সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ও সাবেক এমপি এম আব্দুর রহিম স্মরণসভায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, তিনি শুধু মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না, স্বাধীনতার পর এই দেশ যখন ভঙ্গুর অবস্থায় ছিলো তখন এর পুনর্গঠন ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সংবিধান প্রণয়নের রূপকারদের মধ্যে তিনি প্রথম সারিতে ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, এমএ রহিম প্রথমে একজন আইনজীবী ছিলেন। এরপর তিনি রাজনীতিতে আসেন। বর্তমান প্রজন্মের আইনজীবীদের প্রতি আমার আহবান আপনারা এমএ রহিমের মতো আইনজীবীদের আদর্শ ও নীতি অনুসরন করুন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী সমিতি আয়োজিত স্মরণসভার প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
সভায় আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। আপনারা যদি আমাদের সহযোগিতা না করেন তাহলে আমরা কোনো মতে আইনের শাসন প্রতিষ্টা করা যাবে না। আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে আইনজীবীদের অবদানও কম নয়। আইনজীবীদের বাদ দিয়ে আইনের শাসন চিন্তাই করা যায় না। অনুষ্ঠানে আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ, সিনিয়র আইনজীবীগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, পৃথিবীতে যতগুলো সংবিধান আছে তার মধ্যে বেশ কিছু সংবিধানে কম্পিলিট জাস্টিসের (পরিপূর্ণ বিচার) বিধান সংক্রান্ত আমাদের সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ রয়েছে। ব্রিটিশ সংবিধানের একটা অংশ আমাদের সংবিধানে গ্রহণ করেছি। তবে ফেডারেল সিস্টেমটা বাদ দিয়েছি। কমিপলিট জাস্টিস একাধিক হাতে যদি দেয়া হয় তাহলে সংবিধান ও আইনের ব্যাখ্যা এবং আমাদের যে নজির রয়েছে সেগুলোতে অপব্যাখ্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহহাব মিঞা বলেন, আগে বাবার পরিচয় দিতে গিয়ে বলা হতো-আমার বাবা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার। এখন বলা হয় আমার বাবা রাজনীতিবিদ। কি সাংঘাতিক ব্যাপার!
এমএ রহিমের পুত্র হাইকোর্টের বিচারক বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, আমার পিতার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন দাদা মারা যান। পরিবারের সবাই বাবাকে কৃষি ও ব্যবসার কাজে মনোনিবেশ করার কথা বলতেন। কিন্তু আমার বাবা সেদিকে না গিয়ে শিক্ষা, সমাজ সেবা ও রাজনীতিতে নিজেকে আত্ম নিয়োগ করেছিলেন। তিনি বলেন, বাবার সম্পত্তি ছিলো ১২২ বিঘার মতো। আর এখন সেটা কমে ৪০ থেকে ৪২ বিঘার মতো রয়েছে। বারের ভালো আইনজীবীও ছিলেন। তিনি সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করেছেন। কিন্তু আজকের রাজনীতিতে সম্পত্তি যোগ হয়। আমার বাবার রাজনৈতিক জীবনে সম্পত্তি যোগ হয়নি।
স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা, সিনিয়র আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম, খন্দকার মাহবুব হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও বার কাউন্সিল ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার ও বার সম্পাদক ব্যারিস্টার এম মাহবুবউদ্দিন খোকন। সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শাহ মো. খসরুজ্জামান।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/ ৩০- ১১–২০১৬ ইং / মো: হাছিব
Tags: