ছিটমহলবাসীর অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে। বিকেল থেকে শুরু হয়েছে ইতিহাস পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা। রাত ১২টা ১ মিনিটে বাংলাদেশ অংশে উড়বে বাংলাদেশের পতাকা এবং ভারতের ভূখন্ডে উড়বে ভারতের পতাকা। ছিটমহলবাসী পাবে নিজ দেশের পরিচয়।
জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং মোমবাতি ও প্রদীপ জ্বালিয়ে শুরু হবে মূল আয়োজন। রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে ভারতের ১‘শ ১১ টি ছিটমহল বাংলাদেশের মানচিত্রে অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে। এসব ছিটমহলে ভারতের জাতীয় পতাকা নামানোর পর শনিবার সকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উড়ানো হবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। প্রথমবারের মতো এখানকার মানুষ গাইবে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। ৬৮ বছর পরিচয়হীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত হচ্ছে এখানকার মানুষ।
মসজিদে ও মন্দিরে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে ছিটবাসীদের উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আজ দুপুর ২টায় কুড়িগ্রামের দাসিয়ার ছড়াসহ ১১১টি ছিটমহলে উৎসব পালনের এ অভিন্ন কর্মসূচী শুরু হয়েছে। বিকেলে নৌকা বাইচ, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিকেল থেকে চলে বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে আনন্দ উৎসব, শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগিতা, সূর্যাস্তের সাথে সাথে ভারতীয় পতাকা নামিয়ে , সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জলন ও আলোকসজ্জা করা হয়। এর পর চলে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাত ১২ টা ১ মিনিটে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হবে বিজয় উৎসব। এছাড়াও ফানুষ উড়িয়ে, আতশ বাজি করে রাতভর চলবে আনন্দ উল্লাস।
তাদের এই বাধ ভাঙ্গা উল্লাসের সাথে একত্রিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেছে দেশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। বাংলাদেশের মুল ভূখন্ডের সাথে যুক্ত হওয়ায় এসব ছিটের ৪১ হাজার ৪শ ৪৯ জন মানুষ এখন বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে।
যারা বাংলাদেশে থেকে যাচ্ছেন তাদের কাছে আজকের দিনটি আনন্দের হলেও অশ্রুসজল দিন পার করছেন যারা এ দেশের মাটি, আলো, বাতাস ছেড়ে চলে যাবেন ভারতে। তবে নতুন পরিচয়ে তাদের মুখেও তৃপ্তির হাসি।