মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশে বছরে দুই ঈদকে উপলক্ষ করে দৃশ্যপটে আসে বিরাট পরিবর্তন। ফাঁকা রাজধানীতে তৎপর হয়ে ওঠে অপরাধীরা। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকার নিরাপত্তায় ৩ হাজার কমিউনিটি পুলিশসহ মোতায়েন করা হয়েছে ১৭ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে।
ঈদকে উপলক্ষ করে ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তায় রোজার মাঝামাঝি থেকেই ব্যবসায়ী ও পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘এবার ঈদে রাজধানীর নিরাপত্তায় দুই স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হচ্ছে। নিয়মিত পুলিশের পাশাপাশি থাকবে কমিউনিটি ও বিট পুলিশ। ডিএমপির ৮টি ক্রাইম জোনে সক্রিয় থাকবে ৮ হাজার পুলিশ সদস্য। কমিউনিটি পুলিশের প্রায় ৩ হাজার সদস্যকে এবার ঈদের নিরাপত্তায় মাঠে নামানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে থাকবে এপিবিএন-এর ৫টি ব্যাটালিয়ন। প্রায় ২ হাজার পুলিশ সদস্য মোটরসাইকেলে টহল দেবে বিভিন্ন ক্রাইম পয়েন্টে।’ তিনি জানান, রাজধানীর সার্বিক নিরাপত্তার জন্য যা যা করা প্রয়োজন রাজধানীবাসীকে সম্পৃক্ত করে সব ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাই এবার গ্রহন করা হয়েছে।
ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, ঈদে রাজধানীর নিরাপত্তায় টহল পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন মোড়ে থাকবে নিরাপত্তা তল্লাশী। এছাড়া সাদা পোশাকে থাকবেন পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
তিনি বলেন, ‘এবার ঈদ উপলক্ষে বিশেষভাবে যে বিষয়টির উপর গুরুত্ব দেয়া হযেছ তা হলো, ব্যবসায়ী এবং রাজধানীবাসীকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। রমজান মাসের মধ্যবর্তী সময় থেকেই বিভিন্ন বিপনী বিতান, মার্কেট, আর্থিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পুলিশের বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমরা ব্যবসায়ীদের জানিয়েছি, তারা যেন তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেন। সেই সঙ্গে লোকাল পুলিশের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করেন। যেন যে কোনো ধরনের বিপদে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারে। অন্যদিকে রাজধানীতে খালি হয়ে যাওয়া বাসা-বাড়ির নিরাপত্তার বিষয়েও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে পুলিশের বৈঠক হযেছে। সেখানে ওইসব কমিটিকে তাদের এলাকার নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি সিসি টিভি সচল রাখার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া কমিউনিটি পুলিশকেও এবার রাজধানীর বিশেষত পাড়া-মহল্লার নিরাপত্তা রক্ষায় কাজে লাগানো হচ্ছে।’
র্যাবের পরিচালক (মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইং) মুফতি মাহমুদ জানান, রাজধানীর নিরাপত্তায় র্যাবের টহল টিমের পাশাপাশি গোয়েন্দারাও তৎপরতা থাকবেন। সবসময় রাজধানীতে ৫ হাজার র্যাব সদস্য দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এবারও তাই করবে।
এপিবিএন-এর সিনিয়র এসপি মামুন জানান, শুধু শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায়ই এক হাজার এপিবিএন সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।