muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

খেলার খবর

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিসারে প্রথম জয় থেকে শততম জয় এর সেই নায়কেরা

ক্রীড়া ডেস্কঃ

 

প্রথম জয় থেকে শততম জয়। এ সময় কত পথ পেরিয়েছে বাংলাদেশ। কত কাল হয়ে গেছে পার। পদ্মা-মেঘনায় গড়িয়েছে কত জল, সীমা নেই তার।

কত স্মৃতি মুছে নতুনের জন্ম হয়েছে। কত দুঃস্মৃতি ভুলে উঠে দাঁড়িয়েছে বারবার, লড়তে শিখেছে, জিততে শিখেছে আর উৎসবের উপলক্ষ দিয়েছে বারবার।

গোটা জাতিকে নিয়ে এসেছে এক বিন্দুতে। যেই বিন্দুতে দল, মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ষোলোকোটি প্রাণ এক হয়ে যায়। এ ষোলকোটি প্রাণের একটাই ‘বাংলাদেশ’।

 

মোহাম্মদ রফিক এ আলোর পথের দিঁশারী। বাংলাদেশের প্রথম জয়টা এসেছিল তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ভর করে। ৫০তম জয় পায় তামিমের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে। আর শততম জয়ের নায়ক তামিম সেটা তো এখন টক অফ দ্যা টাউন।

 

শুধু কী তারাই? জয়ের নায়কেরা তো অনেকেই। ১-১০০তম জয়ের নায়কদের নিয়ে রাইজিংবিডি’র ক্রীড়া বিভাগের বিশেষ আয়োজন। প্রতিবেদনটি তৈরী করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক ইয়াসিন হাসান।

 

1

 

১ম জয়: নায়ক মোহাম্মদ রফিক
ভারতের হায়দরাবাদে ১৯৯৮ সালের ১৭ মে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে প্রথম জয় পায় কেনিয়ার বিপক্ষে। বল হাতে মোহাম্মদ রফিক প্রথমে ৫৬ রানে ৩ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন। ওই ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মত ওপেনিংয়ে নেমে নজরকাড়া ইনিংস উপহার দেন রফিক। কেনিয়ার দেওয়া ২৩৬ রানের টার্গেট বাংলাদেশ ২ ওভার ও ৬ উইকেট হাতে রেখে ছুঁয়ে ফেলে।

 

১ম জয় নিয়ে মোহাম্মদ রফিকের স্মৃতিচারণ:
‘ম্যাচটি আমরা দারুণ খেলেছিলাম।এর আগেও আমরা এরকম খেলেছি কিন্তু জয় পেতাম না। অবশেষ কেনিয়াকে ওই ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারাতে সক্ষম হই। আমাদের মধ্যে তখন ওভাবে পেশাদারিত্ব আসেনি। ভালোমানের কোচও ছিলা না। ট্রেনিংয়েরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু নিজেদের চেষ্টায় খেলে যেতাম। এটা ভাবতেই ভালো লাগে যে আমাকে দিয়ে ইতিহাস শুরু হয়েছে। বলতে পারেন ওই ম্যাচটি দিয়ে জন্ম হয় বাংলাদেশের। আর আমার হাত ধরেই নতুন পথে হাঁটা শুরু করে বাংলাদেশ।’

 

10

 

১০ম জয় : নায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল
২০০৫ সালে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর কথা কি মনে আছে? সবাই হয়ত নড়েচড়ে বসছেন। হ্যাঁ ওই ম্যাচটি বাংলাদেশের ১০তম ওয়ানডে জয়। জয়ের নায়ক লিটল মাস্টার মোহাম্মদ আশরাফুল। ধ্রুবতারা হয়ে বাংলাদেশে ক্রিকেটে আসা আশরাফুল অস্ট্রেলিয়াকে এক হাতে শাসন করে বাংলাদেশকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের স্বাদ দিয়েছিলেন। রূপকথার মতো বলতে শোনাবে, বিশ্ব ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত সব বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছিলেন আশরাফুল। তার অনবদ্য সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৫০ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ ছুঁয়ে ফেলে ৫ উইকেট হাতে রেখে।

১০ম জয় নিয়ে মোহাম্মদ আশরাফুলের স্মৃতিচারণ : ‘এটা যে ১০ম জয় এটা মনে পড়ছে না। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় আমার জীবনের সব বড় প্রাপ্তি। মনে আছে বাংলাদেশের হয়ে সেটি ছিল দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি। এখন তো তামিম, সাকিব, মুশফিকরা প্রায়ই সেঞ্চুরি হাঁকায়। তবুও আমার ওই সেঞ্চুরিটা সবার মনে আছে। অস্ট্রেলিয়া দলে তখন গ্রেট গ্রেট বোলাররা ছিল। আমরা দারুণ একটা জয় পেয়েছিলাম।’

 

20

 

২০তম জয়: নায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা
২০০৬ সালের ১৫ আগস্ট। নাইরোবিতে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও কেনিয়া। সে সময়ে কেনিয়োর উন্নতির গ্রাফটা নিম্নমুখী ও বাংলাদেশের উর্ধ্বমুখী। পার্থক্যটা মাঠে স্পষ্ট করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। নড়াইল এক্সপ্রেস সেদিন ২৬ রানে নেন ৬ উইকেট; যা এখনো বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। তার দূর্দান্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশ ২০তম জয় নিয়ে নাইরোবি ছাড়ে। ওয়ানডেতে ৬ উইকেট পেয়েছেন রুবেল হোসেন ও তরুণ মুস্তাফিজুর রহমান। কিন্ত কেউই ‘গুরু’কে টপকাতে পারেনি।

 

২০ম জয় নিয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার স্মৃতিচারণ:   
‘প্রথমবার ৫ উইকেট পাওয়া তো অবশ্যই বিশেষ কিছু। আরও ভালো লেগেছিল ৬ উইকেট পেয়ে। বাংলাদেশের হয়ে সেটিই তো মনে হয় প্রথম কেউ ৬ উইকেট পেয়েছিল। সেদিন সম্ভবত ১৫ ওভারের পর বোলিংয়ে এসেছিলাম। রাসেল-রফিক ভাইরা শুরুতে ভালো বল করে ওদের চাপে ফেলেছিল। আমি এরপর সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। উদযাপন বিশেষ কিছু ছিল না। কেনিয়ার আগে আমরা জিম্বাবুয়েতে সিরিজ হেরে এসেছিলাম, এই সিরিজে জয়টি তাই খুব দরকার ছিল। দলের জয়টাই তাই ছিল স্বস্তির।’

 

30

 

৩০তম জয় : নায়ক শাহরিয়ার নাফিস
২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। শাহরিয়ার নাফিসের ৬৯ রানের ইনিংসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৪ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। সেটি ছিল বাংলাদেশের ৩০তম জয়। খালি চোখে সাদামাটা জয় মনে হলেও হতে পারে। সেবার জিম্বাবুয়ে সফরে চারটি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ জিতে নেয়। প্রথম ম্যাচটি হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকেরা। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচে দাপটের সঙ্গে খেলে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ। গুরুত্বপূর্ণ জয় ছাড়াও বিশেষ এক কারণ এ ম্যাচটি বাংলাদেশের স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তা হল, এ ম্যাচেই অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালের। ৮৪তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্যাপ পান তামিম ইকবাল।

 

৩০ম জয় নিয়ে শাহরিয়ার নাফিসের স্মৃতিচারণ
‘আসলে ওই ম্যাচ নিয়ে বাড়তি কোনো স্মৃতি মনে নেই। ৬৯ রানের একটি ইনিংস খেলেছি, বাংলাদেশের জয়ে অবদান রেখেছি এতটুকুই। তবে হ্যাঁ তামিমের অভিষেক হয়েছিল ও ম্যাচেই। বেশিক্ষণ ব্যাটিং করতে পারেননি। কিন্তু যতক্ষণই ক্রিজে ছিল নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলেছে। মনে হচ্ছিল না প্রথম খেলছে।’

 

40

 

৪০তম জয়: নায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল
স্মরণীয় কোনো ম্যাচ নয়; তবুও খুব কার্যকরী। ২০০৮ এশিয়া কাপে বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৯৬ রানে হারায় আশরাফুলের ব্যাটে ভর করে। তিনে নেমে আশরাফুল করেছিলেন ১০৯ রান। আর রকিবুল হাসান চারে নেমে করেছিলেন ৮৩। পূর্বে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যেটা হত; বড় দলগুলোর বিপক্ষে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলত, লড়াই করত। কিন্তু পুচকে দলের বিপক্ষে সেই আমেজ থাকত না। আশরাফুল সেবার পাকিস্তানে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বারের মত ওয়ানডেতে ৩০০ রানের পুঁজি এনে দেন। ১২৬ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ১০৯ রান করেন অ্যাশ।

 

৪০ম জয় নিয়ে মোহাম্মদ আশরাফুলের স্মৃতিচারণ
‘পাকিস্তানে এর আগে খেললেও বড় রান পাইনি কোনো সময়। সেদিন একটু দায়িত্ব নিয়ে দেখেশুনে খেলেছি। আমি অধিনায়ক ছিলাম তাই ভাবলাম শেষ পর্যন্ত খেলি। তামিম শুরুটা ভালো করার পর আমি আর রকিবুল বড় জুটি করি। আমি সেঞ্চুরি পেলেও রকিবুল পায়নি। পরে মাশরাফি, রাজ্জাক, মাহমুদউল্লাহরা ভালো বল করে অনেক বড় জয় এনে দেয়। এশিয়া কাপে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়।’

 

50

 

৫০তম জয়: নায়ক তামিম ইকবাল
বাংলাদেশের ৩০তম জয়ের ম্যাচে তামিমের অভিষেক। ৫০তম ম্যাচের নায়ক তামিম। এ জয়টির কথা সবারই মনে আছে। তামিম ইকবাল জিম্বাবুয়েতে ১৫৪ রান করেছিলেন। জিম্বাবুয়ে আগে ব্যাটিং করে বাংলাদেশকে ৩১২ রানের টার্গেট দেয়। জবাবে তামিমের ১৫৪ রানে ভর করে বাংলাদেশ ৪ উইকেট ও ১৩ বল আগে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে। তামিমের ১৩৮ বলে ৭ চার ও ৬ ছক্কার ইনিংসটি এখনও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।

 

৫০ম জয় নিয়ে তামিম ইকবালের স্মৃতিচারণ:
‘আমরা জানতাম না যে ওটা আমাদের ৫০তম জয়ের ম্যাচ ছিল। ম্যাচের পর জেনেছি। পরবর্তীতে সবার আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায়। ৩১২ রান আমরা তাড়া করব ওই টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। একটা জিনিস মনে পড়ছে আমরা শুরুতে সবাই খুব শান্ত ছিলাম, বিশ্বাস ছিল যে আমরা চেজ করতে পারব। এর আগে এত বড় রান চেজ করিনি। আমার কাছে মনে হয় আমাদের বিশ্বাসের কারণে আমরা পেরেছিলাম। আমি ভাগ্যবান যে আমি বড় একটি ইনিংস করতে পেরেছিলাম। ওই ম্যাচটি আমাদের সব খেলোয়াড়রা সব সময় মনে রাখবে। কারণ ওই ম্যাচেই আমরা প্রথম ৩১২ রান চেজ করি।’

 

60

 

৬০তম জয়: নায়ক সাকিব আল হাসান
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের নায়ক সাকিব আল হাসান। কিউইয়ের বিপক্ষে ২০১০ সালে প্রথমবারের মত ওয়ানডে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ সিরিজ নিশ্চিত করে। ম্যাচে সাকিবের পাফরম্যান্স ছিল অভূতপূর্ব। মিরপুরে প্রথমে ব্যাট হাতে ১১৩ বলে ১০৬ রান। ১১ চার ও ১ ছক্কায় সাকিব ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন। পরবর্তীতে বল হাতে ৫৪ রানে ৩ উইকেট। সাকিবের ১৫৭ মিনিট ক্রিজে থেকে এবং ৩ ঘন্টা ফিল্ডিংয়ের ফল পায় বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে সাকিবময় দিনে সিরিজ জয় বাংলাদেশের। শুধু সে ম্যাচেই না শেষ ম্যাচে কিউইদের হারিয়ে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।

 

৬০ম জয় নিয়ে সাকিব আল হাসানের প্রতিক্রিয়া:
‘আমরা গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজে (৩-০) ব্যবধানে সিরিজ জিতেছি। দ্রুততম সময়ে আবারও এ সাফল্য পেলাম। কোনো জয়ই আমাদের জন্য ছোট নয়। নিউজিল্যান্ড ভালো। ওদের বিপক্ষে এ জয় নিশ্চিতভাবেই আমাদের ক্রিকেটে সেরা সাফল্য। পঞ্চাশ পেয়ে দর্শকদের ব্যাট উঠিয়ে অভিবাধন জানাইয়নি। কারণ তখনও জানতাম আমার এ ইনিংসটিকে আরও বড় করতে হবে। কোচ (সিডন্স) বলেছিল পঞ্চাশ পেয়ে ব্যাট না উঠিয়ে সেঞ্চুরি পেয়ে ব্যাট উঠাতে। প্রচন্ড গরম ছিল এজন্য ফিল্ডিংয়ে প্রচন্ড ঘামছিলাম। সবার মধ্যেই বিশ্বাস ছিল রাজ্জাক ভাই, শফিউল, রিয়াদ ভাই(মাহমুদউল্লাহ) ভালো কিছু করবে। রুবেল পুরাতন বলে ভালো বল করেছে।’ (ক্রেডিট- ডেইলি স্টার ২০১০ সাল)

 

70

 

৭০তম জয়: নায়ক সাকিব আল হাসান
২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচেই হার। তৃতীয় ম্যাচ চট্টগ্রামে। জহুর স্টেডিয়ামকে বলা হয় বাংলাদেশের পয়মন্ত ভেন্যু। ওখানে খেললে জয় পায় বাংলাদেশ, ফিরে পায় আত্মবিস্বাস। সেবার তাই হয়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে মাত্র ৬১ রানে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে ৫৮ রানে অলআউটের বদলাও নেয় টাইগাররা। বাংলাদেশের স্পিনারদের ঘূর্ণিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৯ ব্যাটসম্যান ওই ম্যাচে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। এ অ্যাটাকের নেতৃত্বে ছিলেন সাকিব আল হাসান। ৫ ওভারে ১৬ রানে সাকিব একাই নেন ৪ উইকেট। সহজ টার্গেটে বাংলাদেশ। ৮ উইকেট ও ৩০ ওভার হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে হোয়াইট ওয়াশ এড়ায় বাংলাদেশ।

 

৭০ম জয় নিয়ে সাকিব আল হাসানের প্রতিক্রিয়া:
‘আমি সত্যিই ওদেরকে ৫৮ রানের আগে অলআউট করে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু চারটি ওয়াইড হওয়ার কারণ আমরা পারিনি। তবুও বিশ্বকাপে আমাদেরকে যে ৫৮ রানে অলআউট করেছিল তার একটি ‘সুইট’ রিভেঞ্জ এটা। কিছু রান আমরা দিয়েছিলাম কারণ জানমরত ওরা একটু হাতখুলে মারতে গিয়ে আউট হবে। আমরা আমাদের সকল পরিকল্পনায় সফল।’ (ক্রেডিট- ডেইলি স্টার ২০১১ সাল)

 

80

 

৮০তম জয়: নায়ক শামসুর রহমান
ক্যারিয়ারের শামসুর রহমানের দ্বিতীয় ম্যাচ। ব্যাটিংয়ের জন্য যখন ক্রিজে আসেন তখন বাংলাদেশের লক্ষ্য ৩০৮। তাও আবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ম্যাচটি ছিল ফতুল্লায় ২০১৩ সালে। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে। তৃতীয় ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মত কিউইয়দের হোয়াইটওয়াশের হাতছানি। কি দারুণ ব্যাটিংই না করলেন শামসুর রহমান। নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অভিজ্ঞতার পরিচয় দেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। মাত্র ৪ রানের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে পাননি সেঞ্চুরির স্বাদ। সেঞ্চুরিটি পেলে জয়ের আনন্দ ষোলকলা পূর্ণ হত।

 

৮০ম জয় নিয়ে শামসুর রহমানের স্মৃতিচারণ:
‘ওই ম্যাচটিতে আমাদের সামনে অনেক বড় টার্গেট ছিল। আমার শুরু থেকেই পরিকল্পনা ছিল যদি ৩০ ওভার পর্যন্ত খেলতে পারি তাহলে রান তাড়া করা সম্ভব হবে। সেভাবেই ব্যাটিং করে যেতে থাকি। মুমিনুল, মুশফিক, জিয়া আউট হয়ে গেলেও আমি টিকে ছিলাম। নাঈমের সঙ্গে একটা বড় রানের জুটি হয়েছিল। আমি একটা বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছিলাম। এরপর জয়ের জন্য যা দরকার ছিল নাসির ও সোহাগ গাজী করেছিল। নিউজিল্যান্ডকে সেবার দ্বিতীয়বারের মত হোয়াইটশ করেছিলাম আমরা। খুব বড় একটা জয় ছিল আমাদের জন্য।’

 

90

 

৯০তম জয়: নায়ক তামিম ইকবাল
বিশ্বকাপ থেকে মাত্রই ফিরে এসেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে দুই একটা ম্যাচে খারাপ করায় তামিম ইকবাল কম কথা শুনেননি। এক প্রকার মানসিক যন্ত্রণায় দিন গেছে তামিম ইকবালের। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮৯তম জয়ের ম্যাচে তামিম হাঁকান সেঞ্চুরি। এরপর ৯০তম ম্যাচে তামিমের ব্যাটে থেকে আসে আরেকটি সেঞ্চুরি। দুই সেঞ্চুরিতে নিন্দুকের মুখ বন্ধ। ১১৬ রানের ইনিংস খেলে তামিম দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ২৪০ রানের টার্গেটের অর্ধেকের একটু কমই করেন ড্যাশিং তামিম। ১৭ চার ও ১ ছক্কায় তার ইনিংসটি ছিল এক কথায় অসারধারণ। এ জয়ের উপর ভর করে প্রথমবারের মত বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ।

 

৯০ম জয় নিয়ে তামিম ইকবালের স্মৃতিচারণ
‘আমার কাছে আমার প্রতিটি রান, প্রতিটি হাফসেঞ্চুরি গুরুত্বপূর্ণ। ১, ২, ৫, ১০ রান যেটাই করি না কেন সবগুলো আমার কাছে সমান। ১টা রান করতে অনেক কষ্ট করা লাগে। প্রতিটি রানই আমি আমার দেশের জন্য করছি এর থেকে বড় পাওয়া কি থাকতে পারে। সেঞ্চুরিগুলো আলাদাভাবে স্পেশাল থাকেই। আমার জন্য সব সেঞ্চুরি সমান। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিটি আমাকে বাড়তি আনন্দ দিয়েছিল। দ্বিতীয় সেঞ্চুরির কারণ তো প্রথমবারের মত সিরিজই জিতলাম। অবশ্যই ভালো লেগেছিল।’

 

100

 

১০০তম জয়: নায়ক তামিম ইকবাল
৫০ ও ১০০তম জয়ের নায়ক তামিম ইকবাল। কাকতলীয়ভাবে এটাও সত্য যে তামিমের চাচা আকরাম খানের হাত ধরেই বাংলাদেশ প্রথম জয় পেয়েছিল। বলাবাহুল্য ক্রিকেটে খান পরিবারের অবদান অনেকটাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিদ্যমান। শততম জয়ের দিন আবারও হাসল তামিমের ব্যাট। ১১৮ রানের ইনিংস খেলে আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পার্থক্য একাই বুঝিয়েছেন দেশসেরা ওপেনার। এ ইনিংস খেলার পথে তামিম বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ওয়ানডে সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ড গড়েছেন।

 

১০০ জয় নিয়ে তামিম ইকবালের স্মৃতিচারণ
‘আমার জন্য প্রতিটি সেঞ্চুরি স্পেশাল। কার বিপক্ষে করছি এটা বড় কথা নয়। সেঞ্চুরি তো সেঞ্চুরি। এটা আমার কাছে স্পেশাল কিছু। আর এটা আজকের মত খেলা যেটা সিরিজ নির্ধারণী একই সঙ্গে বাংলাদেশের শততম জয়ের ম্যাচ। আমি কোনো এক’শকেই ছোট করে দেখি না। প্রতিটি সেঞ্চুরি আমার জন্য স্পেশাল।’

 

 

 

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম /   ০২-১০-২০১৬ ইং/মোঃ হাছিব

 

Tags: