দেশের আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ছয়টি কমিশনের কাজ নিয়ে শনিবার (৫ অক্টোবর) থেকে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
বুধবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করবে। উপদেষ্টারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের (রাজনৈতিক নেতাদের) সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং তাদের পরামর্শ নেবেন।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুতিনদিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠন করা হবে, যাতে তারা পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, কমিশনের প্রধানরা এরই মধ্যে তাদের কাজ শুরু করেছেন এবং কমিশনগুলোর কার্যপরিধি (টিওআর) চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কমিশনগুলোর জন্য অফিসের জায়গা খুঁজছে।
সংলাপকে একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলবে। সংস্কার কমিশনগুলো ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের নিজ নিজ রিপোর্ট জমা দেবে এবং তারপর উপদেষ্টা পরিষদ আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের (সিএইচটি) পরিস্থিতি নিয়ে অন্য এক প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি বৃহত্তর এলাকা এবং আমি মনে করি পার্বত্য অঞ্চলে এখন কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে না। পরিস্থিতি অনেক ভালো।
প্রসঙ্গত, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। আর সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে প্রথমে বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিকের নাম ঘোষণা করা হলেও পরে তা পরিবর্তন করে অধ্যাপক আলী রীয়াজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ১ অক্টোবর থেকে কমিশনের কাজ শুরুর করার কথা ছিল। কিন্তু কমিশন গঠনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করতে পারছে না।