শাহরিয়ার রহমান পাভেল (ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি):
অর্ধযুগপূর্তি উপলক্ষে ১০ তরুণের সাহিত্য পাঠোৎসব করেছে কালের ধ্বনি। শুক্রবার বিকেল ৩টায় ডেইলি স্টার সেন্টারের এসএম আলী লাইব্রেরি হলে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমীর সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মনসুর মুসা। সভাপতিত্ব করেন কবি ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশিদ, কবি শোয়াইব জিবরান, সাংবাদিক কাজল রশীদ শাহীন ও কবি আশিক রেজা। বাংলাদেশের প্রথম এই আয়োজনে ১০ তরুণ হলেন : কাজী বর্ণাঢ্য (আলোচক : মাইনউদ্দিন সরকার), কিঙ্কর আহ্সান (আলোচক : হাসনাইন হিরা), জব্বার আল নাঈম (আলোচক : আশরাফ জুয়েল), নিলয় রফিক (আলোচক : আলমগীর রেজা চৌধুরী),শামসুল হক শামস্ (আলোচক : জগলুল হায়দার), শরাফত হোসেন (আলোচক : আবিদ আজম), শামস সাইদ (আলোচক : মাহমুদুল বাসার), সৌম্য সালেক (আলোচক : হাসান হাবিব), মাজহার সরকার (আলোচক : শরীফ সিরাজ) ও রাসেল রায়হান (আলোচক : ইফতেখার মাহমুদ)। অনুষ্ঠানে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘তরুণদের এই উৎসব অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ আছে। এই উৎসবের মাধ্যমে তরুণদের তাদের সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে আরো প্রেরণা পাবে।’ আগামীকে মাসে তরুণদের নিয়ে এরকম একটি উৎসব করার অঙ্গীকার করেন তিনি। কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক ড. কাজল রশীদ শাহীন বলেন, ‘কবি বুদ্ধদেব বসু কবিতাপত্র সম্পাদনা করতেন। আজকের যে বিখ্যাত রবীন্দ্র পুরস্কার তার ধারণা বুদ্ধদেব বসু এই ধারণা। আমাদের তরুণরা সাহিত্যের কোনো কোনো দিক নিয়ে এক ধরনের ক্রুসেডে অবর্তীর্ণ হতে পারে। সমাজ-সাহিত্য নিয়ে তারা ভূমিকা রাখতে পারে। ‘আমাদের তরুণদের মধ্যে বনসাই প্রবণতা দেখা দিয়েছে। আশা করব, আমাদের এই তরুণরা বনসাই প্রবণতার গণ্ডি পেরিয়ে বৈশ্বিক চিন্তায় একাত্ম হবে। কর্মে-মননে তারা হয়ে উঠবে আন্তর্জাতিক চেতনার উত্তরসূরি। কোনো তরুণকে হিংসা নয় বরং সৃজনশীলতার মাধ্যমে তারা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছাবে এটাই হতে হবে তরুণদের সাহিত্যসাধনার মূলমন্ত্র—’ বলেন তিনি। কবি শোয়াইব জিবরান বলেন, ‘তরুণ সাহিত্যিকদের সৃজনশীলতার উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ সৃজনশীলতার মাধ্যমে পুরনোকে হত্যা করা। আমি সেই অর্থে আজকের তরুণদের কাছে পুরনো এক মানুষ। আমি মনে করি আজ আমি অগনিত তরুণ হন্তারকদের সামনে কথা বলছি। তারা যদি সৃজনশীলতা দিয়ে আমাকে হত্যা করে, আমার মতো পুরনোকে হত্যা করে বরং আমি খুশিই হবো।’ কালের ধ্বনি ২০০৯ সালের ১০ অক্টোবর থেকে নিয়মিত বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা বের করছে। প্রথম দুটি সংখ্যায় তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ও সাক্ষাতকার দিয়ে সাজানো হয়েছিল। তৃতীয় সংখ্যাটি সমকালীন আদিবাসী সাহিত্য চর্চার উপর, সেই সঙ্গে কবিতা ও গল্প থাকছে। চতুর্থ সংখ্যাটি কবি রেজাউদ্দিন স্টালিনের সাহিত্যজীবনকে উপজীব্য করা হয়েছে।
২০১৫ সালের পঞ্চম সংখ্যাটি বিখ্যাত সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদকে উৎসর্গ করা হয়েছে। আর সেই সংখ্যাটি গত বছর প্রকাশ করে সারাদেশে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে কালের ধ্বনি। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী সংখ্যা আসছে ছান্দসিক কবি, নজরুল গবেষক ও প্রাবন্ধিক আবদুল কাদিরকে নিয়ে। এ ব্যাপারে কালের ধ্বনির সম্পাদক ইমরান মাহফুজ বলেন, আমাদের ইচ্ছা বাংলা সাহিত্যের চিরাচরিত ধারা আর সমকালীন ধারার একটা মেলবন্ধন বা সমন্বয় ঘটানো। এই প্রয়াসের বহিঃপ্রকাশ আজকের উৎসব। আগামীতে এ উৎসবের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।’
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/২৪-১২-২০১৬ইং/ অর্থ