muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

আইন আদালত

উবায়দুল মোকতাদির ও আরিফ মোস্তফাসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

উবায়দুল মোকতাদির ও আরিফ মোস্তফাসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

কারাগারে থাকা সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুনসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের দুজন কর্মকর্তার আলাদা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর জেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অন্যরা হলেন-পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আরিফ মোস্তফা, তার স্ত্রী তাহেরা মোস্তফা, মেয়ে সুবর্ণা মোস্তফা ও ছেলে তাইফ মোস্তফা। উবায়দুল মোকতাদির ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক আবু মোহাম্মদ আনোয়ারুল মাসুদ।

অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের বরাতে আবেদনে বলা হয়, উবায়দুল মোকতাদির ‘রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে’ বিপুল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে দুদকের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।

তিনি বর্তমানে ভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন, জামিনে বের হয়ে দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন। এছাড়া তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুন যে কোনো সময় দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে জন্য তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন মনে করছে দুদক।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৩১ অক্টোবর ঢাকার শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে উবায়দুল মোকতাদিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাবেক সচিব ও মুক্তিযোদ্ধা উবায়দুল মোকতাদির ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে ২০১১ সালে উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব হিসেবে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে দায়িত্ব পালন করা উবায়দুল মোকতাদির ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়নে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হন।

এরপর ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবং চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো জয়লাভ করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আরিফ মোস্তফা পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন। আবেদনে বলা হয়, আরিফ মোস্তফার বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি ও অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের অভিযোগ, তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত থাকাকালে কম দামের যন্ত্র বেশি দামে কিনে ও তার আগে মান পরীক্ষার নামে বিদেশ ভ্রমণ করে ‘অবৈধ আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন’। বিভিন্ন প্রকল্পে ‘দুর্নীতির’ অর্থ দিয়ে তার স্ত্রী তাহেরা মোস্তফার নামে খুলনার বিভিন্ন মৌজায় শত শত বিঘা জমি কিনেছেন। খুলনা শহরে একাধিক বাড়ি করেছেন, বিভিন্ন কোম্পানিতে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে শেয়ার কিনেছেন। কোম্পানির মাধ্যমে নিজ কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডারে অংশ নিয়ে ‘অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ বাগিয়ে নিয়ে শত শত কোটি টাকার অবৈধ’ সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

সংস্থা বলেছে, আরিফ মোস্তফা খুলনা শহরে ষষ্ঠ তলা বাড়ি, গুলশান-২ ও ধানমন্ডিতে একাধিক ফ্ল্যাট, নিজ এলাকায় ৫০ বিঘা জমি, স্ত্রীর নামে খুলনায় ১০০ বিঘা জমি, স্ত্রী ও ভাই-বোনদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর কিনেছেন। এছাড়া বিপুল স্বর্ণ কেনাসহ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।

আরিফ মোস্তাফা অবৈধভাবে অর্জিত এসব সম্পত্তি হস্তান্তর করে সপরিবাবে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তুলে ধরে দুদক বলেছে, তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা বাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন বলে সংস্থা মনে করছে।

Tags: