সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর, দেশটির সামরিক স্থাপনায় একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। সিরিয়া ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি অবিলম্বে ইসরায়েলকে এ হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
সিরিয়ায় গত মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) থেকে শুরু করে বুধবার (১২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় পায় ৫ শতাধিক হামলা চালায় ইসরায়েল। এছাড়া সিরিয়ার সীমান্ত বরাবর বাফার জোনে ১৯৭৪ সালের চুক্তি ভেঙে সেনা মোতায়েন করেছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার।
এসব হামলা এবং সেনা মোতায়েন সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার সাম্প্রতিক ও ব্যাপক লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফ্রান্স, ইরান, মিশর, তুরস্কসহ অনেক দেশ। এবার ইসরায়েলকে সিরিয়া হামলা বন্ধ করতে বলেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিশেষ করে সিরিয়ার বেশ কয়েকটি স্থানে কয়েকশ ইসরায়েলি বিমান হামলার বিষয়ে উদ্বিগ্ন এবং জোর দিয়েছেন সারা দেশে সমস্ত ফ্রন্টে সহিংসতা হ্রাস করার জরুরি প্রয়োজন।
এর আগে গত রোববার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন, তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে বিদ্রোহীরা পরাস্ত করার পর একটি প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসাবে গোলান মালভূমির সিরিয়া নিয়ন্ত্রিত অংশে অসামরিক অঞ্চল দখল করার জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসরায়েল-সিরিয়া সীমান্তে ২৩৫ বর্গ-কিলোমিটারের বাফার জোনটি ১৯৭৪ সালে ইসরায়েল এবং সিরিয়ার মধ্যে বিচ্ছিন্নকরণ চুক্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা ইয়োম কিপপুর যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটায় এবং কয়েক দশক ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে।
এই অঞ্চলটি ইউএনডিওএফ নামে পরিচিত একটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী দ্বারা টহল দেওয়া হয়, জাতিসংঘ সোমবার এরইমধ্যে ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছে এটি সিরিয়ার সাথে ১৯৭৩ সালের যুদ্ধের সমাপ্তি ৫০ বছরের পুরনো চুক্তি লঙ্ঘন করছে।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা সিরিয়ার সংঘাতে জড়িত হবে না এবং ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাফার জোন দখল একটি প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ এবং এটি শুধুমাত্র তার নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সীমিত এবং অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।