মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ রিপোর্টঃ
লাল-সবুজের পতাকাবাহী বিজি-১০৯৭ ভিভিআইপি ফ্লাইট ‘আকাশ প্রদীপ’ যখন নয়াদিল্লির মাটি ছোঁয়, তখন ঘড়ির কাঁটায় ঠিক দুপুর ১২টা বেজে ২ মিনিট।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর পালাম স্টেশনের রানওয়ে ছোঁয়ার আগেই পাইলট ঘোষণা দিচ্ছিলেন, মাটিতে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। বাইরে তাকিয়ে দেখা গেলো বাতাস কম নয়। তাতে রোদের তীব্রতা কম।
পতপত করে উড়ছে লাল-সবুজের একটি পতাকা। অদূরেই তেরঙা। তারই মাঝখান দিয়ে একটি লাল-গালিচা বিছানো, স্টেশন থেকে রানওয়ের যেখানটাতে আকাশ প্রদীপ দাঁড়িয়ে সে পর্যন্ত। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে গালিচা ধরে ফ্লাইটের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা গেলো দীর্ঘদেহী সোনালি ছাঁটের পাঞ্জাবি, সাদা পাজামা পরা শশ্রুমণ্ডিত একজনকে। কারোরই বোঝার বাকি নেই কে তিনি! সবার চোখে যেমন বিস্ময়, মুখেও সে কথা। ‘আরে এতো নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং’।
এগিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে আসা অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করে নিতে।
পূর্ব কর্মসূচি অনুযায়ী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিমানবন্দরে থাকার কথা ছিলো না। জানা ছিলো, ভারী শিল্প ও গণপরিবহন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জানাবেন অভ্যর্থনা। সেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর এই উপস্থিতিই ছিলো ওই বিস্ময়ের কারণ।
ওদিকে ফ্লাইটের দরজা খুলতেই বেরিয়ে এলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুরের কড়া রোদে গাঢ় সোনালিরঙা শাড়ি নজর কাড়ছিলো। ধীরে ধীরে নেমে এলেন শেখ হাসিনা।
মোদি ততক্ষণে একদম প্লেনের সিঁড়ির গোড়ায় দাঁড়িয়ে। প্রথমেই দু’হাত জোড় করে নমস্কার। এরপর কেউ একজনের এগিয়ে দেওয়া ফুলের গোছা নিজ হাতে তুলে দিলেন শেখ হাসিনার হাতে। দু’জন কুশল বিনিময় করলেন, অতঃপর সহাস্যে দাঁড়ালেন কিছুক্ষণ। ক্যামেরাম্যানদের জন্যই হয়তো।
কালোরঙা গাড়িটি আগেই অপেক্ষমাণ ছিলো।
শেখ হাসিনাকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন সেদিকে। অতিথিকে গাড়িতে তুলে দিয়ে নরেন্দ্র মোদি আরও কিছুক্ষণ থাকলেন রানওয়েতে। সেখানে বাংলাদেশ ডেলিগেশনের অনেকেই তার সঙ্গে সেলফি তুললেন। হাসিমুখে তাও কিছুটা উপভোগ করে মোদি পথ ধরলেন তার গন্তব্যের। আর শেখ হাসিনার গাড়িবহর তখন ছুটতে শুরু করেছে দিল্লির ঐতিহ্যবাহী রাষ্ট্রপতি ভবনের দিকে।
প্রতিনিধি দলের সবাই জানতেন স্বাগত জানাতে আসবেন কেবলই প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। তাদের বিস্মিত করে নরেন্দ্র মোদির এই উপস্থিতিকে চমক হিসেবেই দেখছেন সবাই।
একজনতো বলেই ফেললেন, ‘চারদিনে আরও হয়তো কত চমক রয়েছে‘।