muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

নন-ইউরিয়া সার আমদানিতে অনিয়মের অভিযোগ, মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা

নন-ইউরিয়া সার আমদানিতে অনিয়মের অভিযোগ, মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বেসরকারি খাতে সার আমদানির ক্ষেত্রে এক ব্যক্তির একাধিক কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই মন্ত্রণালয় সার আমদানির কার্যাদেশ দিয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় এই বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এ নিয়ে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয় গণমাধ্যমে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে।

প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গত ১১ সেপ্টেম্বর একটি পোস্ট দেন।

তিনি বলেন, ‘সরকারি অর্থ লোপাটের এ ধরনের অভিনব উদ্যোগ আমি আগে দেখিনি। এ যেন আয়োজন করে রাষ্ট্রের টাকা লুটপাট। ঘটনাটি ঘটেছে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা, কৃষি মন্ত্রণালয়। বেসরকারি খাতের মাধ্যমে সার আমদানি করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা যোগসাজশে, সম্প্রতি সার আমদানির জন্য আহ্বান করা দরপত্রের বিপরীতে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই নজিরবিহীন অনিয়মের মাধ্যমে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। সার আমদানি সংক্রান্ত পরিপত্র অনুযায়ী প্রাপ্ত দরের মধ্যে সর্বনিম্ন দরের ক্রমানুসারে কার্যাদেশ প্রদান করার বিধান রয়েছে। কিন্তু তা অমান্য করে মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে দরপত্রের প্রাপ্ত দরের বাইরে ‘নেগোসিয়েশন’ এর মাধ্যমে কার্যাদেশ প্রদান করে।

জুলকারনাইন সায়ের দাবি করেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই ঘটনা নজিরবিহীন। যেহেতু কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, এবং তিনি মন্ত্রণালয়ের কাজের জন্য সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের ওপর নির্ভর করে থাকেন। উপদেষ্টার অগোচরেই এই অপকর্ম সংঘটিত হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় ঘনিষ্ঠরা জানান।

পরের দিন আরও একটি পোস্টে সায়ের উল্লেখ করেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল এই পোস্টের পর কৃষি সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে তথ্যের সূত্র খুঁজতে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করেছেন। তিনি অকথ্য ভাষায় সকল সাংবাদিকদের গালিগালাজ করেন এবং বলেন ‘এরা সবাই টাকা খেয়ে আমার পেছনে লেগেছে’।

কৃষি মন্ত্রণালয় এখনো বিগত সরকারের আমলাদের নেতৃত্বে চলছে বলে দাবি করে সায়ের বলেন, এই মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা আমলাদের পূর্বের অভিজ্ঞতা হলো- কৃষি সচিব ড. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, যিনি বঙ্গবন্ধু জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন, অতিরিক্ত সচিব আহমেদ ফয়সাল ইমাম, যিনি সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের একান্ত সচিব ছিলেন, যুগ্ম সচিব খোরশেদ আলম যিনি ভৈরবের ইউএনও ছিলেন এবং উপসচিব মনিরুজ্জামান, সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের একান্ত সচিব ছিলেন।

এসব কর্মকর্তার যোগসাজশে এক ব্যক্তিকে নন-ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যাপক কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে সায়েরের ফেসবুক পোস্ট আমলে নিয়ে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে একটি ব্যাখ্যা পাঠিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। যেখানে ‘সার আমদানিতে নজিরবিহীন দুর্নীতির অভিযোগ’ অস্বীকার করা হয়। কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, সরকার যে প্রক্রিয়ায় কার্যাদেশ প্রদান করেছে তাতে করে প্রতিটি কার্যাদেশের বিপরীতে টনপ্রতি ২০-১৫০ ডলার পর্যন্ত সরকারের ব্যয় কমিয়ে আনতে পেরেছে। আমদানি নিয়ে যে অপপ্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও দৈনিক পত্রিকায় ‘কৃষি মন্ত্রণালয়ে সরকারি অর্থ লোপাটের অভিনব উদ্যোগ’ বা ‘সার আমদানিতে নজিরবিহীন দুর্নীতির অভিযোগ’ প্রভৃতি শিরোনামে প্রকাশিত পোস্ট/ প্রতিবেদনগুলোর প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর মতামত/সংবাদের বিষয়বস্তু ভিত্তিহীন, মনগড়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসত্য তথ্য সম্বলিত। প্রকাশিত পোস্ট/ প্রতিবেদনগুলো ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার বলে মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে এবং মন্ত্রণালয় প্রকাশিত পোস্ট/প্রতিবেদনগুলোর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

এ পদ্ধতি অনুসরণ করে নন-ইউরিয়া সারের আমদানি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ পদ্ধতিতে প্রতি ধাপের টেন্ডারে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট পরিমাণ (কম বেশি ৩০,০০০ মে. টন) সারের জন্য দরপ্রস্তাব দাখিল করতে হয়। সরকারের সারভিত্তিক আমদানি চাহিদা এ সিলিং এর চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় এ পদ্ধতি অনুযায়ী দর প্রস্তাবে অংশগ্রহণকারী কর্তৃক একই দেশের একই সারের জন্য দাখিলকৃত দরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন দরের পাশাপাশি দ্বিতীয়, তৃতীয় প্রভৃতি দরদাতা প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষেত্র বিশেষে টনপ্রতি ২০ মার্কিন ডলার থেকে ১৫০ মার্কিন ডলার বা তারও বেশি ব্যবধানে সার সরবরাহের সুযোগ তৈরি হতো। এতে সরকার বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় ঘটত। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর, নির্দিষ্ট সারের জন্য নির্দিষ্ট দেশের আমদানিকারক কর্তৃক প্রদত্ত সমুদয় দরের মধ্যে কেবল সর্বনিম্ন দরে সার সরবরাহে সম্মতি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্রয়াদেশ প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং গত অর্থ বছর থেকেই তা কার্যকর করা হয়। ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হয় এবং আমদানিকারকদেরও অসম লাভের পথ সংকুচিত হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই সাড়ে ৯ লাখ টন সার আমদানির একটি টেন্ডার আহ্বান করে কৃষি মন্ত্রণালয়। এই টেন্ডারের মাধ্যমে ৫ লাখ ১৫ হাজার টন টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি আমদানির কার্যাদেশ প্রদান করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। বাকি ৪ লাখ ৩৫ হাজার টনের আমদানির জন্য পুনরায় টেন্ডার করা হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র আরও বলছে, এই ৫ লাখ ১৫ হাজার মে টন নন-ইউরিয়া সার আমদানির কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে মোট ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে। এর মধ্যে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন দুটি প্রতিষ্ঠান এবং ওই ব্যক্তির আত্মীয়ের এক প্রতিষ্ঠানের নামেই মোট ২ লাখ ১০ হাজার মে টন সার আমদানির কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এই ব্যক্তিকে যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে সেখানেও বিশেষ সুবিধা দিতে দেখা গেছে।

বড় কার্যাদেশ পাওয়া দুটি প্রতিষ্ঠান হলো– দেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন এবং বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। দুটি কোম্পানির স্বত্বাধিকারী হলেন আমিনুর রশিদ খান, যিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ে মামুন নামে পরিচিত। অন্য একটি কোম্পানি হলো এনআরকে হোল্ডিং, যার স্বত্বাধিকারী নায়েব রশিদ খান। নায়েব রশিদ খান আবার আমিনুর রশিদ খানের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হিসেবে পরিচিত। এই প্রতিষ্ঠানের নামে কার্যাদেশটি আমিনুর রশিদ খানই নিয়েছেন বলে জানা গেছে। ২০২৪ জুলাইয়ে পট পরিবর্তনের পর থেকেই মামুন কৃষি মন্ত্রণালয়ের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সূত্রে জানা গেছে, নির্দিষ্ট দেশ থেকে সার আমদানির জন্য ভিন্ন ভিন্ন দর অনুমোদন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। একই কার্যাদেশে দুটি দেশের জন্য ভিন্ন ভিন্ন দর প্রদান করলেও পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে একসঙ্গে। যে দেশের সারের দাম বেশি সেখান থেকে পরিমাণে কম এনে যে দেশে দাম কম সেখান থেকে বেশি দামের সার আনার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে, যে সুবিধাটা বাকি ১৮ আমদানিকারকের কাউকেই দেওয়া হয়নি। বাকি আমদানিকারকদের অবশ্য নিয়ম অনুযায়ী একটি লটের বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট দামে একক দেশের অনুকূলে সার আমদানির কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দেশ ট্রেডিং কর্পোরেশনের নামে একটি কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে ৩০ হাজার মে টন টিএসপি সার আমদানির জন্য। এই ৩০ হাজার টনের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে দুটি দেশের দর অনুমোদন করা হয়েছে। মরক্কো থেকে ৬৯৪ মার্কিন ডলার এবং লেবানন থেকে ৬৮৮ মার্কিন ডলার। কিন্তু কোন দেশ থেকে কতটুকু আমদানি করবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। এই ধরনের কার্যাদেশ প্রদানের কোন সুযোগ নেই বলেও জানা গেছে।

একইভাবে বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের নামে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির একটি কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সার একইসঙ্গে দুটি দেশ থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ৮৭৪ মার্কিন ডলারে মিশর থেকে এবং ৮৪৮ ডলারে চীন থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

দেশের সব খাতে আওয়ামী লীগ আমলে তৈরি হওয়া সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে কাজ করতে দেখা গেছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ও এই ধারাবাহিকতায় সার আমদানিতে সিন্ডিকেট ভাঙার কথা বললেও এক ব্যক্তিকে যে পরিমাণ সার আমদানির কার্যাদেশ দিয়েছে তাতে নতুন করে সিন্ডিকেট তৈরির অভিযোগ উঠেছে। অথচ ২ লাখ ১০ হাজার মে টন সার আমদানির যে কার্যাদেশ মামুনের অনুকূলে দেওয়া হয়েছে তা আমদানির সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে যদি প্রতিষ্ঠানটি সার আমদানি করতে না পারে তাহলে আসন্ন পিক সিজনে সারের ঘাটতি তৈরিতে এর প্রভাব পড়বে বলে শঙ্কা রয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং সেলের একাধিক কর্মকর্তা মামুনকে বড় পরিসরে সার আমদানির কার্যাদেশ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন। উল্লেখ্য, বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল শুধু নন-ইউরিয়া নয়, ইউরিয়া সার পরিবহনের জন্যও বিসিআইসির তালিকাভুক্ত ঠিকাদার ছিল। ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পরিবহন ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে সার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের তদন্তে সার আত্মসাৎ-এ যে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের নাম আসে তার মধ্যে একটি ছিল আমিনুর রশিদ খান মামুনের বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের ভর্তুকির আওতায় বেসরকারি আমদানিকারকদের মাধ্যমে ২ লাখ মে. টন টিএসপি, ৫ লাখ মে. টন ডিএপি, ২ লাখ ৫০ লাখ মে. টন এমওপি এবং শূন্য দশমিক ২০ লাখ মে. টন এমএপি সার সংগ্রহের জন্য প্রথম টেন্ডার আহ্বান করে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর বিপরীতে ৪৯টি প্রতিষ্ঠান দর প্রস্তাবে অংশ নেয়। কিন্তু যারা এই দর প্রস্তাবে অংশ নেন তাদের সর্বনিম্ন দর এখানে গ্রহণ করেনি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় অংশগ্রহণকারীদের দেশভিত্তিক এক দর প্রস্তাব করে। এই প্রস্তাবে রাজি হতে আমদানিকারকদের মৌখিকভাবে অনুরোধ করে।

এই অনুরোধে যারা যারা কৃষি মন্ত্রণালয়ের দর প্রস্তাবে রাজি হয় তারা সম্মতিপত্রের চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়কে। এই সম্মতিপত্রেও ভুল দর উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠায় বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছিল, নির্দিষ্ট দেশভিত্তিক নির্ধারিত দর উল্লেখ করে এই সম্মতিপত্র দেওয়ার কথা। তবে বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল টিএসপি আমদানির জন্য ৭০৪ ডলার দাম উল্লেখ সব অরিজিনের জন্য (দেশভিত্তিক) চিঠি দেয়। অথচ ৭০৪ ডলার দর নির্ধারণ করা ছিল শুধু তিউনেশিয়ার জন্য। মরক্কোর জন্য ছিল ৬৯৪ ডলার, লেবানন ও মিশরের জন্য ৬৮৮ ডলার করে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল কৃষি মন্ত্রণালয়। অথচ বাল্ক ট্রেড যে টিএসপি আমদানির দুটি কার্যাদেশ পেয়েছে সেগুলো মরক্কো এবং লেবানন থেকে আমদানির জন্য। আবার প্রতিষ্ঠানটি এই সম্মতিপত্রের সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী কোন ম্যানুফ্যাকচার সার্টিফিকেট সংযুক্ত করেনি।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পুনরায় এই প্রতিষ্ঠানকে নতুন সম্মতিপত্র দেওয়ার জন্য সুযোগ দেয়। অথচ অনেক আমদানিকারক ঠিকঠাক সম্মতিপত্র দিয়েও টিএসপি আমদানির কার্যাদেশ পায়নি। আমদানিকারকরা বলছেন, মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার বিশেষ বিবেচনায় এই কাজ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা তাকে কার্যাদেশ দিতে চেয়েছেন তাই সুবিধা দিয়েছেন। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ সার আমদানির জন্য দুটি দেশের মূল্য উল্লেখ করে কার্যাদেশ দেওয়ার কোন নজির নেই।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘নির্দিষ্ট কোনো সারের ক্ষেত্রে একটি দেশের বেলায় সকল আমদানিকারককে কেবল একটি নির্দিষ্ট দরেই সার সরবরাহের আদেশ দেওয়া হয়েছে, ভিন্ন ভিন্ন দরে নয়।‘ মন্ত্রণালয় এই দাবি করলেও বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, দেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন ও এনআরকে গ্লোবালের কার্যাদেশে তা মানা হয়নি।

Tags: