মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণামতে পুলিশ বিভাগে ৩৪ হাজার লোক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন ৫০ হাজার পদ সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীকে আরো যুগোপযোগী করবেন। সক্ষমতা বাড়াবেন, জনবল বৃদ্ধি করবেন। সেই ঘোষণামতে ইতিমধ্যে ৩৪ হাজার পদ সৃজন করা হয়েছে। এসব পদে পুলিশ নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে এবং তা শেষের দিকে।’
জঙ্গি নির্মূলে সিটি ইউনিটকে আরো শক্তিশালী করার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি নির্মূল করার জন্য একটি সিটি ইউনিট (অ্যান্টি টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট) গড়েছি। সারাবিশ্বে এই ধরনের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট রয়েছে। কোনো কোনো দেশে এই ইউনিট বেশ শক্তিশালী। আমরাও এটাকে খুব শক্তিশালী ইউনিট করতে চাই।
‘বিশ্বে সন্ত্রাস এখন যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বাংলাদেশেও এর তৎপরতা রয়েছে। কাজেই এ ধরনের ইউনিটের মাধ্যমে আমরাও সন্ত্রাসবাদ দমনে কাজ করছি। তাদের (সন্ত্রাসীদের) নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এই ইউনিটকে আরো শক্তিশালী করব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ডিভিশন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘মন্ত্রণালয় ডিভিশনের ব্যাপারে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছেন। আমরা মনে করছি যে কোনো সময় এটার অর্ডার পেয়ে যাব। তবেই আমরা প্রক্রিয়া শুরু করে দেব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, গাজীপুর ও রংপুরে মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠনে মন্ত্রিসভার অনুমোদন হয়ে গেছে। যে কোনোদিন জাতীয় সংসদে বিল আকারে আসবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) মহিলা সৈনিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। ইতিমধ্যে বিজিবিতে ২০০ মহিলা সৈনিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিজিবির একাধিক সাংগঠনিক কাঠামো তথা ব্যাটালিয়ন সৃজন করা হয়েছে। তাদের চাহিদা মতো সবধরনের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তাদের কল্যাণের করা হয়েছে সীমান্ত ব্যাংক।
প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার পরও সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ হচ্ছে না কেন- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্ত হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ কাজ করছে। সীমান্তে একটি লোক মারা যাক তা আমরা চাই না। সীমান্ত হত্যার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিনিয়ত আমাদের প্রতিবাদ হচ্ছে। কিলিংগুলো যখন হয় তাৎক্ষণিক ফ্ল্যাগ মিটিং ও সরাসরি যোগাযোগ হচ্ছে।’
‘মাঝে মাঝে অতি উৎসাহিত বিএসএফ কিংবা আমাদের পক্ষ থেকে এ ধরনের আচরণ হয় তা আমরা অস্বীকার করতে পারছি না। এগুলো কমিয়ে আনার জন্য দুই দেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। খুবই শিগগিরই আমরা এগুলোকে কমিয়ে আনার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে তিনি জনগণের ভোগান্তি কমাতে ই-পাসপোর্ট করার কথা জানান।
তিনি বলেন, ঢাকায় আরও চারটি পাসপোর্ট অফিস স্থাপনের প্রস্তাব রয়েছে। ইতোমধ্যে সচিবালয়ে একটি অফিস হচ্ছে। ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের জন্য প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। ই-পাসপোর্ট করা হবে। বিদেশে কর্মরত ১ কোটি ৫১ লাখ বাংলাদেশিকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেওয়া হয়েছে।
একজন প্রবাসীও এমআরপির অভাবে দেশে ফেরত আসেননি বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
দেশে মাদকের বিস্তার রোধে সামাজিক আন্দোলন তৈরির উপর জোর দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা মাদকের বিস্তার রোধে আইন প্রয়োগ করছি। গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিচ্ছি। কিন্তু মাদক প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন। যেভাবে তামাকের ক্ষেত্রে সামাজিক আন্দোলন কাজ করেছে।’
মাদকের বিস্তাররোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফের সভাপতি শ্যামল সরকার। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা এ কে এম শামীম চৌধুরী এবং বিএসআরএফের সদস্যরা।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম / ০৪-১০-২০১৬ ইং/মোঃ হাছিব