মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ রিপোর্ট :
বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার শূন্যপদের বিপরীতে ১৩ লাখ প্রার্থী আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
আজ শনিবার শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও সমপর্যায়ের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শূন্যপদে ১৫ হাজার শিক্ষকের চাহিদা পেয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এ পরিপ্রেক্ষিতে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে অনলাইনে আবেদনের শেষ তারিখ ১০ আগস্ট পর্যন্ত ১৩ লাখ আবেদন জমা পড়ে। এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করে এনটিআরসিএ শূন্যপদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে।’
‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এ প্রক্রিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগপত্র ইস্যু করবে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা থাকবে না’, যোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
আজ এনটিআরসিএ আয়োজিত ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ঢাকা কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের ৯৯টি স্থানে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সরকার সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ্য, দক্ষ ও মেধাবীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, মানসম্মত শিক্ষক নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয়ভাবে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ লাভ করে যোগ্য শিক্ষকরা সত্যিকার অর্থে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করবেন। শিক্ষার মান উন্নয়নে এই শিক্ষকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে তিনি দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন।
সারা দেশে ৩৭ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিচ্ছিন্নভাবে ৩৭ হাজার কমিটির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হতো বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা এর আগেও হয়েছে। তখন সার্টিফিকেট দেওয়া হতো। এ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায় থেকে নানা অনিয়মের অভিযোগও আছে। কিন্তু এবারই আমরা শিক্ষানীতির আলোকে একটি মানসম্মত উপায়ে পরীক্ষা নিচ্ছি। এ ক্ষেত্রে গত মে-জুনে এমসিকিউ পদ্ধতিতে প্রথম প্রিলিমিনারি টেস্ট হয়েছে। প্রিলিমিনারি টেস্টে উত্তীর্ণদের এখন লিখিত পরীক্ষা হচ্ছে।
‘এই লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা উত্তীর্ণ হবেন, তাঁদের শিক্ষক হওয়ার জন্য পদায়ন করা হবে। খুব দ্রুত লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এরপর মৌখিক পরীক্ষাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী অক্টোবরের শেষ দিকে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।’
চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য এবার সারা দেশ থেকে ছয় লাখ দুই হাজার ৫৩৩ জন প্রার্থী প্রিলিমিনারি টেস্টে অংশ নেন। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য গতকাল শুক্রবার ৯০ হাজার ৯৪ জন বাছাইকৃত পরীক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষা হয়েছে।
আর আজ উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের ৫৫ হাজার ৬৯৮ বাছাইকৃত প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিলেন। চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণরা প্রতিষ্ঠানের চাহিদার নিরিখে নিজ নিজ উপজেলায় নিয়োগ পাবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, যারা সরকারকে শিক্ষকের চাহিদা না দিয়ে অস্থায়ী শিক্ষকদের দিয়ে কার্যক্রম চালাবেন, সেসব প্রতিষ্ঠানে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন, এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান এ এম এম আজহার, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/১৩–০৮–২০১৬ইং/নোমান