মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ রিপোর্টঃ
মোঃ আশরাফ আলী, স্টাফ রিপোর্টারঃ অদ্য ২৯ আগস্ট ২০১৬ তারিখ তাড়াইল ও কিশোরগঞ্জ সদরের ১১ টি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ শেষে অদ্য ২৯ আগস্ট ২০১৬ খ্রি. তারিখ সকাল ১১:০০ টায় ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হিসাবে এডিসি জেনারেল তরফদার মোঃ আক্তার জামীল যখন দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত, কাজের তীব্রতা যখন প্রবল, ঠিক তখনই তার মোবাইল ফোনে এলো আরেকটি কিশোরীর বাল্যবিবাহ আয়োজনের সংবাদ। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের সাহসী পাড়া গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের নবম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার পাখির বাল্য বিবাহের আয়োজন করে তার পরিবার। বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে অবগত হওয়া গেল তার বয়স এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থান। তাৎক্ষণিক সঙ্গীয় দাপ্তরিক সহযোগীদের নিয়ে রওয়ানা হলেন সাহসী পাড়ার দিকে।
ফারজানার স্কুলের সুপারিনটেনডেন্ট জনাব ইঞ্জিঃ মোঃ ইমদাদুর রহমান এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য জনাব আঃ মতিনকেও আসতে বলা হলো বিয়ে বাড়িতে। স্কুলের সুপারিনটেনডেন্ট এর নিকট হতে ভর্তির রেজিস্ট্রেশন ও অন্যান্য কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা গেল কনের বয়স এখনও আঠারো হয়নি। কনের বাড়িতে পৌঁছে দেখা গেল বিয়ের আয়োজন পাকাপাকি। বর আগমনের অপেক্ষা। ডাকা হল কনেসহ পরিবার পরিজনকে। জড় হলো আশেপাশের বহু লোকজন। স্কুলের সুপারিনটেনডেন্ট জানালেন কনে অত্যন্ত মেধাবী এবং স্কুলে তার উপস্থিতির হারও সন্তোষজনক। আলাপচারিতার মধ্যে কনের ভাষ্যমতে জানা গেল তার এই অকাল বিয়েতে অমতের কথা। কান্না ভেঁজা কন্ঠে কনের বিয়েতে আপত্তির কথায় যেন প্রচন্ড ক্ষোভে ফেটে পড়লেন এডিসি জেনারেল সাহেব।
একদিকে বাল্য বিবাহ তাও আবার কনের অমতে। সিদ্ধান্ত এলো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর কাছ থেকে। বন্ধ করতে বললেন তিনি বিধি বহির্ভূত এই বাল্য বিবাহ। অন্যায়ভাবে বাল্যবিবাহ আয়োজনের জন্য জরিমানা করা হলো উপস্থিত কনের বড় ভাইকে। উপস্থিত স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণও ফেললেন স্বস্তির নিঃশ্বাস অভিভাবকগণও সম্মত হলেন বয়স পূর্ণাঙ্গ না হওয়া পর্যন্ত মেয়েকে বিয়ে দেবেন না। বেঁচে গেল অভিশপ্ত বাল্য বিবাহের ভয়াল থাবা হতে আরেকটি কিশোরীর প্রাণ।
উল্লেখ্য, কনের বাড়িতে যাওয়ার পথে এডিসি জেনারেল কৌতূহলবসত জনৈক বৃদ্ধ ব্যাক্তিকে কনের বাড়ির এলাকার নাম সাহসী পাড়া হওয়ার কারন জিজ্ঞেস করলে বৃদ্ধ ব্যাক্তি বলেন এলাকার সবাই সাহসী তাই এর নামকরন করা হয় সাহসী পাড়া। তখন সেই বৃদ্ধ ব্যাক্তি এডিসি জেনারেলকে জিজ্ঞেস করেন আপনি কোথা থেকে এসেছেন?
তার প্রতিউত্তরে হাস্যজ্জল মুখে এডিসি জেনারেল তরফদার মোঃ আক্তার জামীল বলেন, আমার বাড়ি অভয় নগর…।
ফেরার পথে এডিসি জেনারেল সকলকে অভয় দিয়ে আসলেন, যেকোনো দুর্যোগে সবাই যেন জনবান্ধব প্রশাসনের দারস্থ হয়।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/২৯-০৮-২০১৬ইং/ অর্থ