muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

খেলার খবর

চালকের আসনে থেকেও ম্যাচটা হেরে গেল বাংলাদেশ

ক্রীড়াডেস্কঃ

 

 

বের হওয়ার সময় ইমরুল কি একটু খোঁড়ালেন? খোঁড়ানোরও কথা। পেশিতে বেমক্কা টান পড়ার পর আরও এক ঘণ্টার বেশি সময় ব্যাটিং করে গেলেন। ওপেনার হিসেবে নেমেছিলেন। ৪৫তম ওভারে গিয়ে আউট হলেন। নামের পাশে ১১৯ বলে ১১২ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। ১১টি চার, দুই ছক্কা। ইমরুলের মুখে হাসি নেই। মুখটা বিষাদের ছায়ায় ঢাকা। সেই বিষাদে আড়ালে চলে গেছে, না হলে তীব্রতম শারীরিক যন্ত্রণাটাও কি কম? ইমরুল অবশ্য বলবেন, শরীর? সব যন্ত্রণা তো মনে। কী লাভ হলো এত পরিশ্রমের!
৫২ বলে ৩৯ রান দরকার। হাতে ৬ উইকেট। সেটাও বড় কথা, উইকেটে থাকা দুই ব্যাটসম্যান যেভাবে ব্যাটিং করছেন, মনে হচ্ছে ব্যাটিং করা পৃথিবীর সহজতম কাজ। জ্বি, সেখান থেকেই বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরে গেল ২১ রানে। ইংল্যান্ডের ৩০৯-এর জবাবে বাংলাদেশ অলআউট ২৮৮ রানে। একে ‘ক্রিকেটের মহান অনিশ্চয়তা’ বলবেন? নাকি বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতা?
৯ রানের মধ্যে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলল ৫ উইকেট। ৪ উইকেটে ২৭১ থেকে মুহূর্তেই স্কোর হয়ে গেল ৯ উইকেটে ২৮০। জয় তখনো ৩০ রান দূরে। এটাই পার্থক্য। হাতে উইকেট থাকলে ৩৯ রান মনে হয়, এই তো পাশের বাড়ি। আর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাসকিন যখন খেলতে নামলেন, ৩০ রান মনে হচ্ছিল মঙ্গলগ্রহের দূরত্ব। অথচ ৩৯ থেকে ৩০ মাত্র ৯ রানের ব্যবধান। এর মধ্যেই ঘটে গেল এত কিছু। মুহূর্তেই বদলে গেল রং, সব সমীকরণ।
এই ‘৯ রান’ বাংলাদেশের ক্রিকেটের আরেক চির-আক্ষেপ হয়ে থাকবে। মুলতান ও ২০১২ এশিয়া কাপ ফাইনালের পাশাপাশি! এই ৯ রানের ভেতরেই তো যাবতীয় সর্বনাশ! বাংলাদেশ ম্যাচটা ২১ রানে হেরেছে সেটাই হয়তো মনে রাখবে সবাই। কিন্তু আজ জয়োৎসবের প্রস্তুতি নিতে থাকা প্রতিটি মানুষ মনে রাখবে সেই ৯ রানের কথা।
আর ইমরুল কায়েস? তিনি মনে রাখবেন কীভাবে?
দেখেছেন, ম্যাচ রিপোর্টের তৃতীয় প্যারায় এসে আসছে ইমরুলের রান। নীরবে রান করে যান বলে তারকা খ্যাতি এখনো জোটেনি। অত গ্ল্যামার যে নেই। ব্যাটিংয়ের ধরন যে অনেকটাই পাল্টে ফেলেছেন, এটা যেন অনেকেই মাত্র কদিন আগে আবিষ্কার করল। আজ সেই ইমরুল ১১২ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেললেন। সাড়ে ছয় বছর পর ওয়ানডে সেঞ্চুরি। আজ তাঁর নায়ক হওয়ার কথা। কিন্তু কেউ তো মনেই রাখবে না এই সেঞ্চুরি। ইমরুল সতীর্থদের বলতেই পারেন, ‘এমনিতেই আলোতে আসি না। তোরা তো পণই করেছিস, আসতেই দিবি না।’
এমনিতে অবশ্য মাঠেও ইমরুলকে আড়ালে পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন সাকিব। কখনো কখনো দুর্বোধ্য চরিত্রের হয়ে ওঠা উইকেটেও কী সাবলীল ব্যাটিংটাই না করলেন! ৫৫ বলে ৭৯, ১০টি চার, এক ছক্কা। ইমরুলকের অবদানকে একটুও খাটো না করে বলা যায়, সাকিবই বাংলাদেশ আর জয়ের মাঝখানে অনিশ্চয়তার অস্বচ্ছতাকে মুছে দিচ্ছিলেন। এনে দিলেন নিশ্বাস দূরত্বেও। সেই সাকিবই আবার সেটি দূরতম গ্রহে নিয়ে গেলেন। যে ‘৯ রানের আক্ষেপগাথা’ হয়ে উঠছে এই ম্যাচ রিপোর্ট, তার ধসের শুরুটা তো সাকিবের বিদায়ের পরপরই।

 

 

 

 

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম /      ০৭-১০-২০১৬ ইং/মোঃ হাছিব

Tags: