muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

এসএসসিও পেরোননি নাসিক নির্বাচনের ৯৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে মোট ২০১ জন প্রার্থীর হলফনামা বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন।
রবিবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়র পদে সাতজন প্রার্থীর বেশিরভাগই উচ্চশিক্ষিত। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৫৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৯৫ জনেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে। প্রার্থীদের ২২ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীদের ৮০ ভাগই ব্যবসায়ী।
সুজনের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে ভোট প্রদানকে গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক দায়িত্ব মনে করে সত্, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীদের নির্বাচিত করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহবান জানানো হয়। একইসঙ্গে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, ঋণখেলাপী, বিল খেলাপী, ভূমিদস্যু ও কালো টাকার মালিক-এমন প্রার্থীদের ভোট না দেয়ারও আহবান জানায় সুজন। নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়-সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দীলিপ কুমার। আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মসিকুল ইসলাম শিমুল, সংগঠনের সহযোগী সম্পাদক সানজিদা হক, জেলা কমিটির সভাপতি আবদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, সহ-সাধারণ সম্পাদক এসএমএইচ টিটু প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রার্থীদের হলফনামা থেকে বিভিন্ন প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, আয়, মামলা, আয়কর প্রদান, সম্পদ ও দায়দেনার বিবরণ তুলে ধরা হয়।
মেয়র পদে উচ্চ শিক্ষিতের হার বেশি
নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন। এদের মধ্যে ৩ জন স্নাতকোত্তর, ২ জন স্নাতক। অপর ২ মেয়র প্রার্থীর একজন এসএসসি পাশ ও অপরজনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি’র নিচে। সাধারণ ওয়ার্ডে ১৫৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৯৫ জনই এসএসসি পাশ করেননি, এসএসসি পাশ করেছেন ১৮ জন, এইচএসসি পাশ করেছেন ২০ জন, স্নাতক ১৬ জন ও স্নাতকোত্তর ৩ জন। আর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩৮ প্রার্থীর ২৪ জন এসএসসি পাশ করেননি, এসএসসি পাশ করেছেন ৫ জন, এইএএসসি পাশ করেছেন ৩ জন, স্নাতক ৫ জন ও ১ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর।
প্রার্থীদের ৮০ ভাগই ব্যবসায়ী
নির্বাচনে মোট ২০১ জন প্রার্থীর বেশিরভাগেরই পেশা ব্যবসা। এ ধরনের প্রার্থীর সংখ্যা শতকরা ৮০ দশমিক শূণ্য ৯ ভাগ। গৃহিনী রয়েছেন ৭ দশমিক ৯৬ ভাগ, চাকরি করেন ৩ দশমিক ৯৮ ভাগ, আইন পেশায় রয়েছেন ১ দশমিক ৪৯ ভাগ। তবে নারী প্রার্থীদের মধ্যে শতকরা ৪৪ দশমিক ৭৩ জন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
২২ ভাগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা
২০১ জন প্রার্থীর মধ্যে শতকরা ২২ দশমিক ৮৮ ভাগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো না কোনো মামলা রয়েছে। ২ মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো হত্যা মামলা নেই। তবে সাধারণ ওয়ার্ডের ৭ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা রয়েছে। কাউন্সিলরদের মধ্যে ৯ জনের বিরুদ্ধে অতীতে ৩০২ ধারার মামলা ছিল। তবে ২ জন ওই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। ২৩ দশমিক ৮৮ ভাগ প্রার্থীর অতীতেও মামলা ছিল। সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ২ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা রয়েছে, ৩ প্রার্থীর বিরুদ্ধে অতীতে মামলা ছিল।
৬৭ প্রার্থীর বার্ষিক আয় ২ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে
প্রার্থীদের মধ্যে শতকরা ৬৭ দশমিক ৬৬ ভাগ প্রার্থী বার্ষিক আয় ২ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে। ৫ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা বার্ষিক আয় শতকরা ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ প্রার্থীর। ২৫ লাখ টাকার উপরে বার্ষিক আয় মাত্র ১ জন প্রার্থীর। ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার মধ্যে বার্ষিক আয় মাত্র ১ জন প্রার্থীর। তবে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত্ আইভীর বার্ষিক আয় ১১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। আর বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের বার্ষিক আয় ৮ লাখ ৬৯ হাজার ১শ টাকা।
৫ হাজার বা এরচেয়ে কম আয় কর দেন ৫২ শতাংশ প্রার্থী
সুজনের প্রতিবেদনের বলা হয়, প্রার্থীদের মধ্যে শতকরা ৫২ দশমিক ৭৩ শতাংশ প্রার্থী বছরে আয়কর দেন ৫ হাজার টাকা বা এরচেয়ে কম। ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে আয়কর দেন শতকরা ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ প্রার্থী। ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে আয়কর দেন শতকরা ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ প্রার্থী। ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে আয়কর দেন ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ প্রার্থী। ৫০ হাজার টাকার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে আয়কর দেন ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ প্রার্থী। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আইভী বছরে ১১ লাখ ৩৪ হাজার টাকার বিপরীতে আয়কর দেন ২৩ হাজার ৪০০ টাকা। বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত বার্ষিক ৮ লাখ ৬৯ হাজার ১শ টাকার বিপরীতে আয়কর দেন ২৮ হাজার ৩৬০ টাকা।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/ ১১ – ১২-২০১৬ ইং / মো: হাছিব

Tags: