বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম সেরা খোলোয়াড়। অথচ তার কাছেই নেই মহাদেশীয় বা বিশ্ব শিরোপা। লিওনেল মেসির সামনে এবার সেই সুযোগ। সুযোগ চিলিকে আজ বাংলাদেশ সময় মাঝ রাতের খেলায় হারানোর। সেই সাথে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতে নিজেকে অন্য উচ্চতায় তুলে নেওয়ার।
গত ২২ বছর কেটে গেছে একে একে। ২২ বছর বড় দীর্ঘ সময়। এই সময়ের মধ্যে কোনো বড় শিরোপা জেতেনি আর্জেন্টিনা দল। মেসির কথায় তাই মনে হতে বাধ্য, এই শিরোপা জিততে না পারলে তাদের জীবনটাই বৃথা! মেসি বলে দিয়েছেন, দল শিরোপা জিততে মরিয়া। স্বাগতিক চিলির সাথে সান্তিয়াগোর ফাইনাল লড়াইটা তাই অন্যরকম প্রেরণা মেসিদের জন্য।
১৯১৬ সালে শুরু কোপা আমেরিকা। তারপর কত আসর গেলো আসলো। চিলি কখনো কোপা আমেরিকা জেতেনি। আর্জেন্টিনা জিতেছে ১৪ বার। আর একবার জিতলেই রেকর্ড। রেকর্ড মানে উরুগুয়ের মতো তাদেরও হবে ১৫বার লাতিন আমেরিকার মহাদেশীয় শিরোপা জয়ের গৌরব। বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হারার দুঃখটা এখনো ভুলতে পারেনি। এক বছরের মধ্যে আরেকটি বড় দুঃখের মধ্যে পড়তে নারাজ আর্জেন্টিনা।
এই টুর্নামেন্টে এর মধ্যে তিন গোল করেছেন সার্জিও আগুয়েরো। ফাইনালের কোনো চাপ তাদের দলের মাঝে নেই বলে বিশ্বাস তার। এখন তার ও দলের চোখ কেবল শিরোপায়। আগুয়েরোর ভাষায়, “সত্যি কথা হলো আমরা অনেক দিন কিছু জিতি না। আমাদের অনেক খেলোয়াড় আছে যাদের শিরোপা জেতার অভিজ্ঞতা আছে। তাই চাপ কোনো সমস্যা নয়। দল হিসেবে আমাদের একটা শিরোপা জিততে হবে। তা থেকে মাত্র এক ধাপ দুরে আমরা।”
আর্জেন্টিনার কোচ গেরার্দো মার্তিনোর চোখে এবারের কোপা জেতা তার দলের জন্য এক ধরনের বাধ্যবাধকতা। “এই দলটি যেভাবে খেলে তাতে কখনো কখনো আমার এমন লাগে যে জেতাটা তাদের জন্য বাধ্যবাধকতা।” কোচের এই কথা নিশ্চিতভাবে আরো উজ্জীবীত করবে দলকে। কিন্তু তিনি চান আবেগ ভুলে মাঠে নিজেদের উজাড় করে দিক খেলোয়াড়রা। তার ভাষায়, “ফাইনালে আবেগ একটি ব্যাপার থাকে। তবে আমাদের খেলোয়াড়দের তা উপেক্ষা করতে হবে। আমরা আমাদের স্বাভাবিক কাজটা করতে পারলেই শিরোপা জিততে পারবো।”
কোপা আমেরিকায় এর আগে আর্জেন্টিনা ও চিলি ২৪বার মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু একবারও জিততে পারেনি চিলি। না আছে তাদের কোনো শিরোপা জেতার অভিজ্ঞতা। সামনে আর্জেন্টিনা। দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। দলে আছেন মেসি, আগুয়েরো, দি মারিয়া, পাস্তোরে, হিগুয়াইনদের মতো খেলোয়াড়। এত অস্ত্র যা্দের ভাঁড়ারে তাদের কিভাবে সামলাবে চিলি! তাদেরও অবশ্য বড় নাম আছে। এটা চিলির সোনালি প্রজন্ম। আছেন আরতুরো ভিদাল, আলেক্সিস সানচেজ, ক্লদিও ব্রাভো। তাদের সবার এক মত এক পণ, হয় মারো নয় মরো। জান বাজি রাখতে প্রস্তুত চিলি।
তাদের কোচ হোর্হে সামপাওলিও একজন আর্জেন্টাইন। তার দলের খেলায়ও আক্রমণের খুব প্রভাব। তিনি বলেছেন, “আমরা খেলায় আধিপত্য করার চেষ্টা করবো। আগের ম্যাচগুলোর মতোই প্রস্তুতি আমাদের। প্রতিপক্ষ নিয়ে কিছু ধারনার সাথেই মাঠে নামছি আমরা। আমাদের খেলার স্টাইল বদলাবে না।”
কিন্তু চিলির জন্য সবচেয়ে বড় ভয় অন্য জায়গায়। এক মেসি। দুই আর্জেন্টিনা। ফাইনালের আগে যে এত বড় প্রতিপক্ষের মুখোমুখিই হতে হয়নি তাদের!