনে যে যৌনতার একটা ভূমিকা আছে এটা অবশ্য বিজ্ঞানীরাও বহুদিন ধরে বলছেন।
কিন্তু সেই যৌনতাটা কীরকম বা কত পরিমাণ হওয়া উচিত তা নিয়ে একটা বড় দেশ জুড়ে কখনও এমন সমীক্ষা চালানো হয়নি – সুইডেনের এই অভিনব প্রকল্প সেই বৈজ্ঞানিক গবেষণার অভাব দূর করবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম / ২ – ০৮-২০১৬ ইং/মো:হাছিব