মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠঃ আজ ২৩/০৭/২০১৫ বৃহষ্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ শহর মুজিব-সৈনিকদের আনন্দ-মিছিলে মুখরিত,মানুষে মানুষে সয়লাব,জাতির জনকের প্রতিকৃতি,জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবি,সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের
ছবি,লাঙল-জোঁয়াল-হুক্কা,নেতা কর্মীদের হাতে বৈঠা ব্যানার ফেষ্টুন ; এক নজিরবিহীন বিশাল সমাবেশ ও আনন্দ মিছিল হয়ে গেলো। আশরাফ ভাই’র দপ্তর-না-থাকা ৯ থেকে ১৪জুলাই ৬দিন কিশোরগঞ্জের সকল মানুষের মুখচ্ছবিতে বিষাদের ছায়া নেমে এসেছিলো। অতপর ১৫জুলাই তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রী করায় সেই বিষাদ কেটে উল্লাসে পরিণত হলো। রাজনীতির আকাশে যে অন্ধকার মেঘ জমেছিলো সেই মেঘ সরে গিয়ে আলোকিত সূর্য উদ্ভাসিত হলো।
কেন বাংলাদেশের এতো মানুষ সৈয়দ আশরাফের দপ্তর হারানোয় ব্যথিত হলো?
কেন সৈয়দ আশরাফ পুনরায় মন্ত্রীর দপ্তর পাওয়ায় খুশি হলো?
এর একটা ব্যাখ্যা আছে ———————
এ কথা তো ঠিক, সৈয়দ আশরাফ কাউকে ব্যক্তিগত ফায়দা দেন না কিংবা অর্থনৈতিক সুবিধা করে দেন না। যতো মানুষ তার প্রতি দরদ দেখালো তাদেরকে তিনি চেনেনও না। তারাও হয়তো তাকে কোনদিন দেেখনি বা সাক্ষাৎ পাননি।
তাহলে কেন তার প্রতি জনসাধারনের এই দরদ সহানুভুতি ও সমর্থন?
কারন: ১। চলমান ভোগবাদী আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে এবং এ সময়ের রাজনীতিতে নির্লোভ মানুষের সংখ্যা খুব কম। গত এক যুগের রাজনীতিতে সৈয়দ আশরাফ প্রমান করেছেন তিনি নির্লোভ মানুষ, তার অর্থ বিত্ত সম্পদের প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের জনসাধারন এই ব্যতিক্রমী চরিত্রকে পছন্দ করেছে।
কারন:২। এ দেশের মানুষ ষড়যন্ত্রের রাজনীতি দেখে অভ্যস্ত। শংকিত মানুষ উপলব্ধি করেছিলো, সৈয়দ আশরাফবিহীন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এবং সামগ্রিক জাতীয় রাজনীতিতে আবার ষড়যন্ত্রের খেলা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে, আবার চক্রান্তের হোলিখেলা শুরু হতে পারে। মানুষ যথার্থই উদ্বেগের সাথে ৬ দিনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করেছে এবং কেউ সরবে কেউ নিরবে অভিমত ব্যক্ত করেছে, ” আওয়ামী লীগের রজনীতির পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রের বিপরীতে স্বচ্ছ ও সুস্থ রাজনীতির প্রবাহমান ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্যে সৈয়দ আশরাফের প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক।”
কারন:৩। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা নেতৃত্ব করছেন সেই নেতাদের বেশীরভাগ কর্কশ ভাষায় উচ্চকন্ঠে কথা বলেন। প্রতিপক্ষকে ভাষার অস্ত্র দিয়ে তুলোধোনা করেন, জনগন তা পছন্দ করে না।জনগন সৌম্য শান্ত ভদ্র নেতাদের পছন্দ করে। সৈয়দ আশরাফ স্বল্প ও মিষ্টভাষী। তিনি কম কথা বলেন, কিন্তু যথাসময়ে যথার্থ কথাটি বলতে পারেন। মানুষ তার এই অসাধারন গুণটিকে পছন্দ করে বলেই তাকে সমর্থন করে।
কারন:৪। বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশ এক সময় খেলার পুতুল ছিলো, এখন নিজেই খেলোয়াড়ের আসন দখল করে নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে মানুষ মনে করে,এক সময় ইংল্যান্ডে লেবার পার্টির সাথে যুক্ত থাকা সৈয়দ আশরাফ আন্তর্জাতিক রাজনীতির মাঠে দক্ষ diplomatic politician. বাংলাদেশ এখন দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতিতে ফ্যাক্টর। বাংলাদেশ এখন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রি নিশা দেশাইকে দু’আনার মন্ত্রি বলার সাহস রাখে, বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। বর্তমানে বিশ্বের শক্তিশালী কোন রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন নেই। অনেকেই মনে করেন, এ ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারনী ভুমিকা নেন শেখ হাসিনা ও সৈয়দ আশরাফ।
কারন:৫। যাদের পড়াশুনা আছে,অনেক জ্ঞানী-গুণী তারা প্রায় সকলেই নিজেকে যত্রতত্র প্রকাশ ও প্রচারে পাগল হয়ে যান। ব্যতিক্রম সৈয়দ আশরাফ, তিনি জানেন অনেক। তার প্রচুর পড়াশুনা। এখনো ৬/৭ঘন্টা ইন্টারনেটে পড়েন
কিন্তু আত্মপ্রচারে ব্যস্ত থাকেন না। নিজেকে অযথাই জাহির করতে কারনে অকারনে মিডিয়ার সামনে আনেন না। এই বৈশিষ্ট্যকে জনগন সমর্থন করেছে।
কারন:৬। গ্রুপিং দলাদলি কোন্দল হানাহানির রাজনীতি জনগন পছন্দ করে না। গ্রুপিং দলাদলি কোন্দল করেন না এমন রাজনীতিবিদ বাংলাদেশে বিরল। নিজের দল ভারী করতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করেন না এমন নেতা নেই বললেই চলে। সৈয়দ আশরাফের রাজনীতিতে এর নজির নেই। জনগণ তার এই চারিত্রিক দৃঢ়তা ও ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধার সাথে সমর্থন করে।
কারন:৭।হিংসা-বিদ্বেষ প্রকাশ পায় যাদের কথায় আচরণে তাদেরকে মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে।দলের ভেতরে বাইরে কিংবা অন্য দলের সাথে কোথাও কখনো তিনি হিংসাত্বক ভুমিকা নেন নি।তিনি উদার গণতন্ত্রি হিসাবে জনগনের হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছেন।
“যারা বিশ্বাস করেন, রাজনীতি কোন ব্যবসা না, রাজনীতি কোন কামাই-রোজগার না। রাজনীতি পেশা না, রাজনীতি নেশা না, রাজনীতি হলো ব্রত,রাজনীতি হলো সমাজসেবার সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। রাজনীতির মাধ্যমে
অর্থ-বিত্ত-বৈভব-সম্পদ-বাড়ি-গাড়ি
যারা করেন তাদের পতনে মানুষ খুশি হয়।তারা রাজনীতির দুষ্ট চক্র ঘুনপোকা কীট,রাজনীতিতে তারা অপশক্তি।তাদেরকে প্রকাশ্যে না পারলেও মনে মনে ঘৃণা করুন।”
“সৈয়দ আশরাফকে অনুসরণ করুন,
বাংলাদেশের ৪৫ বছরের ইতিহাসে এক অনন্য নাম সৈয়দ আশরাফ।”
২৩/০৭/২০১৫/ নিঝুম