বরফে ঢাকা আর্কটিক মহাসাগরই নাকি হবে বরফমুক্ত। গ্রহের জন্য এমন উদ্বেগজনক তথ্যই প্রকাশ করেছে নতুন একটি গবেষণায়।
সম্প্রতি নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত গবেষণায় গবেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, আগামী দুই দশকের মধ্যে এই গ্রহের জন্য অশুভ মাইলফলক অনিবার্য। কারণ বরফে ঢেকে থাকা আর্কটিক মহাসাগর ২০২৭ সালের মধ্যে একেবারে বরফমুক্ত দিন দেখতে পারে।
বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করা আর্কটিকের বরফ ১৯৭৯ সালের পর থেকে প্রতি দশকে ১২ শতাংশেরও বেশি সঙ্কুচিত হচ্ছে।
বরফ গলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের গাঢ় পানি আরও বেশি সূর্যের আলো শোষণ করছে। এর ফলে বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে চারগুণ দ্রুত উষ্ণ অঞ্চলে রূপান্তরিত হয়েছে মহাসাগরটি। লাইভ সায়েন্সের তথ্য অনুযায়ী, আর্কটিকের বরফের পরিমাণ ১৯৭৯ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে গড়ে ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন বর্গমাইল (৬ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার) বিস্তৃত ছিল।
আর চলতি বছর এটি ১ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন বর্গমাইলে (৪ দশমিক ২৮ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার) নেমে এসেছে। ১১টি জলবায়ু মডেল এবং ৩৬৬টি সিমুলেশন ব্যবহার করে নতুন গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে, অস্বাভাবিক উষ্ণ পরিস্থিতি দেখা দিলে তিন থেকে ছয় বছরের মধ্যে ‘বরফমুক্ত’ আর্কটিকের দিনটি দেখা দিতে পারে।
গবেষণার প্রধান লেখক সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু গবেষক সেলিন হিউজ ‘প্রস্তুতির গুরুত্বের’ উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যেহেতু প্রথমবার বরফ-মুক্ত দিনের কাছাকাছি আমরা, তাই আমরা প্রস্তুত থাকতে চাই। কেন আর্কটিক মহাসাগরের সব বরফ গলে যেতে পারে, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষকরা জোর দিয়ে বলেছেন, কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে হবে। তাহলে হয়তো ‘বরফমুক্ত’ দিনটি আরও পরে আসতে পারে। বিস্তৃত প্রভাবকে কিছুটা হলেও কমাতে পারে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানুষ তাদের গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনকে যেভাবেই পরিবর্তন করুক না কেন ‘এটি গ্রহের জন্য অশুভ মাইলফলক’। সম্ভবত ৯ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এটি অবশ্যই ঘটবে। অথবা আগামী তিন বছরের মধ্যেও ঘটতে পারে।