muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

কোটা আন্দোলনের সহিংসতায় একদিনে আরও শতাধিক মৃত্যু

কোটা আন্দোলনের সহিংসতায় একদিনে আরও শতাধিক মৃত্যু

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় আরও শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতে নিহত হন এসব মানুষ। গতকাল দুপুরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি ছুড়তে শুরু করেন। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হন।

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, গুলিতে মারা যাওয়া ৩০ জনকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ওই হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আগের দিনের সংঘর্ষেও সারাদেশে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, চানখাঁরপুল, বাড্ডা ও বংশাল এলাকা থেকে ৪০ জনের মরদেহ এসেছে।

ঢামেক কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার দুপুর ১২টা থেকে ৮টা পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৩৯৭ জনকে উদ্ধার করে ঢামেকের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৪০ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আহতদের মধ্যে অন্তত ২৩ জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া নিহত চল্লিশজনের তালিকা নিশ্চিত করেছেন। বাচ্চু মিয়া জানান, সোমবার সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, বংশাল, কাজলা, ধনিয়াসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৩৯৭ জনসহ আহত হলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এরমধ্যে ৭১ জনকে ভর্তি দেয়া হয়েছে। এবং জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ৪০ জনকে মৃত ঘোষণা করেছেন। আহত অবস্থায় এবং গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এখনও অনেককে আনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নিহতরা হলেন– ১. রাসেল (২৫), কাজলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি পেশায় বাসের হেলপার ছিলেন। ২.অজ্ঞাত যুবক (২৭), কাজলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ৩.ইমরান (২৫) যাত্রাবাড়ী কাজলা এলাকার অনাবিল হাসপাতালের সামনে গুলিবৃদ্ধ হয়ে নিহত হন। পেশায় তিনি ওয়ার্কসপ কর্মী। ৪.আব্দুর রহমান (২২)কাজলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। সরকারি তুলারাম কলেজের শিক্ষার্থী। ৫.মানিক মিয়া (৩০) ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি যমুনা ব্যাংকের চাকরিজীবী। ৬.রাকিব হোসেন (২৪) ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র। ৭.আজমত আলী (৩৫)। যাত্রাবাড়ী মাছের আড়তের সামনে থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ৮. আবু ইসহাক (৫২) যাত্রাবাড়ী থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। তিনি সৌদি প্রবাসী ছিলেন বলে জানা গেছে। ৯. সাইফুল ইসলাম ওমর (২৩) যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। তিনি মাদ্রাসা ছাত্র। ১০. শাকিল (২১) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। শিক্ষার্থী ১১. অজ্ঞাত যুবক (২৮) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ১২. শাহীন (২৪) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ১৩. ইয়াসিন (২৪) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ১৪. সোহেল (২২) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ১৫. অজ্ঞাত যুবক (২৪) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ১৬. অজ্ঞাত ব্যক্তি (৪০) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ১৭. আব্দুল নুর (৩৫) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। পেশায় তিনি সাংবাদিক। ১৮. অজ্ঞাত যুবক (২৫) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ১৯. অজ্ঞাত যুবক (৩০) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ২০. অজ্ঞাত যুবক (২২) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ২১. ইসমাইল রাব্বি (২২) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। পলিটেকনিক্যাল এর শিক্ষার্থী। ২২. রনি(১৭) বংশের এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। শিক্ষার্থী ২৩. অজ্ঞাত যুবক (২০) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ২৪. অজ্ঞাত ব্যক্তি (৪০) যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ২৫. হামিদুর রহমান (২২) বংশাল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। শিক্ষার্থী। ২৬. অজ্ঞাত (২০) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ২৭. অজ্ঞাত (৩৫) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ২৮. অজ্ঞাত (২২) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ২৯. অজ্ঞাত (২৮) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ৩০. অজ্ঞাত (৩২) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ৩১. অজ্ঞাত (৩০) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ৩২. অজ্ঞাত (২০) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ৩৩ অজ্ঞাত (২৬) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ৩৪. শাওন (১৫) ধোলাই পারে নিহত। ৩৫. আবু রায়হান (২১) ধোলাই পারে নিহত। ৩৬. অজ্ঞাত (৩০) ধোলাইপাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ৩৭. অজ্ঞাত (২৫) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ৩৮. আব্দুল হান্নান (৫০) ধোলাইপাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ৩৯. অজ্ঞাত (২৪) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত। ৪০. মনোয়ার (৫৫) যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।

যাত্রাবাড়ীর ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, জোহরের নামাজ শেষে অনেক বিক্ষোভকারী যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ছিলেন। এ সময় হঠাৎ পুলিশ গুলি ছুড়তে শুরু করে। এতে সেখানেই ১০ থেকে ১৫ জনের মতো নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন বহু মানুষ। পরে বিকেলে বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় হামলা চালান।

সাভারে সংঘর্ষে নিহত ১৮:

ঢাকার সাভারে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটিতে পাঁচজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। এর মধ্যে তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

নিহতরা হলেন রমজান, মোজাহিদ, নাফিসা, তৌহিদুর রহমান, রাসেল, রফিক, নিসান ও শব্দ। তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। এছাড়া সাভারে সংঘর্ষের ঘটনায় শ্রাবণ গাজী (২১) নামের একজন নিহত হন।

আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুলিবদ্ধ হয়ে ছয়জন মারা গেছেন।

যশোরে ১৩ জন নিহত:

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। এতে ১৩ জন পুড়ে মারা যান।

কুষ্টিয়ায় গুলিতে নিহত ৬:

কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানা ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হামলাকে কেন্দ্র করে পুলিশ গুলি চালালে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- শহরের থানাপাড়া এলাকার এলাকার ইউসুফ আলী ও লোকমানের ছেলে আবদুল্লাহ, সদর উপজেলার হরিপুর এলাকার নওশের আলীর ছেলে বাবু ও কফিলুদ্দিনের ছেলে আশরাফ। বাকিদের নামপরিচয় জানা যায়নি।

হবিগঞ্জে গুলিতে ছয়জন নিহত:

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে দুপুরে পুলিশের গুলিতে ছয়জন মারা গেছেন। এরপর বানিয়াচং থানা ঘেরাও করে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ জনতা।

নিহতরা হলেন- বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা মহল্লার সানু মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া, মাঝের মহল্লার আবদুর নূরের ছেলে আশরাফুল ইসলাম, পাড়াগাঁও মহল্লার শমশের মিয়ার ছেলে মোজাক্কির মিয়া, কামালহানি মহল্লার নয়ন মিয়া, যাতুকর্নপাড়া মহল্লার আবদুর রউফের ছেলে তোফাজ্জল ও পূর্বঘর গ্রামের দলাই মিয়ার ছেলে সাদিকুর।

শ্রীপুরে নিহত ৫:

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিজিবির সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। নিহতরা হলেন- মো. কাওছার, মো. শরীফুল ইসলাম ও সিফাত উল্লাহ।

চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে চারজনের মৃত্যু:

চুয়াডাঙ্গা শহরের সিনেমা হলপাড়ায় জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরেফিন আলম রঞ্জুর বাড়িতে দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

বরিশালে আগুনে পুড়ে নিহত ৩:

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবনে বিক্ষুব্ধ জনতার দেয়া আগুনে তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এসময় সাদিকের বাসভবন পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক বেলাল উদ্দিন।

শামীম-সেলিম ওসমানের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ:

এর আগে দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবনে আগুন দেয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে।

ঝিনাইদহে ইউপি চেয়ারম্যানসহ নিহত ২:

ঝিনাইদহের আদর্শপাড়ায় বিক্ষুব্ধ লোকজন জেলা সদরের ৯ নম্বর পোড়াহাটি ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ওরফে হিরনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে পুড়ে তিনি মারা যান। একই সময় চেয়ারম্যানের গাড়িচালক আক্তার হোসেন গণপিটুনিতে মারা যান।

গাজীপুরে নিহত ২:

গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুর আনসার–ভিডিপি একাডেমিতে গতকাল বিক্ষোভকারীরা হামলা চালান। এ সময় আনসার সদস্যরা গুলি ছোড়েন। গুলিতে অন্তত দুজন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার রাখালিয়াচালা এলাকার এলিম হোসেন। নিহত অপর যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

চাঁদপুরে ছেলেসহ ইউপি চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে হত্যা:

চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তাঁর ছেলে চিত্রনায়ক শান্ত খানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় গতকাল বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনরোষে পড়েন তারা। এ সময় পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পাশের বাগাড়া বাজারে এসে পিটুনিতে নিহত হন তারা।

কয়রায় উপজেলা চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে হত্যা:

খুলনার কয়রায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম মোহসিন রেজাকে গতকাল তার বাসভবনে ঢুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

মানিকগঞ্জে গুলিতে যুবক নিহত:

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় নৌ পুলিশের গুলিতে রফিকুল ইসলাম ওরফে চঞ্চল নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত রফিকুল মহাদেবপুর ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

লালমনিরহাট আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি থেকে পুড়ে যাওয়া ৬ মরদেহ উদ্ধার:

লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুমন খানের বাসাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরে সেখান থেকে অজ্ঞাত ৬ জনের দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল বাসার চার তলার একটি কক্ষ থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে। সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়ায় মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে মরদেহগুলো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বলে দাবি করছেন নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবার।

গতকাল শহরের মিশনমোড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়া ৬ শিক্ষার্থী বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে জানা গেছে। আন্দোলন শেষে মিশনমোড় থেকে কয়েক হাজার আন্দোলনকারী একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি থানা রোডের শহীদ মিনার এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু দুর্বৃত্তরা বাড়িটিতে আগুন দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

নিখোঁজদের পরিবার সেনাসদস্যদের সহায়তায় রাতে বাড়িটিতে গিয়ে মরদেহগুলো দেখতে পায়। পরিবারের ধারণা, মরদেহগুলো তাদের নিখোঁজ সন্তানদের হতে পারে।

৬ শিক্ষার্থীর পরিবারের মধ্যে রাজিবুল করিম সরকারের বাবা রেজাউল করিম বলেন, রাত থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সুমন খানের বাড়ির নিচে ছিলাম। পুড়ে যাওয়া দেহ ও কাপড়, জুতাসহ অনেক কিছু দেখে আমার ছেলেকে চিনতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, টয়লেটের ভেতরে ৬ জনকে সম্ভবত আগেই আটকে রাখা হয়েছিল। পরে অগ্নিকাণ্ডে তারা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এভাবে আমাদের সন্তানকে মেরে ফেলা হচ্ছে এই বিচার কার কাছে চাইব। আমরা এই হত্যাকাণ্ড চাই না, আমাদের সন্তান ও শান্তি ফিরিয়ে দিন।

লালমনিরহাট ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার শহিদুর রহমান জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে শোনার পরেই সুমন খানের বাসা থেকে ছয়জনের পুড়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো লালমনিহাট সদর থানায় জমা দেয়া হয়েছে। তারা ডিএনএ টেস্ট করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করবে।

Tags: