সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) না থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (৯ জুন) সকালে যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “যদি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে আইনি প্রক্রিয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে। কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে কারণে যাচাই-বাছাই করেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া দেশের প্রতিটি নাগরিকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বিষয়গুলো দেখভাল করছে মন্ত্রণালয়ের তিন সদস্যের একটি কমিটি।”
ঈদ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “ছোটখাটো ছিনতাই ও চুরি ছাড়া সামগ্রিকভাবে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে।” এ সময় তিনি থানায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা ও খাদ্য ব্যবস্থার খোঁজখবরও নেন।
এর আগে, রোববার দিবাগত রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সূত্রে জানা যায়, রাত দেড়টার দিকে তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছান এবং আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জে নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।
গত ৮ মে তিনি ব্যাংককে চিকিৎসার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। ওইদিন রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছেলে রিয়াদ আহমেদ ও শ্যালক ড. এ এম নওশাদ।
তাঁর বিদেশযাত্রা ঘিরে দেশে ব্যাপক সমালোচনা ও বিক্ষোভ শুরু হয়। এই ঘটনায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার হাসান চৌধুরী এবং ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহসিন আরিফকে প্রত্যাহার করা হয়। বরখাস্ত করা হয় কিশোরগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক আজহারুল ইসলাম ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ট্রেইনি উপপরিদর্শক মো. সোলেমানকে।
এছাড়া আবদুল হামিদের বিদেশযাত্রার পর আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং ইসলামপন্থী কয়েকটি দলের নেতা-কর্মীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করে। পরে তারা শাহবাগ মোড়ে সমাবেশ করে অবস্থান নেয়। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে—বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
উল্লেখ্য, ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলির ঘটনায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট ১২৪ জনের বিরুদ্ধে গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়।