ক্রীড়া ডেস্ক,
মিরপুর স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকরা চিৎকার করে গলা ফাটাচ্ছে। ক্রিজে তখন তামিম-গেইল। এই দৃশ্য দেখার জন্য ছিল বহুদিনের অপেক্ষা। অপেক্ষার পালা শেষ করে অতঃপর চার-ছক্কার ঝড় উঠল মিরপুরে। সেই ঝড়ে স্রেফ উড়ে গেল রংপুর রাইডার্স। মিরপুরের বোলিং সহায়ক উইকেটকে থোড়াই কেয়ার করে সমানে ব্যাট চালালেন দুজন। তাদের তাণ্ডবে ৯ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নিল চিটাগং ভাইকিংস। ম্যান অব দ্য ম্যাচ তামিম ইকবাল।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের আজ রবিবারের দ্বিতীয় খেলায় টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে স্পিডস্টার তাসকিন আহমেদ এবং আফগান স্পিনার মোহাম্মদ নবির দাপটে চিটাগংকে ১২৫ রানের টার্গেট দেয় রংপুর রাইডার্স। জবাবে উড়ন্ত সূচনা করেন চিটাগং ভাইকিংসের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং ক্রিস গেইল। চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে ৯ ওভারে ৭০ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন দুজন। এরপর শহীদ আফ্রদির বলে ছক্কা মারতে গিয়ে আনোয়ার আলীর হাতে ক্যাচ দেন গেইল। এর আগে ২৬ বলে ২ চার এবং ৪ ছক্কায় ৪০ রান করেন ক্যারিবীয় দানব। এই একটি উইকেটই ফেলতে পেরেছিল রংপুরের বোলাররা।
গেইলের বিদায়ের পর একইভাবে ব্যাট চালাতে থাকেন চিটাগং অধিনায়ক তামিম ইকবাল। নতুন সঙ্গী এনামুলক হক বিজয়কে নিয়ে ঝড়ের গতিতে এগিয়ে নিতে থাকেন দলকে। ৪১ বলে ৭ বাউন্ডারি এবং ১ ওভার বাউন্ডারিতে ৫০ পূরণ করেন তামিম। শেষ পর্যন্ত তিনি ৪৮ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ১৬ তম ওভারের শেষ বলেই জয় পায় চিটাগং। তার ইনিংসে আরও দুটি বাউন্ডারি যুক্ত হয়। অপর ব্যাটসম্যান এনামুল হক বিজয় ২২ বলে ২২ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল রংপুরের দুই ওপেনার। অনেকটাই সাবললী ভাবে খেলছিলেন তরুণ তুর্কী সৌম্য সরকার। বড় স্কোরের আশা জাগিয়েও হঠাৎ ছন্দপতন। ৩৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ার পর শুভাশীষ রায়ের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ নবির হাতে ক্যাচ দেন ফর্মহীনতায় ভোগা এই ওপেনার। ২১ বলে ২ চার এবং ১ ছক্কায় তিনি করেন ২৬ রান। এরপর দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ শেহজাদ এবং মোহাম্মদ মিথুন।
১১ বলে ১২ রান করে স্পিডস্টার তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে যান মিথুন। ১ রানের ব্যবধানে তাসকিন আহমেদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন মোহাম্মদ শেহজাদ। বোল্ড হওয়ার আগে ২৮ বলে ১ বাউন্ডারিতে ২১ রান করেন তিনি। এরপর উইকেটে এসে তাসকিন আহমেদের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে কিছু করে দেখানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শহীদ আফ্রিদি। কিন্তু পরের ওভারেই মোহাম্মদ নবিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাব হিসেবে আসা নাজমুল হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন ১৪ বলে ১৩ রান করা এই মারকুটে ক্রিকেটার।
এর মধ্যেই আঘাত পেয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে যান রংপুর অধিনায়ক নাঈম ইসলাম (৩)। লিয়াম ডসনও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে ১৮ বলে ১৪ রান করে মোহাম্মদ নবির বলে জাকির হোসেনের হাতে ধরা পড়লে ৯৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে রংপুর। এরপর ৪ রান করে রানআউট হয়ে ফিরে যান মুক্তার আলী। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৪ রানে ইনিংস শেষ করে রংপুর।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/ ২৭- ১১–২০১৬ ইং / মো: হাছিব