মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জনগণই আমার শক্তি। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে আমরা সক্ষম হয়েছি। অভিভাবক, শিক্ষক, ছাত্র সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ এখন সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে ব্যাপক সচেতন। জনগণই এখন সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দিচ্ছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির দফতরে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র ১০ ঘণ্টার মধ্যে গুলশানে জিম্মিদের উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে পেরেছি।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিরোধীদল কোনও রাজনৈতিক স্থান পাচ্ছে না, এ বক্তব্য ঠিক নয়। তারা মিছিল-মিটিং র্যালি সব কিছুই করছে। তিনি বলেন, একটা রাজনৈতিক দল ভুল করলে খেসারত তাকেই দিতে হয়। তারা নির্বাচনে না এসে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে। স্পেস দেওয়ার নামে কী তাদের আবার মানুষ পুড়িয়ে হত্যার সুযোগ করে দিতে হবে? তিনি বলেন, কথা তো কারো কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে না। যার যার ইচ্ছা মতো কথা বলেই যাচ্ছে। রাজনীতির যে যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন টিভি চ্যানেল আমিই করে দিয়েছি। এসব টিভি চ্যানেলে সরকারের অহরহ সমালোচনা চলছে। তিনি বলেন, বিরোধীদলের উন্নয়নের রাজনীতির ব্যাপারে কোন আগ্রহ নেই। তারা অতীতে অগণতান্ত্রিকভাবেই ক্ষমতায় এসেছিল।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব ছিল। এ ব্যাপারে আমরা জাতির কাছে ওয়াদাবদ্ধ ছিলাম। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দেন, সাজাপ্রাপ্ত ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধীরও মুক্তি দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেক্টরে উন্নয়ন, দারিদ্র্যমুক্ত ও আর্থ সামাজিক উন্নয়ন করা। এক্ষেত্রে আমরা সফল হচ্ছি। দারিদ্র্যের হার ২২.৪ ভাগে নামিয়ে এনেছি। বাজেট বৃদ্ধি করেছি। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ৫ কোটি মানুষ নিম্নবৃত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উন্নীত হয়েছে। হতদরিদ্রদের কষ্ট দূর করতে ১০ টাকায় ৩০ কেজি করে চাল ক্রয়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র সফরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়া ছাড়াও একাধিক পার্শ্ববৈঠকে যোগ দেন ও বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। নিউইয়র্ক সফর শেষে বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটন অবস্থান করছেন। পুত্র-কন্যা, নাতি-নাতনিদের সান্নিধ্যে কটা দিন অতিবাহিত করার অভিপ্রায়ে প্রধানমন্ত্রী ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওয়াশিংটন ডিসিসংলগ্ন ভার্জিনিয়ায় পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসায় অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা। বাংলাদেশ ডেল্টা কোয়ালিশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করবে
বাংলাদেশ পরবর্তী এক বছর ডেল্টা কোয়ালিশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করবে। নেদারল্যান্ডস আনুষ্ঠানিকভাবে গত ২১ সেপ্টেম্বর ডেল্টা কোয়ালিশনের সভাপতিত্ব বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নিকট নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক পানি বিষয়ক বিশেষ দূত হেঙ্ক অভিঙ্ক দায়িত্ব হন্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, পররাষ্ট্র সচিব এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী নেদারল্যান্ডস সরকারের এই বিশাল উদ্যোগ এবং ডেল্টা কোয়ালিশনকে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে তাদের সক্রিয় অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানান।
এই কোয়ালিশনের বর্তমান সদস্য রাষ্ট্রসমূহ হলো বাংলাদেশ, কলম্বিয়া, মিশর, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, মোজাম্বিক, মিয়ানমার, নেদারল্যান্ডস, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভিয়েতনাম।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম / ২৪-০৯-২০১৬ ইং/মোঃ হাছিব
Tags: