মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ রিপোর্টঃ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেছেন, ‘যারা জঙ্গি ঘটনা ঘটিয়েছে প্রত্যেকটি ঘটনা আমরা উদঘাটন করেছি, গ্রেপ্তার করেছি। দেখেছি তাদের মধ্যে অধিকাংশই ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত না।’
শনিবার বিকেলে গাজীপুরের রাজবাড়ী মাঠে জেলা পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত জঙ্গিবাদ, নাশকতা ও মাদকবিরোধী ওলামা-মাশায়েখ ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এসব জঙ্গিরা মাদ্রাসায়ও পড়েনি। কোরআনও ভালো করে পড়তে পারে না। হাদিসও জানেন না। মুষ্টিমেয় দু-চারটি সূরার খ-িত অংশ মুখস্ত করেছে। তার মধ্যে নাকি ‘জিহাদ কর’ এসব শব্দ আছে। জিহাদ করে তারা জান্নাতে যাবে। জান্নাতে গিয়ে হুর পাবে। জান্নাতে যাওয়ার এই ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মোটিভেট করে এই লোকগুলোকে জিহাদি তৈরি করছে এবং মানুষ হত্যা করছে।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, মানুষ হত্যা করে বেহেশত যাওয়া যাবে- এটা কি ইসলামের কোথাও আছে?
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ হত্যা করে বেহেশত যাবে, এটা কোনো ধর্মে নেই। নিরীহ লোক হত্যা করলে আল্লাহ তাদেরই বিচার করবেন।
আইজিপি বলেন, গুলশান, শোলাকিয়াসহ যতগুলো হত্যাকা- হয়েছে প্রত্যেকটা হত্যাকা-ের নায়ক তামিম চৌধুরী আজকে নারায়ণগঞ্জে নিহত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সদস্যরা তামিমদের ঘেরাও করে ফেলেছিল। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল আত্মসমর্পণের জন্য। তারা অত্মসমর্পণ করেনি। তারা পুলিশকে বোমা মেরেছে, পুলিশকে গুলি করেছে। পুলিশ বাধ্য হয়ে অপারেশন করেছে। সে অপারেশনে সে মারা গেছে। আমরা চেয়েছিলাম তাকে গ্রেপ্তার করে আসল তথ্য বের করতে। সেতো সুইসাইটার, তার কাছে বোমা আছে, তার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র আছে। পুলিশ বাহিনীরও মৃত্যুঝুঁকিতে ছিল। পরে তাদের সঙ্গে মোকাবিলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তদন্তে পেয়েছি মাদ্রাসার কিছু ছেলে যারা মওদুদির মদদপুষ্ট একটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত তারা জঙ্গি হচ্ছে। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ছেলেরা জঙ্গিতে যোগদান করছে। তামিমরা মাদ্রাসায় পড়েনি। সে ইংলিশে কথা বলত, আধুনিক জীবন-যাপন করত।
তিনি বলেন, আজকে ইসলামের নামে ভুল-বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে, তাদের ভাষায় খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জিহাদ করতে যাচ্ছে। এভাবে ইসলামকে ধ্বংস করা হচ্ছে। কিন্তু ইসলাম শান্তির ধর্ম। এখানে কোনাে হানাহানি-মারামারি, হত্যা ইসলাম সমর্থন করে না। এখন জিহাদের কথা বলে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। নিরীহ মানুষ, নারী-শিশু হত্যা করা হচ্ছে। মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ারত অবস্থায় মুসল্লিদের হত্যা করা হচ্ছে। ঈদগা ময়দানে হত্যা করা হচ্ছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, গাজীপুর মাহনগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, কাপাসিয়া বঙ্গতাজ কলেজের অধ্যক্ষ মাওলানা মীযানুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসেন, মাওলানা আব্দুল মান্নান বাজিতপুরী, হযরত মাওলানা মুফতী লেহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ।