muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

সচিবালয়ে বিদ্যুৎ নেই অনেক ভবনে, দাপ্তরিক কাজও বন্ধ

সচিবালয়ে বিদ্যুৎ নেই অনেক ভবনে, দাপ্তরিক কাজও বন্ধ

দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রে সচিবালয়ে গভীর রাতে লাগা আগুন ১০ ঘণ্টা পর নেভানো গেলেও কয়েকটি ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ সচল না হওয়ায় বিঘ্নিত হচ্ছে দাপ্তরিক কাজ। এর আগে সকাল ৯টার আগে থেকেই বিভিন্ন গেটের সামনে অবস্থান নেন এক হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী৷ তবে নিরাপত্তার বিষয় সামনে রেখে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। পরে সকাল ১০টার কিছুক্ষণ আগে থেকে সচিবালয়ের ৫ নং গেট দিয়ে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।

কিন্তু সচিবালয়ে প্রবেশের পাঁচটি প্রবেশমুখেই পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। ভেতরে কেউ ঢুকলেই করতে হচ্ছে জবাবদিহি। তবে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৭ নম্বর ভবনে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। স্বাভাবিক সময়ে ১, ২, ৩ ও ৫ নম্বর গেইট খোলা থাকলেও আজ কেবল ৫ নম্বর গেইট খোলা রাখা হয়। সেখান সবাইকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় পরিচয়পত্র দেখে। পরে ওই গেইট দিয়েই অনেকে বেরিয়ে আসেন।

সরেজমিন দেখা যায়, সচিবালয়ে মেট্রোরেল স্টেশন থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ ভবন, ওসমানী উদ্যান এবং খাদ্য ভবনের সামনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভিতরে প্রবেশের অপেক্ষা করছেন৷ পরে ৫নং গেট দিয়ে আগে নারী কর্মকর্তাদের সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।

জানা গেছে, আগের দিন ছিল বড় দিনের ছুটি। আর বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস। অফিস সূচি অনুযায়ী সকালেই সচিবালয়ে হাজির হন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীরা। কিন্তু কেবল একটি গেইট খোলা থাকায় প্রচণ্ড ভিড় লেগে যায়। সেই ভিড় পেরিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভেতরে ঢুকলেও দাপ্তরিক কার্যক্রম না হওয়ায় অনেকেই আবার বেরিয়ে পড়েন। তবে যেসব ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে, সেখানে কার্যক্রম চলার কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মী বলেন, আমাদের ভবনের অনেকখানি পুড়ে গেছে আগুনে। ভেতরে বিদ্যুৎ নেই। পোড়া গন্ধ ভাসছে। দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ। আমরা বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে বেরিয়ে এলাম।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মচারী বলেন, আমাদের ভবনে আগুন না লাগলেও পুরো ভবন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। আমরা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বেরিয়ে আসছি। ভেতরে বিদ্যুতও নেই।

তবে দুয়েকটি ভবনে জেনারেটর চলছে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হৃদয় মাহমুদ চয়ন বলেন, আমাদের এখানেও জেনারেটর চলছে। আমরা মিটিং করেছি।

প্রসঙ্গত, বুধবার গভীর রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়। দশ তলা ওই ভবনেই অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ; পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ; যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দপ্তর রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ৬, ৭, ৮, ৯ এই চারটি তলা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে অষ্টম ও নবম তলায় ক্ষতি হয়েছে বেশি, সেখানকার অধিকাংশ নথি পুড়ে গেছে।

এদিকে, আগুন নেভানোর সময় ট্রাকচাপায় আহত হওয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত ফায়ার ফাইটারের নাম মো. সোহানুজ্জামান নয়ন। তিনি তেজগাঁও ফায়ার টিমের স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্য। তার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুরে। তিনি দুই বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া আগুন নেভানোর সময় আরেক ফায়ার কর্মী পা কেটে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

Tags: