muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

খ্যাতিমান উদ্যোক্তা দেশবরেণ্য শিল্পপতি জহুরুল ইসলাম

মো. আরিফুল ইসলাম,বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা।।

এক সময়ের বাংলাদেশের সেরা ধনী ও শিল্প উদ্যোক্তা, দেশবরেণ্য শিল্পপতি আলহাজ্ব জহুরুল ইসলামের জন্ম ১৯২৮ সালের ১ আগস্ট কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার ভাগলপুর গ্রামের এক সম্রান্ত মুসলিম পরিবারে। তিনি ছিলেন একজন একনিষ্ঠ উদ্যোক্তা, দেশপ্রেমিক ও জনদরদী নিঃস্বার্থ মানুষ। যার শ্রম, মেধা, একনিষ্ঠতা, আত্মবিশ্বাস, সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনার হাত ধরে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে আমূল উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বাংলায় এসেছে ব্যবসায়-বাণিজ্যে বিল্পবী পরিবর্তন। তিনি তার মেধা, আত্মবিশ্বাস আর সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা দ্বারা শুধু দেশে নয়, বাংলার সীমানা ডিঙ্গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার হাতেগড়া গ্রুপ বিস্তৃত। জহুরুল ইসলামের হাত ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শ্রমশক্তির দুয়ার খোলে। জহুরুল ইসলাম শুধু ব্যবসায়-বাণ্যিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না। জনহিতকর কাজ করে গিয়েছেন বৃহত্তর বাজিতপুরবাসীর জন্য। প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন বাজিতপুরে একাধিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। প্রসারিত করে দিয়েছিলেন হাত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, ব্যাংক, কৃষিসহ বিভিন্ন কাজে।

14681894_368375153506368_6319142026885902701_o

শুধু এখানেই থেমে নেই জহুরুল ইসলাম। রেখেছিলেন মহান স্বাধীনতাযুদ্ধেও বিরল অবদান। তিনি এদেশের কিংবদন্তি যার প্রমাণ তিনি নিজেই। বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি মরহুম আবু সাঈদ চৌধুরীর লেখা ‘প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি’ নামক গ্রন্থে মহান মুক্তিযুদ্ধে শিল্পপতি জহুরুল ইসলামের অবদান সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, জহুরুল ইসলাম ১৯৭১ সালের জুন মাসে ঢাকা ছেড়ে লন্ডন চলে যান। তিনি লন্ডনে ছদ্মনাম ধারণ করে বাংলার স্বাধীনতার পক্ষে কার্যক্রম চালানোর জন্য লেখক ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মরহুম আবু সাঈদ চোধুরীকে আর্থিক অনুদান দিতেন। জহুরুল ইসলামের দেয়া অর্থ দিয়ে চলত লন্ডনে বাংলার স্বাধীনতার রুপকথা। অপর গ্রন্হ বিশিষ্টি রাজনীতিবিদ মোঃ আতাউর রহমানের লেখা ‘স্বৈরাচারের দশ বছর’ থেকে পাওয়া যায়, জহুরুল ইসলাম ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে পাকিস্তান সরকারের জেলে আটক সকল বীর বাঙ্গালী নেতা-কর্মীদের মোকাদ্দমাদির খরচ, আহতদের চিকিৎসার খরচ ও আগরতলা মামলা খরচও ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বহন করতেন। তার মহৎ কৃতিত্ব ও দেশপ্রেম বাঙ্গালী জাতির বর্তমান ও আগামীর পথের সাথী।

14706897_368373536839863_7502678949868638266_o

দেশবরেণ্য শিল্পপতি জহুরুল ইসলাম ১৯৯৫ সালে ১৮ অক্টোবর ৬৭ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মহৎ এ ব্যক্তির সমাধিস্থল গ্রামের মাটি ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মসজিদ সংলগ্নে।

মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/২৪-১০-২০১৬ইং/ অর্থ 

Tags: