muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

ভৈরবের রসুলপুরে টেঁটা যুদ্ধের ভূত যেন সংসার পেতেছে : ফের সংঘর্ষ

কাজী রুমেল, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) :
“আসমানীদের দেখতে যদি তোমরা তবে চাও, রহিমুদ্দিনের ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও” নাহ্ এ রসুলপুর আসমানী কবিতার সেই রসুলপুর নয়,এ রসুলপুর কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার রসুলপুর৷ যে রসুলপুরের ঐতিহ্য হলো টেঁটা যুদ্ধ৷ বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম কোন না কোন ভাবে ঐতিহ্য শালী কিন্তু এ গ্রামটির মূল ঐতিহ্যই টেঁটা যুদ্ধ নামক মরণ খেলা৷
প্রতিটি মা -বাবা আগত -অনাগত সন্তান নিয়ে স্বপ্ন দেখেন ৷ সন্তান বড় হবে,মানুষের মতো মানুষ হবে কিন্তু এ গাঁয়ের মানুষ স্বপ্ন দেখেন সন্তান না পুত্র সন্তান হতে হবে কারণ পুত্র সন্তান হলেই কেবল বাপের লাঠি বাড়বে৷ এ গ্রামের সন্তানের পরিচিতি লাঠি হিসেবে! আজও এ গাঁয়ে কন্যা সন্তান চরম অবহেলিত কেবল এ টেঁটা ঐতিহ্যের কারণে৷বার্ষিক কোন উৎসবের ন্যায় এরা এ টেঁটা যুদ্ধ উদযাপন করে৷ সামান্য কোন অজুহাতে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন না হলে যেন মান থাকে না৷ ঘণ্টার পর ঘন্টা গাঁয়ের পতিত জমিতে টেঁটা যুদ্ধ নামক রক্তের হলি খেলে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ধাওয়া করে তাদের বাড়িতে তুলতে পারাকে তারা নিজেদের জয় মনে করে৷ অতঃপর ভাংচুর,লুটপাট,নারী শিশু নির্যাতন নতুন সংযোজন৷ অথচ এরা পরস্পর কোন না কোন ভাবে নিজেদেরই স্বজন৷ এ খেলার শেষ যবনিকা আসে কোন না কোন লাঠি ( প্রান )পতিত হওয়ার মাধ্যমে৷ এমনই বর্বর খেলায় এক মাসের ব্যবধানে তৃতীয়বারের মতো মুখোমুখি ভৈরবের রসুলপুরের দুইপক্ষ ৷ জানা যায়
ভৈরবের রসুলপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সকাল ৬ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত সংঘর্ষ হয় এতে উভয় পক্ষের অন্তঃত ৩০ জন আহত হয়।
এ সময় ঘর বাড়ী ভাংচুর ও লুটপাটের অভিয়োগ পাত্তয়া যায়। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে এক পক্ষ কে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপর পক্ষ কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে করে।
আহতদের মধ্যে উভয় পক্ষের ৫ জন কে আশংকা জনক অবস্থায় বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে যে কোন দরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ মোতায়েন আছে।
পুলিশ ওএলাকাবাসী জানায় দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুরে কৃপনবাড়ীর ফজলু মাষ্ঠার ও নূরারবাড়ীর মুসলিম মিয়ার মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল,তার জের ধরে গত বছর ৫ ই নভেম্বার দু দলের সংঘর্ষে অহিদমিয়া নামের কৃপনবাড়ীর এক ব্যক্তি নিহত হয়।এ ঘটনায়৩৯ জন কে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের ভাই। হত্যা মামলায় নূরার বাড়ীর লোকজন হাই কোর্ট থেকে জামিনে বেড়িয়ে আসার পর এলাকায় পুনরায় উত্তেজনা দেখা দেয় এবং আজ ভোরে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রায় দুঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/১৬-মার্চ-২০১৭ইং/নোমান

Tags: