বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে ভারতীয়দের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন এবং এর জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে দায়ী করেন। পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলা ভাষায় কথা বললে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে। বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। লজ্জা করে না আপনাদের! আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং অন্য পরিচয়পত্র থাকার পরেও শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকার এই কাজ করেছে। আমি তাদের ধিক্কার জানাই।’’
সম্প্রতি ভারত থেকে সীমান্তে ‘পুশ ইন’ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছে ১ হাজার ২৪৪ জনকে। দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বৈঠক এবং কূটনৈতিক তৎপরতা সত্ত্বেও এসব বন্ধ হয়নি।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সীমান্তে পুশ ইন না করে প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের কূটনৈতিকভাবে ফেরত পাঠাতে ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, মহারাষ্ট্রে কাজ করতে যাওয়া তিনজন পরিযায়ী শ্রমিককে সম্প্রতি বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে মুম্বাই পুলিশ। পরে তাদের পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়। বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের নজরে এলে রাজ্য প্রশাসনের সহযোগিতায় ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে তাদের ভারতে ফেরত আনা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, এই তিনজনই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে দুইজনের বাড়ি মুর্শিদাবাদে, আর একজনের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও আসামসহ কয়েকটি রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছে ভারতের মোদি সরকার।