বাংলাদেশের জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২১ রান। প্রথম বলেই ২ রান নেন সাকিব। এরপর ওয়াইড দেন আকিল। দ্বিতীয় বল থেকে এক রান নিলে স্ট্রাইক পান রিশাদ। তৃতীয় বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন তিনি। রিশাদ আউট হলে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা কার্যত শেষই হয়ে যায়! শেষ ৩ বলে ১৭ রানের সমীকরণ মেলাতে চেষ্টা করেছেন নাসুম-সাকিব। তবে পারেননি। ১৪ রানের এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চট্টগ্রামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন হোপ। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান করে বাংলাদেশ।
১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও সাইফ হাসান। তবে ইনফর্ম সাইফ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১১ বলে ৫ রান করে হোল্ডারের বলে কিংসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাতে ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তিনে নেমে দারুণ শুরু করেছিলেন লিটন দাস। উইকেটে এসেই রানের গতি বাড়ানোয় মনযোগ দেন। ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ১৭ বলে ২৩ রান।
৪৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর তাওহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন তানজিদ তামিম। হৃদয় উইকেটে থিতু হওয়ার পর গিয়ার পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। তবে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন। সাজঘরে ফেরার আগে ১৪ বলে করেছেন ১২ রান।
সাম্প্রতিক সময়টা ভালো যাচ্ছে না তানজিদ তামিমের। ওয়ানডেতে জায়গা হারালেও টি-টোয়েন্টি তাকে সুযোগ দিচ্ছেন নির্বাচকরা। সেটার প্রতিদান দিলেন এই ওপেনার। ৩৮ বলে ফিফটি করেছেন। কিন্তু ফিফটির পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি ৪৮ বলে করেছেন ৬১ রান।
তামিম ফেরার পরই পথ হারায় বাংলাদেশ। প্রচুর ডট বল খেলে সহজ সমীকরণ কঠিন করেন জাকের আলি। ১৮ বলে ১৭ রান করেন তিনি। শেষদিকে শামিম-রিশাদরা ব্যর্থ হলে আর সমীকরণ মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ।
এর আগে বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ইনিংস ওপেন করেন তানজিম হাসান সাকিব। এই পেসারের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন ব্রেন্ডন কিং। কিন্তু সহজ সেই ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন লিটন দাস। অধিনায়কের এই ভুলের জন্য অবশ্য খুব বেশি মাশুল দিতে হয়নি দলকে। কারণ পরের ওভারেই কিংকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলটি অফ-মিডল স্টাম্পের ওপর ফুলার লেংথে করেছিলেন তাসকিন। সেখানে মিড অফের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ভালো টাইমিং করতে পারেননি কিং। মিড অফে দাঁড়িয়ে থাকা তাওহিদ হৃদয় সহজেই বল তালুবন্দি করেন।
১ রানে প্রথম উইকেট হারানো ক্যারবিয়ানদের হাল ধরেন আলিক আথানজে ও শাই হোপ। বিশেষ করে আথানজে দারুণ ব্যাটিং করেন। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৬ রান তুলা উইন্ডিজকে শেকল ভেঙে এগিয়ে নেন এই তরুণ ওপেনার। তৃতীয় ওভারে চার ও ছক্কায় ১১ রান তোলেন।
পাওয়ার প্লেতে আর কোনো উইকেট তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। ৬ ওভার শেষে এক উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তোলে ক্যারিবিয়ানরা। পাওয়ার প্লে শেষেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন তারা। দুজনেই পেয়েছেন ফিফটির দেখা। ফিফটির পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
৩৩ বলে ৫২ রান করা আথানজেকে ফিরিয়ে ১০৫ রানের জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। এরপরই ধস নামে তাদের ব্যাটিং অর্ডারে। ৫৫ রান করে ফেরেন শাই হোপ। এ ছাড়া শারেফানে রাদারফোর্ড, রভম্যান পাওয়েল কিংবা জেসন হোল্ডারদের কেউই রান পাননি। ফলে শক্ত ভিত পেলেও বড় রান করতে পারেনি উন্ডিজ।
বাংলাদেশের হয়ে ২১ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন মুস্তাফিজ। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট পেয়েছেন রিশাদ ও নাসুম। এক উইকেট পেয়েছেন তাসকিন।