মন্তোষ চক্রবর্তী, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ):
গত ৩ দিনের ক্রমাগত বর্ষনে হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামে দশহাজার একর জমির কাচাঁপাকা ধান তলিয়ে গেছে। এসব জমির অধিকাংশ ফসল বিনষ্ট হয়ে যাবে বলে কৃষকেরা জানিয়েছে। পানির নিচ থেকে কৃষকেরা ডুবিয়ে ডুবিয়ে কাচাঁপাকা ধান কেটে আনছে। এই ক্ষতির ফলে অষ্টগ্রাম সদর, পূর্ব অষ্টগ্রাম, কলমা, আদমপুর, আব্দুল্লাপুর, খয়েরপুর আব্দুল্লাপুর, কাস্তুল, বাংগালপাড় ইউনিয়ন সহ পাঁচ হাজার কৃষক, মাঝারী কৃষক, বর্গাচাষী ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
প্রায় ৭৫ হাজার একর আয়তনে এই উপজেলার প্রায় ৫১ হাজার একর ক্ষেতেই একমাত্র উন্নয়নশীল ইরিবোরো ধানের আবাদ হয়ে থাকে। এই উপজেলায় হেমন্তে একমাত্র ফসল বোরাে উৎপাদন ছাড়া বর্ষাসহ ৭-৮ মাস বর্ষার পানিতে জল মগ্ন থাকে। তবু উৎপাদিত ইি বোরো ধানের ২০ শতাংশ স্থানীয় চাহিদা পুরণ করে ৮০ ভাগ উন্নতমানের ধান দেশের ভিবিন্ন শহর বন্দর বাজারে বিক্রিসহ জাতীয় খাদ্য ভান্ডারে যোগান হয়ে থাকে। হাওর অ লটি দেশের অন্যান্য অ ল থেকে নিচু এমনকি কোনো কোনো সমূদ্রের তলদেশ হইতে নিচু রয়েছে। এই অ লে রয়েছে প্রচুর বিল বাদার ও হাওর। অগনিত সুইচগেইট কালভার্ট অপরিকল্পিত বাঁধের সমাহার, প্রকৃতির রৌদ্র রসে এই অ লে কোন কোন বছর রোপণের সময় অর্থ্যাৎ কার্তিক অগ্রহায়নের মাসের পানির আটকে থাকার কারনে সময়মত কৃষকেরা রোপন করতে পারে না। আবার কোন বছর চৈত্র বৈশাখ মাসেই অকাল বন্যা, অতিবৃষ্টি, শীলবৃষ্টি ও বাঁধ ভেঙ্গে প্রচুর ফসল বিনষ্ট সহ জনজীবন বিপন্ন করে দেয়। গত মঙ্গলবার থেকে এ অ লে ক্রমাগত বর্ষনের এই অ লের মেঘনা, ধলেশ্বরী, বৈঠাখালী, করাতিয়া কলকলিয়া, ঘোরাউত্রা, বলাকা ইত্যাদি নদীতে ব্যাপক পানি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও বিল-মাকসা, ধোপাবিল, আন্দামান্দা, পদবিল, কৈরাইলের ইত্যাদি বিল বাদার গুলোর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পায়। ফলে নদীর তীরবর্তী বিল বাদার ও চরা লে ইরি বোরো ধানি ক্ষেতে শত শত একর কাঁচাপাঁকা ধান তলিয়ে মারাত্নক ক্ষতি সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারে আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়াম্যান আঃ রশিদ, কলমার যুবলীগ নেতা ও কৃষক রামচরন দাস পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ কাছিদ মিয়া, বাংগালপাড়া বিশিষ্ট কৃষক বিদ্যুৎ রায় জানান এই বর্ষনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই উপজেলার বিল-মাকসা, ধোবাবিল, বিল বল্লি, গাইযালা বেরি বিল ইত্যাদি বড় হাওড় আব্দুল্লাপুরের হাওড়, সমারচর কালীপুরের হাওড়, চরপ্রতাব, কাওরাইল, ইকরদিয়ার চর ইত্যাদি বিল ও চর এবং মেঘনা, করাতিয়া কলকলিয়া, বৈঠাখালি ইত্যাদি নদীঘূরে দেখা গেছে প্রায় দশ হাজার কাঁচা-পাকা ধানের জমি তলিয়ে গেছে। অনেক জমিতে কৃষকেরা পানিতে ডুবিয়ে ডুবিয়ে কাঁচা-পাঁকা ধান কেটে আনছে বলে দেখাও যায়। কৃষক কৃষানী এমনকি সংশ্লিষ্ট জমির মালিক পরিবারের যুবক-যুবতী শিশু কিশোরেরা জমির পাড়ে বিষন্ন ভাবে দাড়িয়ে আছে।
এই ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মোন্নাফ মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠকে জানান ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান জরিপ চলছে। তবে প্রায় ৮-১০ হাজার একর ইরিবোরে ক্ষেতের কাঁচা-পাকা ধান তলিয়ে গেছে এবং ক্ষতির পরিমান ব্যাপক।
মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডটকম/০১-০৪-২০১৭ইং/ অর্থ