চাকরির বিধিমালা প্রণয়নের আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত হওয়ার পর ঢাকায় চলতে শুরু করেছে মেট্রোরেল।
শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কর্মীরা।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) এমডি ফারুক আহমেদ কর্মীদের সামনে এসে ১৮ ডিসেম্বরের বোর্ড মিটিংয়ে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ান তারা।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ডিএমটিসিএলরর কর্মকর্তা আকরাম হোসেন বলেন, “আমরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি স্থগিত করেছি। ১৮ তারিখে বোর্ড মিটিংয়ে আমাদের দাবি মেনে নেবেন বলে এমডি স্যার অঙ্গীকার করেছেন। তাই আমরা আন্দোলন ১৮ তারিখ পর্যন্ত সাময়িক স্থগিত করেছি।"
রাত ৮টায় মেট্রোরেলের উপ প্রকল্প পরিচালক (গণসংযোগ) মো. আহসান উল্লাহ বলেন, "রাত সোয়া ৮টায় উত্তরা উত্তর থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে।"
২০১৩ সালে ডিএমটিসিএল প্রতিষ্ঠার ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও এর নয় শতাধিক কর্মীর জন্য এখনো স্বতন্ত্র চাকরি বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রো রেলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে উন্মুক্ত নিয়োগে যোগ দেওয়া কর্মীরা দিন-রাত দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু ছুটি, সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি, ওভারটাইম, গ্রুপ ইনস্যুরেন্সসহ নানা সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।
আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে চাকরি বিধি প্রণয়নের কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পরে ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কর্মচারীরা আন্দোলনে নামলে ২০ ফেব্রুয়ারি কর্তৃপক্ষ ২০ মার্চের মধ্যে চাকরি বিধি চূড়ান্ত করার আশ্বাস দেয়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতিও গেল নয় মাসে বাস্তবায়ন হয়নি।
একজন কর্মকর্তা বলেন, গেল ১০ ডিসেম্বর কোম্পানির ব্যবস্থাপনার পরিচালক (এমডি) কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, চাকরি বিধির সব ধারা নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ একমত হলেও ‘বিশেষ বিধান’ সংক্রান্ত একাদশ অধ্যায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ‘বিশেষ বিধানের’ সঙ্গে মেট্রোরেল প্রকল্পসমূহের জনবলকে ডিএমটিসিএলে আত্মীকরণের বিষয় জড়িত, যা কর্মচারীদের দাবি—বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আন্দোলনকারীদের আরেকজন বলেন, “পরিচালনা পর্ষদ বিতর্কিত বিধান বাদ দিতে আগ্রহী হলেও ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষের চাপের কারণেই সার্ভিস রুল প্রকাশ বিলম্বিত হচ্ছে।”
মেট্রোরেলের দৈনন্দিন কয়েক লাখ যাত্রীর ভোগান্তি সৃষ্টি হলেও কর্মচারীরা বলছেন, এই কর্মসূচির সম্পূর্ণ দায় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।