তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে বাছাই কমিটি ব্যর্থ হলে বিচার বিভাগ থেকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়ে একমত হয়েছে বিএনপি ও জামায়াত। তবে এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলনসহ কিছু রাজনৈতিক দল এর বিরোধিতা করেছে। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে নতুন জট তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ১৭তম দিনের সংলাপে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।
সংলাপে জাতীয় সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে একটি বাছাই কমিটি গঠন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব দেয় কমিশন। এ বিষয়ে শুরুতে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য থাকলেও বিএনপির পক্ষ থেকে নতুন একটি সংশোধিত প্রস্তাব আসে।
প্রস্তাব দেওয়ার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কমিটির মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ না করলে সংবিধানের ১৩তম সংশোধনীর বিধান বলবৎ থাকবে। তবে রাষ্ট্রপতিকে এই প্রক্রিয়া থেকে বাদ রাখা হবে। অর্থাৎ কোনোভাবেই রাষ্ট্রপতি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে পারবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৩তম সংশোধনীতে বিচার বিভাগ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের কথা বলা আছে। এই ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াত একমত।’
তবে এই অবস্থানের বিরোধিতা করে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন ও কারা এই সরকারে প্রধান হবেন- সেই ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একমত হয়ে যাওয়ার কারণে অন্যান্য দলের নতুন প্রস্তাব চাপা পড়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত কিছু দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে একটা প্রস্তাব এসেছিল- বিচার বিভাগ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান না আনা। যুক্তি ছিল, এতে বিচার বিভাগের দলীয়করণের সম্ভাবনা থাকে। রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টা রাখার অভিজ্ঞতাও আমাদের আছে- ১/১১ সরকারের আবির্ভাব ঘটেছিল।’
রুবেল আরও বলেন, ‘এরপর আলোচনায় বিএনপি নতুন প্রস্তাব এনেছে, যেখানে সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী অনুযায়ী বিচার বিভাগ থেকে প্রধান উপদেষ্টা রাখার বিষয়টি ফের বিবেচনায় আনা হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত একমত হয়ে গেছে।’
তিনি জানান, কমিশনের প্রস্তাব ছিল- প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান এক ব্যক্তি হতে পারবেন না। অধিকাংশ দল এতে একমত হলেও প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা একই ব্যক্তি হতে পারবেন কি না- সেখানে মতভেদ রয়ে গেছে।