ক্রীড়া ডেস্ক,
নিজেদের শহর চট্টগ্রাম থেকে চেহারাটাই বদলে ফিরছে তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংস। ঢাকা থেকে ১ জয় ও টানা তিন হার নিয়ে ওখানে গিয়েছিল দলটি। তারপর আরো একটি হার। কিন্তু টানা তিন ম্যাচে জিতল তারা। তাতে ৮ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে এখন তারা। অথচ ঢাকা থেকে গিয়েছিলে নিচের থেকে দুই নম্বরে থেকে। এবার প্রবল দাপটে বরিশাল বুলসকে উড়িয়ে দিল তারা। মঙ্গলবার মুশফিকুর রহীমের দলের বিপক্ষে তামিমরা পেয়েছেন ৭৮ রানের দাপুটে জয়। ঢাকায় বড় রান করেও বরিশালের কাছে হারের শোধ নিজেদের মাঠে তুলল চিটাগং।
এদিকে চট্টগ্রামে খেলা ৩ ম্যাচই হারল বরিশাল। তাতে ৭ ম্যাচ খেলার পরও ঢাকা থেকে নিয়ে যাওয়া ৬ পয়েন্ট তাদের। পয়েন্ট টেবিলের নিচের থেকে তৃতীয় স্থানে তারা।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তাণ্ডব দেখিয়েছেন চিটাগংয়ের ওপেনার ডোয়াইন স্মিথ ও পাকিস্তানি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিক। ৪৯ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৯ রান ক্যারিবিয়ান স্মিথের। আর মালিক ৩০ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় মারকাটারি ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন। তাতে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৮৫ রান তোলে চিটাগং। পরে শোয়েব ১টি উইকেটও নিয়েছেন। জিতেছেন ম্যাচের সেরার পুরস্কার।
আগের দিন বড় রান তাড়া করে ম্যাচ জেতানো ব্যাটিংয়ে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছিলেন মোহাম্মদ নবি। এদিন ব্যাটিংয়ে করলেন ৪। কিন্তু বল হাতে দুর্দান্ত তিনি। প্রথম ২ ওভারেই ৩ উইকেট নিয়ে বরিশালের টপ অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন। বিপিএলের এবারের আসরের সেরা খেলোয়াড়ের দৌড়ে অনেক এগিযে এই আফগান অল রাউন্ডার। এবার ১৬ রানে ৩ উইকেটে আসর সর্বোচ্চ ১৪ উইকেট তার। নবির পর আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। তাতে ৩৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপিএলের ইনিংস সর্বোচ্চ রানে অল আউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে বরিশাল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৮.৪ ওভারে ১০৭ রানে অল আউট তারা। তাসকিন ও শুভাশিস রায়ের শিকার ২টি করে উইকেট।
নবি ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারে বরিশালের দুই ওপেনারকে শিকার করেছেন। ঢাকার ম্যাচ জেতানো ডেভিড মালান (৫) ও নাদীফ চৌধুরীকে (৪) তুলে নেন। পরের ওভারে শুভাশিস রায় শিকার করেন করেন ইনফর্ম শাহরিয়ার নাফীসকে (১)। আবার নবির আঘাতে নেই জিভান মেন্ডিস (১)। ১২ রানে ৪ উইকেট নেই বরিশালের!
মুশফিকুর রহীম (১৯) হাল ধরতে চাইলেন। রায়ান এমরিটকে (৬) নিয়ে দলকে নিলেন ৩৭ রান পর্যন্ত। কিন্তু ওখানে ২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় তারা। পর পর ২ ওভারে ২ উইকেট তাসকিনের। প্রথম ৭ ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুই অংকে গেলেন কেবল মুশফিক। লজ্জা তখন সামনে। প্রথম ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে সাতক্ষীরার ৩০ বছরের এনামুল হক টু ৪২ রানের অষ্টম উইকেট জুটি গড়েন তাইজুল ইসলামের সাথে। ওখানে লজ্জা থেকে বাঁচলেও বড় হার এড়াতে পারেনি বরিশাল।
তার আগে তামিম ও স্মিথ দ্রুত ৪৩ রানের জুটি গড়েন। তামিম ১৯ রান করে বিদায় নেন। এনামুল হককে (১১) নিয়ে আরো ৩৯ রানের জুটি স্মিথের। এরপর শোয়েব ও স্মিথের ৩৩ বলে ৪৭ রানের জুটি। স্মিথ ফেরেন। ফেরেন নবি। কিন্তু ১৪ বরে পঞ্চম উইকেটে ৪৫ রানের জুটি শোয়েব ও জহুরুল ইসলামের (অপরাজিত ৭)। জহুরুল দর্শক। টর্নেডো ইনিংস খেলেন শোয়েব। ইনিংসের শেষ বলে তিনি আউট হলেও বরিশালের বিরুদ্ধে ঢাকার হারের নির্মম প্রতিশোধ নেওয়ার পুঁজি তখন চিটাগংয়ের হাতে। এরপর তো প্রতিপক্ষকে পুড়িয়ে ছাই করলেন বোলাররা।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/ ২১-১১-২০১৬ ইং / মো: হাছিব