‘ভূমি ব্যবহার ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া চূড়ান্ত করতে চার উপদেষ্টাকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক হয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে-ভূমি, বনভূমি ও অন্যান্য বিশেষ শ্রেণির ভূমির সুরক্ষার ক্ষেত্রে ‘রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০’ এর ৮৩ ধারায় যাই থাকুক না কেন এই আইনের অধীনে সংজ্ঞায়িত সব কৃষি ভূমি সুরক্ষা করতে হবে। কৃষিজমি ছাড়া অন্যান্য জমিও এই আইনের বিধান অনুযায়ী সুরক্ষা করতে হবে। অনুমতি ছাড়া কৃষি ভূমি ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না বা শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না বা এমনভাবে ব্যবহার করা যাবে না যে, কৃষি ভূমির শ্রেণি পরিবর্তিত হয়ে যায়। তবে অকৃষি বা অন্য কোনো শ্রেণির ভূমি কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না।
এছাড়া এ অধ্যাদেশে ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধের জন্য এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং কারাদণ্ডের বিধান রাখা রয়েছে। দ্রুতই এই অধ্যাদেশ কার্যকর করার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে বলেও ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
বৈঠকে ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে কৃষিজমি শুধু উৎপাদনের ক্ষেত্র নয়, এটি আমাদের জীবিকা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির প্রাণ। দেশীয় খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও গ্রামীণ স্থিতিশীলতা সরাসরি কৃষি জমির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন, শিল্পায়ন ও অবকাঠামো সম্প্রসারণের ফলে কৃষিজমি ক্রমাগত কমছে। ফলে আজ কৃষিজমি সুরক্ষা একটি জাতীয় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।
ভূমি উপদেষ্টা আরও বলেন, এই পরিস্থিতিতে কৃষি জমির সুরক্ষা ও ভূমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে ভূমি জোনিং একটি কার্যকর নীতিগত হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশে কৃষিজমি হ্রাস ও অবৈধ বা অনুপযুক্ত ব্যবহারের সমস্যার সমাধানে ভূমি মন্ত্রণালয় ‘ভূমি ব্যবহার ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ করতে যাচ্ছে। এই অধ্যাদেশের লক্ষ্য হলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, কৃষিজমি রক্ষা, পরিকল্পিত ভূমি-জোনিং ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।