বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রে নেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানা গেছে।
বিএনপির পক্ষে থেকে বলা হচ্ছে, আগে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা ছিল আওয়ামী লীগ সরকার। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নির্বাহী আদেশ মুক্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে আইনি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট তাকে মুক্তি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
তবে, এখন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার মেডিকেল বোর্ডের অনুমতির প্রয়োজন। এখন মেডিকেল বোর্ড তার দীর্ঘ ২০-২২ ঘণ্টার সফরের বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে অনুমতি দিলে তাকে বিদেশে নেয়া হবে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গত ১৬ আগস্ট তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম কবে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবেন সেটা নির্ভর করছে তার মেডিকেল বোর্ডের অনুমতির ওপর। তাই এখন দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি তিনি কবে যাবেন। বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিতে তার পাসপোর্ট থেকে শুরু করে যাবতীয় সবকিছু প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, আমাদেরকে দেখতে হচ্ছে ১৫-২০ ঘণ্টা জার্নি করার মতো ম্যাডামের সেই শারীরিক অবস্থা আছে কি না। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে গেলাম, কিন্তু লম্বা জার্নি করার পর যদি শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায় তাহলে তো লাভ নেই।
তিনি বলেন, যখন চিকিৎসকরা অনুমতি দেবেন, তখনই আমরা চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেব। আমাদের সব প্রস্তুতি আছে। এখন শুধু চিকিৎসকদের অনুমতির অপেক্ষায় আছি।
বর্তমানে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে এবি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, আগের মতোই আছেন। উনার শারীরিক অবস্থা এখন মোটামুটি ভালো।
নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, দল যখন সিদ্ধান্ত নেবে ম্যাডামকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া হবে। তখন ভিসা কোনো বাধা হবে না। উনার ভিসা পেতে সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টা লাগবে। বিভিন্ন দূতাবাসের সঙ্গে তো আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ ও ভালো সম্পর্ক আছে।
বিএনপির একটি সূত্র বলেছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাংলাদেশ এসে খালেদা জিয়ার লিভারের একটি অপারেশন করে গেছেন। তাই এখন তার বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে আগের চিকিৎসকদের বিষয়টি বিবেচনা রেখে আমেরিকা নেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত রয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, গত কয়েক বছর আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে নানা অজুহাতে খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট আটকে রেখেছিল পাসপোর্ট অধিদপ্তর। গত ৬ আগস্ট খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার দিন রাতেই তার নবায়নকৃত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেয়া হয়।