muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

করিমগঞ্জ

করিমগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ, প্রতিবাদে ইউনিয়ন বিএনপির সভা

করিমগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ, প্রতিবাদে ইউনিয়ন বিএনপির সভা

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন-আহ্বায়ক সুমন রেজাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তারই প্রতিবেশী প্রবাসী নাজমুলের বিরুদ্ধে। দুই দফায় হত্যার চেষ্টা করা হলেও ভাগ্যের জোরে বেঁচে যান তিনি। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলার কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত বিরোধ বা রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে, এ ঘটনার পর স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভুক্তভোগীর পরিবার দ্রুত বিচার দাবি করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে।

এরই প্রতিবাদে গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার গুজাদিয়া ইউনিয়নের জনতা বাজারে প্রতিবাদ সভা করেছে ইউনিয়ন বিএনপি।

উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুব আলম রনু দরবারীর সঞ্চালনায় ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা তাঁতীদলের যুগ্ন আহ্বায়ক মোঃ তরিকুল ইসলাম তপন, জেলা যুবদলের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক এরশাদুল ইসলাম, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুতাকাব্বির আজাদ, সহ-সভাপতি রুকন উদ্দিন গেন্দু, সাংগঠনিক সম্পাদক রুকন উদ্দিন, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ সিরাজ উদ্দিন মেম্বার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আউয়াল, উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শারজুল ইসলাম, উপজেলা তাঁতীদলের সদস্য সচিব কামরুল ইসলাম, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সৈয়দ সেলিম জাবেদ, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবুল হোসেন, ছাত্রদল নেতা জোবায়ের আহম্মেদ প্রমূখ।

অভিযুক্ত নাজমুল একই এলাকা টানপাড়ার আব্দুস সালামের ছেলে।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবার নাজমুল নিজেই সরাসরি হত্যার চেষ্টা চালায়। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর বিকালে করিমগঞ্জ সদরে যাওয়ার পথে নামাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুমন রেজাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে নাজমুল। তবে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে নাজমুলকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। বিগত ৪ আগষ্ট করিমগঞ্জে ছাত্র-জনতার উপর সশস্ত্র হামলার গুরুতর অভিযোগে থাকায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়এবং নাজমুলকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

দ্বিতীয় দফায় ভাড়াটে কিলার দিয়ে হত্যার চেষ্টা

কিছুদিন পর নাজমুল জামিনে মুক্তি পায় এবং পরে বিদেশে চলে যায়। এর পরও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিরাপদে থাকতে পারেননি। অভিযোগ রয়েছে, নাজমুল জেলখানায় থাকাকালীনই দ্বিতীয়বার হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সে কিছু ভাড়াটে কিলার ঠিক করে, যারা সে সময় জেলখানায় বন্দি ছিল। নাজমুল জামিনে বের হওয়ার পর সেই ভাড়াটে কিলারদেরও জামিন করিয়ে নেয় এবং তাদের দিয়ে ফের স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। তবে স্থানীয়দের সতর্কতায় এই হামলাও ব্যর্থ হয়। ভুক্তভোগী ও স্থানীরা কিলারদের ধরে পুলিশে সোপর্দ এবং ভিকটিমের ভাই মোঃ মঞ্জুর হাসান বাদী হয়ে করিমগঞ্জ থানায় নাজমুলসহ তাদের নামে বিস্ফোরক আইনে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করে।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি দুপুরে আসামি নাজমুলের বাড়িতে হামলাকারীরা খাওয়া-দাওয়া করে এবং পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন রাত সাড়ে সাতটায় দেশীয় পাইপগান ও পেট্রোল নিয়ে ভিকটিম সুমন রেজার বাড়িতে হামলা চালায়। তবে সুমন রেজা তখন বাড়িতে না থাকায় হত্যার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।

এসময় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় প্রতিবেশীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলে এবং হামলাকারীদের আটক করে। পরে পুলিশে খবর দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়।

দ্বিতীয় দফায় ভাড়াটে কিলারা হলো- কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বিন্নাটী গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে রহমত উল্লাহ(৩০), একই গ্রামের মোঃ শরিফুল ইসলামের ছেলে রাউদাতুল বিন ইসলাম নাফসী(২১), জেলা শহরের বত্রিশ এলাকার শরীফের ছেলে রেদোয়ান ইসলাম(২১)।

প্রতিবাদে ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দরা নাজমুলের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতার ওপর বারবার হামলার চেষ্টা করা হলেও প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা দুঃখজনক। আমরা দ্রুত মূল আসামী নাজমলের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এদিকে, করিমগঞ্জ থানা অফিসার ইন-চার্জ শেখ মোহাম্মদ মাহমুদ মোরশেদ জানান, মামলার তদন্ত চলছে। প্রবাসী আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়দের মধ্যে এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ও তার পরিবার এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এখন দেখার বিষয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কত দ্রুত এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।

অভিযুক্ত নাজমুল বিদেশে থাকায় তার যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে তার বাবা আব্দুস সালাম এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

Tags: