বছরের শুরুর দিকে কয়েক মাস ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল কিন্তু শেষে এসে তা ক্রমেই বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, যা চলতি বছর একদিনে সর্বোচ্চ। এছাড়া গত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮৬৫ জন।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১১৯ জনের। এই সময়ে সবমিলিয়ে ২১ হাজার ৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪৫ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২১, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৫১, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৪২, খুলনা বিভাগে ৯৪ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮ জন রয়েছেন। এছাড়া বরিশাল বিভাগে ৪৬, রাজশাহী বিভাগে ২০ এবং রংপুর বিভাগে ২৮ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
গত একদিনে সারা দেশে ৬০৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫০০ জন।
২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
এর আগে, ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা যান।