বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলোর একটি চীন। তবে দিন দিন কমছে দেশটিতে জন্মহার। এ নিয়ে বেশ চিন্তায় আছে চীন সরকার। জনসংখ্যা বাড়াতে প্রতিনিয়তই নিচ্ছে অভিনব সব কায়দা। তবুও বিশেষ লাভ হচ্ছে না।
এবার জনসংখ্যা বাড়াতে নতুন প্রকল্পের আহ্বান জানানো হচ্ছে। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ‘লাভ এডুকেশন' বা প্রেম নিয়ে শিক্ষা প্রদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পরিবার গঠনের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। দেশটির একটি সরকারি প্রকাশনা চায়না পপুলেশন নিউজের বরাতে সিনহুয়া পত্রিকা এ তথ্য জানিয়েছে।
২০২৩ সালে টানা দ্বিতীয় বছর জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে চীনে। ফলে দেশটিতে জনসংখ্যা কমায় ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের অনুমান, ২১০০ সালের মধ্যে জনসংখ্যা বর্তমান জনসংখ্যার চেয়ে অর্ধেক হয়ে যেতে পারে। কয়েক দশকের বিধি-নিষেধমূলক পরিবার গঠন নীতি, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় এবং পরিবর্তনশীল সামাজিক নিয়ম-কানুনের কারণে নারীরা সন্তান জন্ম কমিয়ে দিয়েছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ চীনে জনসংখ্যা ১.৪ বিলিয়ন। তবে দ্রুতহারে দেশটিতে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে কর্মশক্তি কমে যাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনসংখ্যা দেশটির অর্থনীতি, পেনশনব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে কলেজের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বড় চালক। কিন্তু বিয়ে এবং প্রেম নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন হয়েছে। জিয়াংসু সিনহুয়া পত্রিকা জানিয়েছে, দেশটিতে জনসংখ্যার এই ক্রান্তিকালে উর্বরতার সবচেয়ে বড় চালক এখন কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচিত বিবাহ ও ভালোবাসা বিষয়ক শিক্ষা কোর্স চালু করে শিক্ষার্থীদের বিবাহ ও ভালোবাসা বিষয়ে শিক্ষা প্রদানের দায়িত্ব নেওয়া।'
এই পদক্ষেপগুলো ‘স্বাস্থ্যকর ও ইতিবাচক বিবাহ এবং সন্তান জন্মদানকারী সাংস্কৃতিক পরিবেশ' তৈরি করতে সহায়তা করবে। চীনের জনসংখ্যা হ্রাস প্রতিরোধের প্রয়াসে এবং ‘সঠিক বয়সে' সন্তান জন্মদান ও বিবাহ করার প্রতি সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দিতে জন্য রাজ্য কাউন্সিল বা মন্ত্রিসভা নভেম্বরে স্থানীয় সরকারগুলোর সঙ্গে সমাবেশ করেছিল।
যদিও জনসংখ্যাবিদরা বলেছিলেন, এই পদক্ষেপগুলো তরুণ চীনাদের কমই আকৃষ্ট করতে পারবে। চায়না পপুলেশন নিউজের জরিপে অংশ নেওয়া কলেজ শিক্ষার্থীদের প্রায় ৫৭ শতাংশই বলেছেন, তারা প্রেমে পড়তে চান না। এর প্রধানত কারণ, তারা জানেন না একসঙ্গে কীভাবে পড়াশোনা ও ভালোবাসার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা যাবে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সিনিয়র কলেজ শিক্ষার্থী ও স্নাতক শিক্ষার্থীদের ‘কেস বিশ্লেষণ, ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা ও নারী-পুরুষের মধ্যকার যোগাযোগের ওপর গ্রুপ আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে পাঠদান করা যেতে পারে। কোর্সগুলো তাদের ‘বিবাহ ও ভালোবাসাকে সঠিকভাবে বুঝতে ও এই সম্পর্ক পরিচালনা করার ক্ষমতা উন্নত করতে' সাহায্য করবে।