মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ রিপোর্টঃ
সময় যতো গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে উত্তেজনা। কি ঘটতে যাচ্ছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি উস্তার মিয়ার মালিকানাধীন ভবন ‘আতিয়া মহলে’। কখন অভিযান হবে সে অপেক্ষায় রাতেও উৎসুক জনতার কমতি নেই।
পুলিশের আহ্বানের পরও আত্মসমর্পণে সাড়া না দেওয়ায় সোয়াত সদস্যদের সঙ্গে অভিযানে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো সদস্যদের তলব করা হয়।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাত ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ইউনিট ও সোয়াত সদস্যরা বাসার ভেতরে ও চারপাশে অবস্থান করছিলেন। অভিযান চালাতে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে যৌথ বাহিনী। বাড়ানো হয়েছে পুলিশের সংখ্যা।
বাসার চারদিক হ্যাজাক লাইট দিয়ে আলোকিত করে রাখা হয়েছে। শুক্রবার রাত ১টা পর্যন্ত ৫তলা ও ৪তলা দু’টি ভবনের সবক’টি ফ্লাটে ২৮টি পরিবারের লোকজন জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন। ভেতরে থাকা লোকজনকে কিভাবে বের করে আনা যায়, সে চেষ্টায় যৌথ বাহিনীও। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে বের করে আনতে দেখা যায়নি।
ফলে যেকোনো মুহূর্তে অভিযান চালানো হতে পারে। এমন প্রস্তুতিতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপের রক্ত ও রক্তদাতাদেরও ব্যবস্থা করে রাখা হচ্ছে, জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এসএম রুকন উদ্দিন বলেন, রাতেই অভিযান হতে পারে। তবে কোন সময় সুনির্দিষ্ট করে নিশ্চিত কিছু বলেননি তিনি।
এর আগে সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার গোলাম কিবরিয়া বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। ভেতরে কি পরিমাণ গোলাবারুদ ও জঙ্গি আছে সে ব্যাপারে। তবে পরিস্থিতি বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অনুকূলে এমনটি দাবি করেন তিনি।
এদিকে ঘটনাস্থলে প্যারা-কমান্ডো পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে হাতকড়া ও হেলমেট পরিহিত এক যুবককে বের করা হয়। শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫৬ মিনিটে ওই বাড়িতে অভিযান শুরু করে ঢাকা থেকে যাওয়া সোয়াত টিমের সদস্যরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ঢাকা থেকে আসা ৪ সদস্যের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোর থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শিববাড়ি এলাকার উস্তার মিয়ার বাড়ি ‘আতিয়া মহল’ ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। সকাল সোয়া ৭টায় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গিরা আল্লাহ আকবার বলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে সকাল ৯টা থেকে পুলিশ ভবন লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি ছুড়ছে। তবে ভবনের ভাড়াটিয়া নিরীহ লোকজনের কাউকে বের করে আনতে পারেনি। পুলিশের ধারণা ‘মর্জিনা’ নামে কোড ব্যবহার করে জঙ্গিরা ওই বাসায় অবস্থান নিয়েছে। বাসায় নব্য জেএমবি নেতা মুছা থাকতে পারে, এমন ধারণাও পোষণ করছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
রাতে অভিযানে সিটি করপোরেশনের ক্রেন ও জেনারেটর সংযোগ করা হয়েছে স্পট আলোকিত করার জন্য এবং ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিটকে সংযুক্ত করা হয়েছে।