টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরায় বাংলাদেশ। লাল বলের ক্রিকেটে পাওয়া সেই আত্মবিশ্বাস টাইগাররা টেনে আনতে পারলো না সাদা বলে। হার দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করল মেহেদি হাসান মিরাজের দল।
সেন্ট কিটসে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেছেন মিরাজ। জবাবে খেলতে নেমে ৪৭ ওভার ৪ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
লক্ষ্য তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি। স্কোরবোর্ডে ২৭ রান যোগ করতেই দুই ওপেনারকে হারায় তারা। ক্যারিবিয়ান শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন তানজিম হাসান সাকিব। এই পেসারের করা অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলটি স্কিড করে ঢুকেছিল। ব্যাটে খেলতে পারেননি কিং। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ার আগে ১৭ বলে ৯ রান করেন তিনি।
আরেক ওপেনার এভিন লুইসকে ফিরিয়েছেন নাহিদ রানা। এই পেসারের গতিতে পরাস্ত হয়েছেন লুইস। ৩১ বলে ১৬ রান করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছেন তিনি।
এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে ভালো ভিত গড়ে দেন শাই হোপ ও কেসি কার্টি। ২১ রান করা কার্টিকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন রিশাদ। কার্টি দ্রুত ফিরলেও শতকের পথে এগোচ্ছিলেন হোপ। শেষ পর্যন্ত ৮৬ রানে থেমেছেন তিনি। তাকে ফিরিয়েছেন মিরাজ।
হোপের বিদায়ের পর শারেফানে রাদারফোর্ডের সঙ্গে জুটি গড়েন জাস্টিন গ্রেভস। এই দুজনেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। রাদারফোর্ড রীতিমতো ঝড় তোলেন। সাজঘরে ফেরার আগে ৮০ বলে ১১৩ রান করেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। আর গ্রেভস অপরাজিত ছিলেন ৪১ রান করে।
বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট পেয়েছেন নাহিদ রানা, তানজিম সাকিব, মেহেদি মিরাজ, রিশাদ হোসেন ও সৌম্য সরকার।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও সৌম্য সরকার। গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করা সৌম্য জাতীয় দলের জার্সিতেও ভালো শুরু পেয়েছিলেন। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে ভালো লেংথে করেছিলেন আলজারি জোসেফ। জায়গায় দাঁড়িয়ে শট খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন সৌম্য। সাজঘরে ফেরার আগে ১৮ বলে ১৯ রান করেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার।
এদিন তিনে ব্যাটিং করতে নামেন লিটন দাস। সৌম্যের বিদায়ের পর উইকেটে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটন। সৌম্যের মতোই অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। রোমারিও শেফার্ডের শিকার হওয়ার আগে ৭ বলে ২ রান করেছেন লিটন।
সৌম্য-লিটনের বিদায়ের পর মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস গড়ার কাজটা ভালোভাবে করেছেন তানজিদ তামিম। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা তামিম এক প্রান্তে রানের চাকা সচল রেখেছেন। ব্যক্তিগত ফিফটি করেছেন মাত্র ৪৬ বলে। তবে ফিফটির পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি এই ওপেনার। ৬০ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।
প্রায় এক বছর পর ওয়ানডে দলে ফেরা আফিফ হোসেনও ভালো শুরু পেয়েছিলেন। তবে ফিরেছেন ২৮ রান করে। রোমারিও শেফার্ডের বলে ডিপ স্কোয়ার লেগে জেইডেন সিলসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।
একাধিকবার জীবন পাওয়া মিরাজ ফিফটির দেখা পেয়েছন। তবে তার ব্যাটিং ছিল কিছুটা ধীরগতির। শেষ পর্যন্ত ১০১ বলে ৭৪ রান করে বাংলাদেশ অধিনায়ক ক্যাচ দিয়েছেন শর্ট একস্ট্রা কাভারে।
শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ ও জাকের আলি দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। মাহমুদউল্লাহ ফিফটি করেছেন ৪৩ বলে। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন। আর জাকেরের ব্যাট থেকে এসেছে ৪০ বলে ৪৮ রান।