মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠঃ সিলেট শহরতলির কুমারগাঁওয়ে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার চার্জশিটের ওপর শুনানির আগামী ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেগম ফারহানা ইয়াসমিন সোমবার এ তারিখ ধার্য করেন বলে আদালতের রেজিস্ট্রার ফরিদ উদ্দিন জানিয়েছেন।
আলোচিত শিশু রাজন হত্যাকাণ্ডের ১ মাস ৮ দিন পর রোববার চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার। চার পৃষ্ঠার এ চার্জশিটে মোট ৩৮ জনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। রাজন হত্যার প্রধান অভিযুক্ত সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
চার্জশিটে অভিযুক্তরা হচ্ছে- জালালাবাদ থানার কুমারগাঁও এলাকার শেখপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের পুত্র মুহিত আলম (৩২), তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), শামীম আলম (২০), পাভেল ইসলাম (১৮), আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪), চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না (৪৫), জালালাবাদ থানার টুকেরবাজার ইউনিয়নের পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের পুত্র ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর আহমদ ওরফে নুর মিয়া (২০), দুলাল আহমদ (৩০), আয়াজ আলী (৪৫), তাজ উদ্দিন বাদল (২৮), ফিরোজ মিয়া (৫০), আছমত আলী (৪২) ও রুহুল আমিন (২৫)। তাজ উদ্দিন বাদল ও রুহুল আমিন ছাড়া বাকি ৮ জন এ ঘটনায় আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সিলেটে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ-কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ জানান, সৌদি পুলিশের হাতে আটক প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্ট (গ্রেফতারী পরোয়ানা) দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি তার অপর দুই সহোদর শামীম ও পাভেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে তাদের বিরুদ্ধে হুলিয়া এবং মালামাল ক্রোকের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। কামরুলের ক্ষেত্রেও চাওয়া হয়েছে একই নির্দেশনা (হুলিয়া ও মালামাল ক্রোক)।
গত ৮ জুলাই নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের শিশু রাজনকে। নির্যাতনকারীরাই শিশুটিকে পেটানোর ভিডিও ধারণ করে এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। ২৮ মিনিটের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়।
ঘটনার দিবাগত রাতে জালালাবাদ থানার এস আই আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মুহিত আলম, তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়। পরে রাজনের বাবা এ ঘটনায় থানায় আরেকটি এজাহার দেন।
নিহত সামিউল আলম রাজনের বাড়ি নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামে। রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান পেশায় একজন মাক্রোবাস চালক। তার দুই ছেলের মধ্যে রাজন বড়। অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করা সামিউল আলম রাজন সবজি বিক্রি করত।