কম্বোডিয়ার সেনাদের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনীর এক সদস্যসহ ১২ জন নিহত এবং ১৪ জন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে থাই কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর, আট বছর বয়সী এক শিশু ও এক সেনা সদস্য রয়েছেন। আহতদের মধ্যেও একজন পাঁচ বছরের শিশু রয়েছে। হতাহতের ঘটনা ঘটে থাইল্যান্ডের শ্রীসাকেত, সুরিন ও উবন রচাথানি প্রদেশে।
থাই সেনাবাহিনীর অভিযোগ, কম্বোডিয়ার সেনারা সীমান্তবর্তী গ্রাম ও একটি হাসপাতালে রকেট নিক্ষেপ করে। এর জবাবে থাইল্যান্ড এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে কম্বোডিয়ার সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালায়। একই সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে সেখানে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
ঘটনার শুরু সম্পর্কে থাইল্যান্ডের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার পর কম্বোডিয়া একটি ড্রোন পাঠায় থাই সেনা অবস্থানে নজরদারির জন্য। এরপর কম্বোডিয়ার সেনারা রকেট লঞ্চারসহ ভারী অস্ত্র নিয়ে জড়ো হতে থাকে। থাই সেনারা ‘চিৎকার করে’ তাদের আলোচনার আহ্বান জানালেও কোনো সাড়া মেলেনি। সকাল ৮টা ২০ মিনিটে কম্বোডিয়া থেকে প্রথম আরপিজি হামলা হলে পাল্টা জবাব দেয় থাই সেনারা।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ‘ভোর সাড়ে ৬টায় থাইল্যান্ড প্রথম হামলা চালায় এবং একটি বিরোধপূর্ণ মন্দির এলাকায় সেনা মোতায়েন ও তারকাঁটার বেড়া বসাতে শুরু করে।’ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সওচেতা বলেন, ‘থাই সেনারা বিনা উসকানিতে হামলা চালালে আমরা আত্মরক্ষার্থে জবাব দিই।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘থাইল্যান্ড আমাদের ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালিয়েছে এবং ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করছে।’
দুই দেশের মধ্যে এই সীমান্ত উত্তেজনার পেছনে রয়েছে শতবর্ষ পুরনো বিরোধ। ফরাসিদের ঔপনিবেশিক মানচিত্র অনুযায়ী তৈরি সীমান্ত নিয়ে উভয় দেশই আলাদা ব্যাখ্যা দেয়, যার ফলে প্রায়ই সংঘর্ষ দেখা দেয়। এবারের সহিংসতা সেই দীর্ঘদিনের বিরোধের সর্বশেষ নজির।