muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

লাইফ স্টাইল

শীতে নানা ব্যথা এবং এর থেকে বাঁচার উপায়

লাইফ স্টাইল ডেস্কঃ

 

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে এখন মূলত গরম ও শীত এই দুই ঋতুরই প্রাধান্য বেশি। গরমকালে বাতের ব্যথা থাকলেও মানুষকে যতটা না কাবু করে তারচেয়ে শীত ঋতুতেই রোগীর ব্যথা-বেদনা বেড়ে যায়। শীতপ্রধান দেশগুলোতেও এজাতীয় সমস্যাই মূলত বেশি। বর্তমানে সারাদেশেই শীতের তীব্রতা প্রকট। আর শীতের এই তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের বাতব্যথার কষ্টও বাড়তে থাকে। তাই শীতে কীভাবে ব্যথা-বেদনা থেকে সুস্থ থাকা যায় এ ব্যাপারে সতর্কভাবে কিছু পরামর্শ নেয়া দরকার।

বয়সজনিত জয়েন্টের সমস্যা
স্বাস্থ্যসচেতনতা, চিকিৎসা সুবিধা, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি পরিবর্তনের ফলে দিনে দিনে মানুষের বয়স বৃদ্ধি পাচ্ছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শারীরিক, মানসিক শক্তি ও দেহকোষের কর্মক্ষমতা বা সামর্থ্য ধীরে ধীরে কমতে থাকে। টিস্যুর এই সামর্থ্যের ক্রমাবনতির হার বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনুপাতে হয়। একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধ যেমন কর্মক্ষম থাকতে পারেন, তেমনি আবার ৫০-৬০ বছর বয়সের ব্যক্তিরা ভুগতে পারেন বিভিন্ন ধরনের বার্ধক্যজনিত সমস্যা ও জয়েন্ট বা মাংসপেশির ব্যথায়, যাকে আমরা সহজ ভাষায় বাত বলে জানি। সাধারণত মহিলারা ৪০ বছর এবং পুরুষরা ৫০ বছর পর বয়সজনিত জয়েন্টের সমস্যায় ভুগে থাকেন। আমাদের দেশের ৫০-ঊর্ধ্ব জনসংখ্যার শতকরা ৬৫ ভাগ লোক ব্যথাজনিত সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে যেসব জয়েন্ট শরীরের ওজন বহন করে ও অতিরিক্ত ব্যবহৃত হয় যেমন- ঘাড়, কোমর, স্কন্ধ বা সোল্ডার জয়েন্ট এবং হাঁটুব্যথার রোগী সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।

নানা রকম বাতের রোগ
বাতের ব্যথার অনেক কারণ রয়েছে, তার মধ্যে ৯০ ভাগ হচ্ছে ‘মেকানিক্যাল সমস্যা’। মেকানিক্যাল সমস্যা বলতে মেরুদণ্ডের মাংসপেশি, লিগামেন্ট মচকানো বা আংশিক ছিঁড়ে যাওয়া, দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক সমস্যা, কশেরুকার অবস্থানের পরিবর্তনকে বোঝায়। অন্যান্য কারণের মধ্যে বয়সজনিত হাঁড় ও জোড়ার ক্ষয় বা বৃদ্ধি, রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস বা গেটেবাত, অস্টিওআথ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস, এনকাইলজিং স্পন্ডাইলোসিস, বার্সাইটিস, টেন্ডিনাইটিস, স্নায়ুবিক রোগ, টিউমার, ক্যান্সার, মাংসপেশির রোগ, শরীরে ইউরিক এসিড বেড়ে গেলে, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, শরীরের অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি। শীতে এসব সমস্যার ব্যথা আরও বেড়ে যায়, রোগী অসুস্থ ও কর্মহীন হয়ে পড়ে।
নানা রোগের মধ্যে ব্যথা বা যন্ত্রণা একটি অস্বস্তি ও কষ্টকর সমস্যা। আল্লাহতাআলা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের জয়েন্ট বা সন্ধি আমাদের স্বাভাবিক চলাচল এবং কর্ম সম্পাদন করে জীবন নির্বাহের জন্য দিয়েছেন। সাধারণত দুই বা দুইয়ের অধিক হাড় বা তরুণাস্থি শরীরের কোনো এক জায়গায় সংযোগ স্থাপনকারী টিস্যুর মাধ্যমে যুক্ত হয়ে একটি অস্থিসন্ধি বা জয়েন্ট তৈরি করে। আর এই সংযোগ স্থাপনকারী টিস্যুগুলো হচ্ছে মাংসপেশি, টেন্ডন, লিগামেন্ট, ক্যাপসুল, ডিস্ক, সাইলোভিয়াল পর্দা বা মেমব্রেন ইত্যাদি। এগুলো জয়েন্টকে শক্তি ও দৃঢ়তা প্রদান করে, জয়েন্টের তল বা সারফেসগুলোকে মসৃণ বা পিচ্ছিল রাখে। এছাড়া মেরুদণ্ডের দুটি হাড়ের মাঝে অবস্থিত ডিস্ক সক এবজরভার হিসেবে কাজ করে হাড়কে ক্ষয়ে যাওয়া রোধ করে। এসব অস্থি বা জয়েন্টগুলোতে প্রধানত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়, প্রদাহজনিত ও অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের কারণে ব্যথা-বেদনা সৃষ্টি করে মানুষের চলাচল কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটায়।

ঘাড় ব্যথায় চিকিৎসা ও পরামর্শ
ঘাড়ের ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। মূলত ঘাড়ের মেরুদণ্ডে যে হাড় ও জয়েন্ট আছে তা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারের ফলে তাতে ক্ষয়জনিত পরিবর্তন ঘটে, তার লিগামেন্টগুলো মোটা ও শক্ত হয়ে যায় এবং দুটি হাড়ের মাঝে যে ডিস্ক থাকে তার উচ্চতা কমে এবং সরু হওয়া শুরু হয়। আবার অনেক সময় হাড়ের মাঝে দূরত্ব কমে পাশে অবস্থিত স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি করে ব্যথার জন্ম দিতে পারে। অনেক সময় স্নায়ুরজ্জু সরু হয়ে যেতে পারে। ফলে ঘাড় ব্যথা ও নড়াচড়া করতে অসুবিধাসহ মাথাব্যথা কিংবা ব্যথা হাতের আঙুল পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। দীর্ঘদিন এই ব্যথা অব্যাহত থাকলে ঘাড়ের মেরুদণ্ডের বিকৃতি বা স্পাইরাল ডিফারমিটি দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যাকে প্রকারভেদে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়। যেমন সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস, সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসথোসিস, সারভাইক্যাল রিব, স্টিফ নেক, সারভাইক্যাল ইনজুরি ইত্যাদি।
লক্ষণ : সাধারণত এসব রোগী ঘাড়ের ব্যথাসহ ঘাড় নড়াচড়া করা এবং হাতে ঝিনঝিন অনুভব করার অসুবিধার কথা বলে। অনেক ক্ষেত্রে হাতে শক্তি কমে যাওয়াসহ হাতের আঙুলের বোধশক্তির তারতম্যও ঘটে। ব্যথা ঘাড় হতে মাথার দিকে উঠতে পারে।
চিকিৎসা : এই রোগের চিকিৎসার উদ্দেশ্য হলো ব্যথা কমানোর পাশাপাশি ঘাড়ের স্বাভাবিক নড়াচড়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে আনা, ঘাড়ের মাংসপেশির শক্তি বৃদ্ধি করা, ঘাড় বা স্পাইনের সঠিক পজিশন বা অবস্থা সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া ও যেসব কারণে পুনরায় ঘাড় ব্যথা হতে পারে সে সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করে সেভাবে চলার চেষ্টা করা।
ব্যথা কমানোর জন্য সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে পদ্ধতিগত ব্যায়াম যেমন, হাত দিয়ে মাথায় বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে ঘাড়ের মাংসপেশি শক্ত করে, দুই কাঁধ একত্রে উপরে ওঠানো, হালকা বালিশ ব্যবহার করা ইত্যাদি। ফিজিওথেরাপিতে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে হিট চিকিৎসা, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, মেনিপুলেশন ও প্রয়োজনে ট্রাকশন দিলে এ রোগের উপকারে আসে। ঘাড়কে অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়া থেকে বিরত ও সাপোর্ট দেয়ার জন্য অনেক ক্ষেত্রে সারভাইক্যাল কলার ব্যবহার, মাথার নিচে হালকা নরম বালিশ ইত্যাদি করা হয়।

কোমর ব্যথা : চিকিৎসা ও পরামর্শ
বার্ধ্যক্যজনিত বয়সে কোমর ব্যথার প্রধান কারণ হচ্ছে কোমরের হাড় ও ইন্টারভার্টিক্যাল ডিস্কের ক্ষয় ও কোমরের মাংসপেশির দুর্বলতা। কোমর ব্যথার রোগগুলোকে লো-ব্যাক পেইন/লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস/প্রোলাপস্ ডিস্ক ইত্যাদি রোগ বলে থাকি। এই রোগের কারণ, প্রক্রিয়া ও চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রায় ঘাড় ব্যথা বা সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের অনুরূপ। তবে রোগীর শরীরের অবস্থান/পোশ্চার সঠিকভাবে রক্ষার গুরুত্ব দিলে অনেক ক্ষেত্রে কোমরের ব্যথা এড়ানো সম্ভব। শক্ত বিছানায় শোয়া, কাত হয়ে বিছানায় শুতে যাওয়া, ওঠা, ভারী জিনিস বহন বা তোলা পরিহার করা, নিয়মিত কোমরের ব্যয়াম করা ও অসমতল জায়গায় চলাচল না করা ইত্যাদি। কোমরের ব্যায়ামের ভেতরে উল্লেখযোগ্য হলো চিত হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে পিঠ দিয়ে বিছানায় চাপ দেয়া, একই অবস্থায় শুয়ে হাঁটু একত্রে এপাশ ওপাশ চাপ দেয়া, একই অবস্থায় শুয়ে এক পা এক পা করে হাঁটু ভাঁজ করে পেটের সঙ্গে চাপ দেয়া ইত্যাদি। কোমরের ব্যথার রোগীরা ব্যথানাশক ওষুদের সঙ্গে সঙ্গে ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ মোতাবেক শর্টওয়েভ, আলট্রাসাউন্ড, আইএফটি, কোমরের ব্যায়াম ও হাইড্রোথেরাপি অর্থাৎ পানিতে সাঁতার কাটলে উপকার পেতে পারেন।

স্কন্ধ অস্থিসন্ধি বা সোল্ডার জয়েন্টে ব্যথা
স্কন্ধ অস্থিসন্ধি একটি জয়েন্ট। বয়স ও ব্যবহারজনিত কারণে এসব জয়েন্টের আশপাশের মাংসপেশি, টেন্ডন, লিগামেন্ট, ক্যাপসুল ও বার্সাতে প্রদাহ হতে পারে। রোগী জয়েন্ট নড়াচড়া করতে ব্যথা অনুভব করে। ফলে জয়েন্ট নাড়াচাড়া করা থেকে বিরত থাকেন এবং জয়েন্টটি আস্তে আস্তে শক্ত হয়ে জমতে শুরু করে। এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময় জয়েন্টের নড়াচড়া করার ক্ষমতা হ্রাস হয় এবং স্টিফনেস ডেভেলপ করে। ডায়াবেটিস, ঘাড়ের ব্যথা ও বুকের সার্জারির কারনেও এ জোড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসা : এই রোগের চিকিত্সায় ব্যথা নিবারক ওষুদের সঙ্গে সঙ্গে কার্যকরী ও প্রধান চিকিৎসা ব্যবস্থা হচ্ছে ফিজিওথেরাপি। ফিজিওথেরাপিতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল যন্ত্রপাতি যেমন : শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, আইএফটি ব্যবহার করে ব্যথা কমানো যায়। ইলেক্ট্রোথেরাপির সঙ্গে সঙ্গে জয়েন্টের সচলতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম যেমন : পেন্ডুলার এক্সারসাইজ, মেইনপুলেশন, কৌশলগত ব্যায়াম করা উচিৎ। এছাড়া ফ্রোজেন সোল্ডার রোগীদের নিয়মিত সাঁতার কাটা ও ব্যবহারিক ব্যায়াম যেমন : দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে হাত আস্তে আস্তে ওপরে ওঠানো, ওপরে ঝুলানো পুলির মাধ্যমে দড়ির সাহায্যে হাত ওপরে-নিচে করা, তোয়ালে দিয়ে পিঠ মোছা ইত্যাদি করা উচিত। যে জোড়ার ব্যথা সে দিকে কাত হয়ে না শোয়া এবং জোড়ায় গরম সেঁক দেয়া ইত্যাদি উপদেশ মেনে চলতে হয়। অনেক সময় সোল্ডার জয়েন্টে ইনজেকশন প্রয়োগ করলেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

হাঁটুর ব্যথা : চিকিৎসা ও করণীয়
হাঁটু মানুষের একটি বড় জয়েন্ট। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়সজনিত ক্ষয়ের জন্য হাঁটুর ভেতরের লিগামেন্ট, মিনিসকাস এবং হাড়ের প্রদাহজনিত পরিবর্তনের ফলে হাঁটুতে ব্যথার সৃষ্টি হয়ে চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি করে। এই রোগ সাধারণত অস্টিওআর্থ্রাইটিস বলে বেশি পরিচিত। সাধারণতক আঘাত, শারীরিক ওজন বৃদ্ধি, হরমোনজনিত সমস্যা এই রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ।

চিকিৎসা: ব্যথা নিবারক ওষুধ দীর্ঘদিন গ্রহণ করতে হয় বলে তাতে নানান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই এই রোগের উৎকৃষ্ট চিকিৎসাব্যবস্থা হচ্ছে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পদ্ধতি। ফিজিওথেরাপিতে শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি, আলট্রাসাউন্ড থেরাপি, কিংবা আইস থেরাপি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। নিয়মিত সঠিকভাবে হাঁটুর চারপাশের মাংসপেশির শক্তিবর্ধন জাতীয় ব্যয়াম দেয়া হয়ে থাকে, যাতে জয়েন্টের রেঞ্জ এবং মাংসপেশির শক্তি বৃদ্ধি পায়। তবে কোনোক্রমেই এমন কোনো কাজ বা ব্যায়াম করা ঠিক হবে না যাতে ব্যথা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া রোগীকে কিছু পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। যেমন : হাঁটু অতিরিক্ত ভাঁজ না করা, শরীরের ওজন স্বাভাবিক রাখা কিংবা অতিরিক্ত ওজন কমানো, হাঁটু কোনো অবস্থায় পুরোপুরি ভাঁজ করা ঠিক হবে না। এসব ক্ষেত্রে নামাজ পড়ার সময় চেয়ার ও বাথরুম ব্যবহার করার সময় কমোড ব্যবহার বাঞ্ছনীয়।
তাই শীতে বাতের ব্যথা নিয়ে কষ্ট না পেয়ে যতদ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নিতে হবে এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যারা বাতের ব্যথায় ভুগছেন তারা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিত্সা ও পরামর্শে ভালো থাকতে পারেন। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন অত্যন্ত আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। চিকিৎসক আপনার রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিলে আপনি অবশ্যই কষ্ট থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।

 

 

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম /   ২০-১০-২০১৬ ইং/মোঃ হাছিব

Tags: