গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী শেখ আসলাম (সুইডেন আসলাম)। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার লুৎফর রহমান।
এর আগে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় তিনি কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হয়ে যান। শেখ আসলাম ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ছাতিয়ার এলাকার মৃত শেখ জিন্নাত আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় হত্যা মামলা রয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, হাজতি (নম্বর-৬৬৩/২০) শেখ আসলামের (৬২) জামিনের কাগজপত্র মঙ্গলবার কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়। পরে কারা কর্তৃপক্ষ সেই জামিনের কাগজ যাচাই–বাছাই করে রাত ৯টায় তাকে মুক্তি দেয়। তিনি স্বজনদের সঙ্গে কারাগার থেকে বের হয়ে যান। ২০১৪ সাল থেকে তিনি কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শেখ আসলামের বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলা হয় তেজগাঁওয়ের যুবলীগের নেতা গালিব হত্যার ঘটনায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। এ মামলার ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত পুলিশ মাত্র ১৪ জনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। ওই মামলায় জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন শেখ আসলাম।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, হত্যা ও হত্যাচেষ্টার চারটি মামলায় আসলাম আদালত থেকে খালাস পেয়েছেন। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেনি। একটি মামলায় পেয়েছেন অব্যাহতি। অস্ত্র আইনের দুটি মামলায় তার যাবজ্জীবন এবং ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়। পরে এসব মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে অব্যাহতি পান।
বিষয়টি নিশ্চিত কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার লুৎফর রহমান বলেন, ২০১৪ সাল থেকে তিনি কাশিমপুর কারাগারে বন্দি ছিলেন। তার জামিনের কাগজপত্র এলে তা যাচাই-বাছাই শেষে রাতেই তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ঘোষিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন শেখ আসলাম। ১৯৮৬ সালে ফার্মগেটের পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে মায়ের হাত ধরে থাকা কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এরপর শেখ আসলামের বিরুদ্ধে একের পর এক খুনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠতে থাকে। একপর্যায়ে কিছুদিন তিনি সুইডেনে অবস্থান করেন। সেখান থেকে ফিরে আসার পর ‘সুইডেন’ শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাম হয় সুইডেন আসলাম।