মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ রিপোর্টঃ
পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানালেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে এ পর্যন্ত মোট ৩৬টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এর আগে মোট ২২টি চুক্তির কথা বলা হলেও মোট চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক ৩৬টি বলেই নিশ্চিত করেছেন তিনি।
ভারতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিনে ব্যস্ত কর্মসূচির বিভিন্ন দিক নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার ফরিদ হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শহীদুল হক বলেন, রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিনটি বেশ ব্যস্ততায় কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাকে আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার দেওয়া হয়েছে। মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, একান্ত বৈঠক, দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেছেন, চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন, বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান করেছেন, সড়কের উদ্বোধন করেছেন, রাষ্ট্রীয় ভোজে অংশ নিয়েছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের শহীদদের পরিবারকে সম্মাননা জানিয়েছেন আর সবশেষে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির সঙ্গেও দেখা করেছেন। আর এই সব কর্মসূচির অধিকাংশই ছিল দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ কিংবা উপস্থিতিতে। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে দিনটি শেষ হয়েছে। সার্বিকভাবে এটি ছিলো ব্যস্ত এক সফল দিন।
যৌথ ঘোষণার বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, এমন একটি ঘোষণা এসেছে যাতে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে চিন্তায় আসতে পারে এমন সকল কিছুরই সমন্বয় ঘটানো হয়েছে।
দুই প্রধানমন্ত্রীর মধে্য আধা-ঘণ্টারও বেশি সময় একান্ত বৈঠক হয়, যা ছিলো অত্যন্ত আন্তরিক ও ফলপ্রসু।
দ্বি-পাক্ষিকে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে বাংলাদেশের যে প্রচেষ্টা ভারত তাতে পূর্ণ সমর্থন দেবে এমন ঘোষণা নরেন্দ্র মোদি দিয়েছন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে ভারত সবসময় পাশে থাকবে এ অঙ্গীকারও এসেছে তার তরফ থেকে।
লাইন অব ক্রেডিটের অংশ হিসেবে ভারত তৃতীয় দফায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে। এর বাইরে সামরিক খাতে উন্নয়নে ভারত দেবে আরো ৫০০ মিলিয়ন ডলার। সব মিলিয়ে মোট ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তার অঙ্গীকার মিলেছে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব।
তিস্তা ইসু্যতে দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, এবং গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান শহীদুল হক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এতে বলেছেন, পানি সম্পদ দুই দেশের ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক হয়ে থাকবে এটাই তিনি আশা করেন। তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে একটি সমাধানের পথে দুই দেশ ফলদায়ক কার্যকর উদে্যাগ নিতে পারবে বলেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। নরেন্দ্র মোদি এ ব্যাপারে তার সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের কথা স্পষ্ট করেন, যা তিনি পরে যৌথ সংবাদ সংবাদ সম্মেলনেও বলেছেন, বলেন শহীদুল হক।
মোদী বলেছেন, তার সরকার ও হাসিনার সরকারই পারবে তিস্তা ইসু্যতে দ্রুত সমাধানের পথ নির্দেশ করতে।
পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির প্রসঙ্গ উঠলে শহীদুল হক বলেন, মমতা ও শেখ হাসিনা একসঙ্গে বসেছিলেন, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। মমতা ব্যানার্জি আরও একদিন রয়েছেন, আরও কথা হবে।