muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

আইন আদালত

অপরাধী যত বড় হোক না কেন, সে দায়মুক্তি পাবে না

আইন আদালত
অপরাধী যত বড় হোক না কেন, সে দায়মুক্তি পাবে না। চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার প্রভাবশালী আসামি র‌্যাবের কতিপয় কর্মকর্তা লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, যা সমগ্র জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। সুপ্রিম  কোর্টের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপের ফলে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হয়। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ওই মামলার বিচার নিষ্পত্তি করায় বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা আরও বেড়েছে।’

২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এসব কথা বলেন।

আট পৃষ্ঠার বাণীতে প্রধান বিচারপতি গত দুই বছর তার কার্যকালে গ্রহণ করা বিভিন্ন কার্যক্রম ও এসব কার্যক্রম পরিচালনায় নানা সীমাবদ্ধতাও তুলে ধরেছেন।

বাণীতে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ আইন, শাসন ও বিচার বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য নীতির গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য নীতির প্রতিফলন হচ্ছে সংবিধানের মূল চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিচার বিভাগ এর সীমার বাইরে গিয়ে অন্য বিভাগের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। তেমনিভাবে আমিও প্রত্যাশা করি রাষ্ট্রের অন্যান্য বিভাগ বিচার বিভাগের দায়িত্ব পালনে কোনরুপ হস্তক্ষেপ করবে না।

রাষ্ট্রের প্রত্যেক বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য স্বতন্ত্র চাকরির বিধান রয়েছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের কাজের প্রতীকী ধরন অন্যদের চেয়ে স্বতন্ত্র। বিচারকদের শৃঙ্খলার বিষয়ে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পক্ষে স্বাধীনভাবে বিচারকাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিঘ্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সংগত কারণে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা প্রণয়ন আবশ্যক বলে এর খসড়া প্রণীত হয়েছে। অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ সংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট প্রকাশের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সামান্য বিষয়ে স্তমিত থাকলেও তা অচিরেই দূর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি আরও বলেন, বিচারকদের স্বতন্ত্র আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধিমালা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে বিচার বিভাগ পৃথককরণের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে।

মামলাজট নিরসন প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ত্রুটিপূর্ণ ও সেকেলের আইনের ফলে মামলার সংখ্যা দিন দিন  বেড়েই চলছে।  দেশের নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত মামলার ভারে জর্জরিত। বিগত দু’বছরে মামলা নিষ্পত্তি বৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক। পরিসংখ্যানথেকে দেখা যায় যে, ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে  দেশের সব আদালতে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ২৪০টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। একই সময় ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে  দেশের সব আদালতে মামলা নিষ্পত্তির পরিমাণ ছিল ২৪ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৮টি। ফলে নিষ্পত্তির হার শতকরা প্রায় ১৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিচার বিভাগ জনগণের আস্থা অর্জন করেছে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘সীমিত সম্পদ ও বাজেট সত্ত্বেও সর্বোচ্চ বিচার সেবা প্রদানে বিচার বিভাগ সাধ্যমত দায়িত্ব পালন করে জনগণের বিশ্বাস অর্জন করেছে। রাষ্ট্রের ক্রান্তিলগ্নে বিচার বিভাগের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত দেশে-বিদেশে নন্দিত হয়েছে। তারওপর গণতন্ত্র সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীন মতামত ও সিদ্ধান্ত প্রদান দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/১৭ -০১-২০১৭ইং  / মো: হাছিব

Tags: