muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

খেলার খবর

পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে অল্প রানে থামিয়ে দেন টাইগ্রেসরা। বাংলাদেশি বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি পাকিস্তানি ব্যাটাররা। নাহিদা-রাবেয়াদের ঘূর্ণিতে দেড়শ রানও করতে পারেনি তারা। বোলারদের গড়ে দেয়া শক্ত ভিতে দাঁড়িয়ে ছড়ি ঘুরিয়েছেন ব্যাটাররাও। বিশেষ করে রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক। তার দুর্দান্ত ফিফটিতে ১১৩ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

দাপুটে জয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল বাংলাদেশ। ২০২২ সালে প্রথমবার উইমেন’স ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ একমাত্র জয়টি পেয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই পাকিস্তানকে পরের বিশ্বকাপে আবার হারালেন নিগার, নাহিদারা।

ম্যাচের প্রথম ওভারে চমৎকার দুটি ডেলিভারিতে পরপর দুই উইকেট নিয়ে সুর বেঁধে দেন মারুফা আক্তার। পরে দারুণ বোলিং করেন অন্যরাও। ফিল্ডিংও হয় বেশ ভালো। ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তান কোনোমতে করতে পারে ১২৯।

বাংলাদেশের হয়ে ছয় জন হাত ঘুরিয়ে অন্তত একটি উইকেট পান সবাই। ৩.৩ ওভারে ৩ মেডেনে স্রেফ ৫ রানে পাকিস্তানের শেষ ৩ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তার।

নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ-সেরার স্বীকৃতি পান পেসার মারুফা। বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তারও নেন ২টি উইকেট, ১৯ রান দিয়ে।

কলম্বোতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৩৮ ওভার ৩ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান করে পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৩ রান করেছেন রামিন শামিম। জবাবে ৩১ ওভার এক বলে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দেখে-শুনে খেলার চেষ্টা করেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ফারজানা হক। ১৭ বল খেলে ২ রান করেছেন তিনি। তার বিদায়ে ৭ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। তিনে নেমে ব্যর্থ শারমিন আক্তার। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০ রান।

৩৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর উইকেটে আসেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। অধিনায়ককে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬২ রান যোগ করেন ঝিলিক। ২৩ রান করে জ্যোতি বিদায় নিলে ভাঙে সেই জুটি।

বাকি কাজটা সুবহানা মোস্তারিকে সঙ্গে নিয়ে সহজেই সেরেছেন ঝিলিক। দারুণ ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে অভিষেকেই করেছেন ফিফটি। সেটাও আবার বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে। সবমিলিয়ে ৭৭ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেছেন তিনি। এ ছাড়া ১৯ বলে অপরাজিত ২৪ রান এসেছে মুস্তারির ব্যাট থেকে।

এর আগে বল হাতে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেন মারুফা। ডানহাতি এই পেসারের সুইং আর গতিতে চোখে রীতিমতো সর্ষে ফুল দেখেছেন পাকিস্তানি ব্যাটাররা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ডাবল স্ট্রাইক করেন মারুফা। পঞ্চম বলে ওমাইমা সোহেলকে বোল্ড করেন। পরের বলেই ফর্মে থাকা সিধরা আমিনের স্টাম্প ভাঙেন এই পেসার। দুই ব্যাটারই ডাক খেয়ে সাজঘরে ফিরেছেন।

২ রানে ২ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মুনিবা আলি ও রামিন শামিম। বড় হতে থাকা এই জুটি ভেঙেছেন নাহিদা আক্তার। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৫ বলে ১৭ রান করেছেন মুনিবা।শামিমকেও ফিরিয়েছেন নাহিদা। এই বাঁহাতি স্পিনারকে ফিরতি ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩৯ বলে ২৩ রান করেছেন শামিম।

দলীয় ফিফটির আগেই ৪ উইকেট হারানো পাকিস্তানের বিপদে আরো বাড়িয়েছেন সিধরা নাওয়াজ। ২০ বলে ১৫ রান করা এই মিডল অর্ডার ব্যাটারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেছেন রাবেয়া।

এরপর লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটাররা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। ফাতিমা সানা-নাটালিয়া পারভেজরা উইকেটে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ফাতিমা ৩৩ বলে ২২ রান করেছেন। শেষদিকে ডায়ানা ২২ বলে অপরাজিত ১৬ রান করলেও দেড়শর আগেই অল আউট হয় তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ৩৮.৩ ওভারে ১২৯ (মুনিবা ১৭, ওমাইমা ০, সিদরা আমিন ০, রামিন ২৩, রিয়াজ ১৩, সিদরা নাওয়াজ ১৫, ফাতিমা ২২, নাতালিয়া ৯, ডায়ানা ১৬*, নাশরা ১, সাদিয়া ৪; মারুফা ৭-০-৩১-২, নিশিতা ৬-০-২৮-১, নাহিদা ৮-১-১৯-২, ফাহিমা ৭-১-৩২-১, রাবেয়া ৭-২-১৩-১, স্বর্ণা ৩.৩-৩-৫-৩)

বাংলাদেশ: ৩১.১ ওভারে ১৩১/৩ (ফারজানা ২, রুবাইয়া ৫৪*, শারমিন ১০, নিগার ২৩, সোবহানা ২৪*; ফাতিমা ৮-১-৩০-১, ডায়ানা ৮-৩-১৪-১, সাদিয়া ৬-০-২১-০, রামিন ৫-০-২৫-১, নাশরা ৩.১-১-২৭-০, ওমাইমা ১-০-৯-০)

ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: মারুফা আক্তার

Tags: