ফেরদৌসী আক্তার (২০) নামে এক তরুণীর প্রেমের টানে সুদুর চীন থেকে ভোলায় ছুটে এসেছেন লুজাও (৩০) নামে এক চীনা যুবক। যা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ভোরে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্লুইসগেট সংলগ্ন বেড়িবাঁধের ভেতরে জিন্নাহ ডাক্তারের পাশের একটি বাড়িতে আসেন ওই চীনা যুবক।
ফেরদৌসী আক্তার একই গ্রামের বাসিন্দা মসজিদের মোয়াজ্জেম মো. আমানুল্লা-বিবি মরিয়ম দম্পতির মেয়ে। তিনি ৬ সন্তানের মধ্যে ৫ নম্বর। অন্যদিকে লুজাও চীনের চেংদু প্রদেশের বাসিন্দা রোশন লুন ও হুয়াং কিয়াং জিয়ান দম্পতির ৪ সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামে একটি অ্যাপসের মাধ্যমে ভোলার ফেরদৌসী ও চীনের লুজাওয়ের পরিচয় হয়। দুজনের মধ্যে পরিচয় ও কথাবার্তার একপর্যায়ে বন্ধুত্ব থেকে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। অবশেষে প্রেমকে পরিণয়ে রূপ দিতে রোববার (১৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে চীনের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন লুজাও। সেখান থেকে ফেরদৌসী ও তার পরিবারের লোকজন তাকে রিসিভ করে সোমবার ভোরে ভোলায় নিজ গ্রামে আনেন।
এ বিষয়ে ফেরদৌসী আক্তার বলেন, এক বছর আগে ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপসের মাধ্যমে আমাদের পরিচয় হয় এবং বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চীনের যুবক লুজাও আমাকে বিয়ে করার জন্য ভোলায় এসেছেন। তিনি বলেছেন মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করবেন এবং আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যাবেন। প্রথমে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও আস্তে-ধীরে তা কেটে গেছে। বিয়ের পর তিনি আমাকে নিয়ে চীনে যাবেন। নিরাপত্তা নিয়ে আমার কোনো শঙ্কা নেই।
ফেরদৌসীর মা মরিয়ম বিবি বলেন, ওই ছেলের সাথে আমার মেয়ের পরিচয় হওয়ার পর সে আমাকে বিষয়টি বলেছে। গতকাল সে বাংলাদেশে এসেছে। বিমানবন্দর থেকে তাকে আমরা রিসিভ করেছি। তার সাথে আমার মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করছি।
চীনা যুবক লুজাও বলেন, আমি আমার ভালোবাসার মানুষের কাছে এসেছি। তাকে বিয়ে করবো। আমি অনেক খুশি'।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সিরাজুল ইসলাম ও মো.হাসান বলেন, আমাদের এই গ্রামে এর আগে এমন ঘটনা ঘটেনি। চীন থেকে ওই ছেলে এসেছে আমাদের গ্রামের মেয়েকে বিয়ে করতে- এটা চাঞ্চল্যকর ঘটনা। তার সম্পর্কে তো আমরা কিছু জানি না, তাছাড়া তার ভাষাও আমরা বুঝি না। আশপাশের লোকজন তাকে দেখার জন্য আসছে।
এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, ওই তরুণ-তরুণী আমাদের কাছে এসেছে। বলেছে- তারা বিয়ে করবে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।